চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে খানাখন্দ, অন্তহীন দুর্ভোগ

0

এম বেলাল উদ্দিন, রাউজান::‘‘মানুষ পরিবহনের জন্য ঘোড়া চাই!। মদুনাঘাট থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য এখন উপযোগি বাহন ঘোড়া। কোন ব্যবসায়ী এই খাতে বিনিযোগ করলে একমাসে বিনিয়োগের টাকা উঠে আসবে’’ চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে মানুষের অসহনীয় দুর্ভোগের চিত্রদেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রবীন সাংবাদিক মীর আসলাম তার টাইমলাইনে তুলে ধরেন এই কথাগুলো। তার এই স্টাটাসের মন্তব্যে সিবলী সাদিক নামের এক প্রবাসী সাংবাদিক জানান ‘‘ঘোড়া দৌড়াতেও উপযুক্ত পথ লাগে’। প্রদিপশীল নামে আরেক স্থানীয় সাংবাদিক জানান ‘পত্রিকায় লিখতে লিখতে বিরক্ত হয়েছেন বুঝি,এখন ফেসবুকে ঘোড়ার গাড়ি চালাচ্ছেন,কাজ হবে না,যন্ত্রনা সইতে হবে রাস্তার কাজ না হওয়া পর্যন্ত’’।

এদিকে অবর্ণনীয় দুর্যোগ অবস্থার মধ্যে চলছে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যানবাহন। সড়কের বেহাল দশা, বিটুমিন উঠে গিয়ে বেরিয়ে পড়েছে মাটি। পুরো সড়ক জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। এ অবস্থার মধ্যে চলছে যামনবাহন। মদুনাঘাট থেকে শুরু করে মোহরা পর্যন্ত সড়ক পথে খানাখন্দকের উপর দিয়ে গাড়ি চলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুঘর্টনা। ব্যস্ততম সড়কের এমন নারকীয় অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে যানবাহন চালক ও যাত্রীদের প্রশ্ন গাড়ী উল্টে মানুষ মারা গেলেই কি সড়কটি মেরামত করা হবে? প্রতিদিনের ভুক্তভোগী জনসাধারণ জানিয়েছে বিগত প্রায় এক বছর থেকে সড়কটি এই অবস্থার মধ্যে রয়েছে।

এই সময় থেকে ওয়াসার পাইপ লাইন বসানোর কাজে খোঁড়াখুঁড়িতে সড়কটির এমন নাজুক অবস্থা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে পাইপ লাইন বসানোর কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করে কাটা রাস্তা ঠিকমত সংস্কার না করার কারণে জনসাধারণ এই ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। এই বর্ষায় আরো যানবাহন চলাচলে প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে এ সড়ক।

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, মদুনাঘাট থেকে মোহরা পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়ক পথে এমন কোনো এলাকা পাওয়া যাবে না সেখানে একফুট পরিমান সড়ক পথ মসৃণ আছে। গোটা সড়ক এখন ছোট বড় খানাখন্দকে ভরা। যানবাহন চালক ও যাত্রীদের অভিযোগ এসব খানাখন্দকের উপর দিয়ে যানবাহন চলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুঘর্টনা ঘটছে। প্রতিদিন কোনো কোনো এলাকায় সৃষ্ট গর্তে ছোট বড় গাড়ী আটকে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই সড়কটি এমন অবস্থায় সংবাদ মাধ্যম সমূহ বহুবার প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রতিকার কামনা করেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরবতায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।

সূত্রমতে, পাইপ লাইন বসানোর কাজ ইতিমধ্যে প্রায় পঁচানব্বই শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি পাঁচ শতাংশ কাজ শেষ না করা পর্যন্ত সড়ক পথটি মেরামতে উদ্যোগ না নেয়ায় মাসের পর মাস প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীকে নারকীয় দুর্ভোগের মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের মতে সড়কটির এই অবস্থার কারণে যাত্রীদের কাছ থেকে যানবাহন চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে। যানবাহন চালকদের দাবি সড়কের নাজুক অবস্থার মধ্যে গাড়ী চালাতে গিয়ে যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে পড়ে আটকে থাকার কারণে তাদের লোকসান কমিয়ে আনতে ভাড়া কিছুটা বেশি নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি জানতে পাইপ লাইন বসানোর কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.