ঢাকা অফিস : জাপা নেতা কাজী ফিরোজ রশিদ এমপির বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে ধানমণ্ডিতে বাড়ি দখলের অভিযোগ অনুসন্ধানে রেকর্ডপত্র চেয়ে তিনটি দপ্তরে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র চেয়ে তৃতীয়বারের মতো চিঠি দিল সংস্থাটি।
দুদকের উপ-পরিচালক ও অভিযোগটির অনুসন্ধানি কর্মকর্তা জুলফিকার আলী গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে এ চিঠি পাঠান। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ চিঠি পৌঁছানো হয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে দু’বার রেকর্ডপত্র চেয়ে চিঠি দেয়া হলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো সাড়া না দেয়ায় তৃতীয়বারের মতো চিঠি পাঠানো হয়। এর আগে প্রথম গত ২৯ জুন রেকর্ডপত্র চেয়ে চিঠি দেয় দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, রাজধানীর ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকার ২ নম্বর রোডে অবস্থিত এক বিঘা আয়তনের পুরাতন ৭০ এবং নতুন ১০ নম্বর প্লটটি ভুয়া দাতা সাজিয়ে আত্মসাত করেন কাজী ফিরোজ রশিদ। বাড়িটি ছিল তৎকালীন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলীর নামে। পরে তার উত্তরাধিকারীরা বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে লিজ নেন। মোহাম্মদ আলীর ওয়ারিশ মাহমুদ আলীর তত্ত্বাবধানে বাড়িটি থাকা অবস্থায় তার চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী সাফিয়া আলী নিজ দখলীয় সম্পত্তি দাবি করে জাল কাগজপত্র তৈরি করে কাজী ফিরোজ রশিদের কাছে হস্তান্তর করেন।
এই অভিযোগটির সত্যতা যাচাইয়ে দুদক গণপূর্ত প্রধান প্রকৌশলীর কাছ থেকে প্লটটির সত্যায়িত ছায়ালিপি, প্লট রেজিস্ট্রারে সংশ্লিষ্ট অংশ এবং প্লটটির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর সরেজমিন পরিদর্শন প্রতিবেদনের কপি চাওয়া হয়। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে চাওয়া হয়, মোহাম্মদ আলীর উত্তরাধিকারদের নামে লিজকৃত বাড়িটির ঢাকা সিটি জরিপ ( দাগ নং-৩১২৮ ও ৩৫২১, আর.এস.সিটি জরিপ ৭৯৬ এবং ১৪৯৭) খতিয়ানের অনুলিপি, আদায়কৃত খাজনার অফিস কপির সত্যায়িত অনুলিপি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে নম্বরসহ এসেসমেন্ট নথির ছায়া লিপি, প্লটের বিপরীতে আদায়কৃত হোল্ডিং ট্যাক্স ও প্রযোজ্য করাদি সম্পর্কিত হালনাগাদ তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রের অনুলিপি এবং ‘কামিনী কুটির’, ৫, সিদ্ধেশ্বরী, রমনা, ঢাকার রেকর্ডীয় মালিকানা সংক্রান্ত তথ্যাদি। এবারের চিঠিতে এসব রেকর্ডপত্র আগামী ১১ আগস্টের মধ্যে দুদকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে পৌঁছাতে বলা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পত্তি দখলের এসব অভিযোগ দুদকে এলে তা আমলে নিয়ে যাচাই বাছাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। গত ৯ মার্চ উপ-পরিচালক মো. জুলফিকার আলীকে অনুসন্ধানী কর্মকর্তা ও পরিচালক মো. নূর আহাম্মদকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়।