বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের রাজা ‘ফেসবুক’

0

সিটিনিউজবিডি :  বিশ্বে অনেক বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু এদের মধ্যে সেরাদের সেরা ফেসবুক। এই টেক প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বহু স্থানে প্রশংসনীয়ভাবে মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের ব্যবসাকে বৃদ্ধি করে চলেছে। এর কিছু নমুনা দেখে নিন।

১. সর্বসম্প্রতি ফেসবুক জানায়, গোটা বিশ্বে প্রতিদিন ৯৬৮ মিলিয়ন ব্যবহারকারী ব্যস্ত থাকেন ফেসবুকে। এরা প্রতিদিন ফেসবুক ব্যবহারে আসক্ত। পৃথিবীর প্রতি সাতজন মানুষের মধ্যে একজন প্রতিদিন একবার হলেও ফেসবুকে প্রবেশ করেন। স্রেফ প্রবেশ করাই নয়, তারা গড়ে দিনের ৪৬ মিনিট এখানে ব্যয় করেন।

২. প্রতিদিন ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। গত বছর ব্যবহারকারী বেড়েছে ১৩ শতাংশ। সংখ্যাটি শতাংশের হারে বেশি নয়। কিন্তু ১০০ কোটির বেশি মানুষের ১৩ শতাংশ সোজা কথা নয়। অন্যভাবে বুঝিয়ে দেওয়া যায়। গত বছর ১৭৩ মিলিয়ন নতুন ব্যবহারকারী এসেছেন ফেসবুকে। এই সংখ্যা জার্মানি এবং ব্রিটেনের মিলিত জনসংখ্যার চেয়েও বেশি।

৩. ইন্টারনেট ডট ওআরজি এমনিতেই আনেননি জাকারবার্গ। খুব শিগগিরই বর্তমান ইন্টারনেট ব্যবস্থায় আর নতুন কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। পরবর্তী ১০০ কোটি মানুষের ইন্টারনেটে আসার ব্যবস্থাকে পাকা করতেই ইন্টারনেট ডট ওআরজি আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০০ কোটি বা ৫০০ কোটি পর্যন্ত মানুষ ইন্টারনেট সেবা পাবেন।

৪. প্রতিষ্ঠানটি পাবলিক হওয়ার পর থেকে এর রেভিনিউ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এমনটা অন্যকোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে হয়নি। ২০১২ সালের বসন্তে পাবলিক হওয়ার পর থেকেই বিনিয়োগকারীরা বিগত বছরের পরিসংখ্যান দেখে নিয়েছেন। মোবাইলে বিজ্ঞাপনের কোনো ব্যবসা ছিল না ফেসবুকে। এটি ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটি যেভাবে বেড়ে উঠেছে তা বিস্ময়কর।

৫. ফেসবুক রেভিনিউ আনতে যে ব্যবস্থাই করেছে তা হু হু করে বেড়ে গেছে। বর্তমানে তারা সেলফ-সার্ভিস পদ্ধতি চালু করেছে। এর সঙ্গে টার্গেট অ্যাড থেকেও অর্থ আনবে, যে পদ্ধতিতে গুগল পয়সা উপার্জন করে। ইন্সটাগ্রাম তাদের এক বিশ্লেষণে জানায়, এই পদ্ধতিতে আগামী দুই বছরে ফেসবুক বিলিয়ন ডলার কামিয়ে ফেলবে।

৬. অন্যান্য সেবা দখল করার ক্ষেত্রে দারুণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে ফেসবুক। যেমন- বাড়ির টিনএজ ছেলে বা মেয়েটি হয়তো ফেসবুক পছন্দ করছে না। তার কাছে ইন্সটাগ্রাম পছন্দের। অথবা হোয়াটসঅ্যাপ পছন্দ তার। এ দুটোই কিনে নিয়েছে ফেসবুক। আবার ম্যাসেঞ্জারও তাদের। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়টিকে ব্যবহারকারীর সংখ্যা যথাক্রমে ৩০০ মিলিয়ন, ৮০০ মিলিয়ন এবং ৭০০ মিলিয়ন।

৭. আমেরিকার ১৪০ বিলিয়ন ডলারের হার্ডওয়্যার বাজারে বিপ্লব এনেছে ফেসবুক। তারা নিজস্ব ডেটা সেন্টার স্থাপনে এবং ওপেন সোর্স লাইসেন্সের অধীনে আসতে বাধ্য হয়। এতে বহু মানুষ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ডিজাইন নিয়ে কিছু করতে পারছেন।

৮. মঞ্চে উঠে যেকোনো বক্তব্য প্রদান বা টেক-সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের চেহারাই বদলে দিয়েছেন। ২০১০ সালে জাকারবার্গের ডি কনফারেন্স যারা দেখেছেন তারা আর টেনশনের ঘাম নিয়ে মঞ্চে প্রেজেন্টেশন করবেন না। এসব কাজ হয়ে গেছে সহজ, সাবলীল এবং ক্যাজুয়াল।

একটা প্রশ্ন আসতেই পারে, ফেসবুকের মতো কি কেউ-ই নেই? অনেকে বলতে পারেন অ্যাপলের কথা। পারসোনাল কম্পিউটারের যুগের সেই উন্মাদনা আজ নেই। অ্যাপলের আইফোন প্রযুক্তির দুনিয়ায় যে ঝড় তোলে তাও ৮ বছর হয়ে গেছে।

তাহলে কি গুগল? এরা ফেসবুকের চেয়েও বড়। কিন্তু ফেসবুক যে সব খাতের শক্তিশালী দখল নিচ্ছে, সে সব অংশে গুগলের প্রভাব থাকার কথা ছিল। যেমন- মোবাইল এবং ভিডিও।

মাইক্রোসফটের ফিরে আসা বেশ আশাপ্রদ। কিন্তু বহু বছর ধরে তারা আত্মরক্ষামূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে টিকে রয়েছে।

কাছাকাছি বলতে রয়েছে আমাজন। এরা ই-কমার্স, আমাজন ওয়েব সার্ভিসসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বড় বাজার দখল করেছে। কিন্তু এদেরও ফেসবুকের মতো কাঁপিয়ে দিতে বাড়তি এক যুগ লাগবে।

প্রত্যেক প্রজন্মের একটা হিরো থাকে। আগত প্রজন্মের কাছে হিরো হয়ে উঠেছে ফেসবুক।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.