১লা মহররম ঐচ্ছিক ছুটি নয়, সাধারণ ছুটি ঘোষণার দাবি

0

নিজস্ব প্রতিনিধি,সিটিনিউজ ::   আগামী ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শুক্রবার নগরীর ঐতিহাসিক মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে হিজরি নববর্ষ ১৪৩৯ বরণের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে হিজরি নববর্ষ উদযাপন পরিষদ। বিকাল ২টা থেকে অনুষ্ঠিতব্য বর্ষবরণে থাকবে বিশিষ্টজনের আলোচনা, কুরআন তিলাওয়াত, হামদ, নাত, গজল, কাওয়ালি, মরমী, জারি, পুঁথিপাঠ, নাটিকা, কৌতুক ও ইসলামি এবং দেশাত্মবোধক গান। ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে নগরীর মোমিন রোডস্থ পরিষদের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

হিজরি নববর্ষ উদ্যাপন পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মানব জাতির দৈনন্দিন জীবনে সন ও তারিখের গুরুত্ব অপরিসিম। এর যেমন ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে তেমন রয়েছে জীবন ও জীবিকার সাথে সম্পর্ক। ইসলাম একটি সার্বজনীন জীবন ব্যবস্থা যেখানে মানবতার সকল বিষয়ে সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে খোলাফায়ে রাশেদিনের ২য় খলিফা হযরত ওমর ফারুক (রা.) মুসলিম বিশ্ব শাসন করতে গিয়ে দিন-তারিখের হিসাব গণনায় এক সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়েন।

এ অবস্থায় মজলিসে শুরার উভয় পক্ষের পরামর্শে মানবতার মুক্তিদূত মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) এর ঐতিহাসিক মক্কা থেকে মদিনা হিজরতের ঘটনার দিনকে স্মারক হিসাবে ধরে নিয়ে এ হিজরি সনের প্রবর্তন করেন। ইসলাম ও মুসলমানদের ইতিহাসে হিজরি সন ও তারিখের গুরুত্ব অত্যাধিক। বর্তমানে পৃথিবীর প্রতিটি দেশে খ্রিস্টিয় সন গণনার সাথে হিজরি সনকেও প্রধান্য দেয়া হয়। এমনকি বাংলা সনের সাথে হিজরি সনের সম্পর্কও অত্যান্ত গভীর। স¤্রাট আকবর হিজরি সনের উপর ভিত্তি করে দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও কৃষকদের সুবিধার্থে বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। আমরা বাঙালি মুসলমান সঙ্গতকারণে বাংলা নববর্ষ ও হিজরি নববর্ষ আমাদের সাংস্কৃতিক প্রেরণার উৎস।

হিজরির সাথে রয়েছে আমাদের ধর্মীয় আবেগ ও অনুভুতি। সমকালীন দেশে যে সাংস্কৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, তরুণ ও যুবকদের মাঝে যেভাবে পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির বিকাশ ঘটছে তা থেকে যুবক সমাজকে রক্ষায় ইসলামি সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারের কোন বিকল্প নেই। হিজরি নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠানের মূলেই রয়েছে এ মহান উদ্দেশ্য। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার হিজরি নববর্ষের দিন ঐচ্ছিক ছুটির পরিবর্তে সাধারণ ছুটি ঘোষণার আহবান জানান।

একইসাথে তিনি জাতীয়ভাবে ১লা মহররম হিজরি নববর্ষ উৎসব উদযাপন করার আহবান জানান। তিনি সম্প্রতি মিয়ানমার সরকারের মুসলিম রোহিঙ্গাদের উপর যে অমানবিক হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে এবং দেশ থেকে বিতাড়িত করে বাংলাদেশে শরণার্থী হতে বাধ্য করছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি এ বর্বর হত্যাকান্ড বন্ধে জাতিসংঘকে আরো কঠোর ভূমিকা রাখার আহবান জানান। একইসাথে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও অন্ন-বস্ত্রের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন। তিনি অবিলম্বে রাখাইনে শান্তি ও স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মুহাম্মদ গোলামুর রহমান আশরফ শাহ, শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, রাজনীতিবিদ মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, কো- চেয়ারম্যান মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসাইন, মুহাম্মদ নঈম উল ইসলাম, পরিষদের মহাসচিব মুহাম্মদ এনামুল হক ছিদ্দিকী, নাসির উদ্দিন মাহমুদ, মুহাম্মদ নূর হোসাইন, মুহাম্মদ এনামুল হক এনাম, জি এম শাহাদাত হোসাইন মানিক, মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, এবিএম মাসুদ, মুহাম্মদ রিদুয়ান হোসেন তালুকদার পাপ্পু ও মুহাম্মদ রবিউল হোসেন প্রমূখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.