বাংলা সাহিত্যের নতুন সংযোজন ত্রিপিটক গ্রন্থ
সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি,সিটিনিউজ : যুগ যুগ ধরে বাংলা সাহিত্যভান্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করতে যুক্ত হচ্ছে হাজারো গ্রন্থ। বিভিন্ন লেখকের রচিতগ্রন্থসহ ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন বই যুক্ত হয়েছে বাংলা সাহিত্যে নতুন রূপে।
বাংলা সাহিত্য ভান্ডারে এবার যুক্ত হয়েছে বাংলা ভাষায় গৌতম বুদ্ধের দিয়ে যাওয়া পবিত্র ত্রিপিটক গ্রন্থ।
এই পবিত্র গ্রন্থটি পালি ভাষায় ৫৯ খন্ডে রচিত ছিলো দীর্ঘ দিন যাবত। পরে বিভিন্ন সময়ে অনেকে গ্রন্থটির বিভিন্ন খন্ডকে বাংলায় অনুবাদ করলেও সম্পূর্ণ করতে পারেনি।
পরে এই পবিত্র গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ করার লক্ষ্যে ২০১২ সাল থেকে শুরু হয় কার্যক্রম এবং যা ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে কার্যক্রম শেষ হয়।
অনুবাদ কার্যক্রমের প্রধান এবং ত্রিপিটক পাবলিশিং সোসাইটি বাংলাদেশ সম্পাদনা পরিষদের আহ্বায়ক শ্রীমৎ ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থবির বলেন, আমরা পালি ভাষায় রচিত পবিত্র ত্রিপিটক গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ করার লক্ষে ২০১২ সাল থেকে কাজ শুরু করি এবং যা ২০১৬ সালে এসে শেষ হয়।
ত্রিপিটকের ৫৯ খন্ডের মধ্যে অনেকে বিভিন্ন খন্ড বাংলায় অনুবাদ করেছে। কিন্তু সম্পূর্ণরূপে কেউ অনুবাদ করতে পারেনি। তাই আমরা যাদের অনুবাদগ্রন্থ গ্রহণযোগ্য, তাদের অনুবাদগুলো সংযোজন করেছি।
এছাড়া ৫৯ খন্ড পালি ভাষায় রচিত ত্রিপিটক গ্রন্থকে আমরা বাংলায় ২৫ খন্ডে অনুবাদ করেছি। যার মধ্যে বাংলা ২৩টি খন্ড আমরা নিজেরাই অনুবাদ করেছি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আফসার আহমেদ বলেন, বাংলা ভাষার ভান্ডারসমৃদ্ধ। এখানে যুগে যুগে নানান গ্রন্থ আরো সমৃদ্ধ করেছে এই ভাষাকে।
বুদ্ধ ধর্মের পবিত্র ত্রিপিটক গ্রন্থ আজ বাংলা ভাষায় রচিত হওয়ার মধ্যে দিয়ে নতুন একটি ধাপ এগিয়ে গেলো আমাদের ভাষা। ত্রিপিটক বাংলা ভাষার এগিয়ে যাওয়াকে আরো সমৃদ্ধ করবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি এন্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান ড. দিলীপ কুমার বড়ুয়া বলেন, পালি বিভাগের গ্রন্থগুলো পালি ভাষায় রচিত।
এছাড়া এই বিভাগে যে বিষয়টি পড়ানো হয় ত্রিপিটক গ্রন্থের অংশ বিশেষ তাও পালি ভাষায়। শিক্ষার্থীরা পালি ভাষায় খুব বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না।
আমাদের মাতৃভাষা বাংলা হওয়ার সে পালি ভাষাকে বাংলায় অনুবাদ করে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে দিতে হয়।
কিন্তু আজ এই পবিত্র ত্রিপিটক গ্রন্থ বাংলায় রচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাভাষী শিক্ষার্থীদের যেমন ভালো হয়েছে, তার মধ্যে বাংলা সাহিত্যের মধ্যে নতুন মাত্রা সংযোজন হলো।