ষষ্ঠীপূজায় শুরু শারদীয় দুর্গোৎসব

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ছয়টায় কল্পারম্ভ, বিকেল চারটায় বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাস দিয়ে হবে ষষ্ঠীপূজা। দিনভর চণ্ডিপাঠে মুখরিত থাকবে সব মণ্ডপ। আগামীকাল ২৭ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, ২৮ সেপ্টেম্বর মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা, ২৯ সেপ্টেম্বর মহানবমী বিহিত পূজা এবং বিজয়া দশমী ও দর্পণ বিসর্জন।

এর আগে গতকাল সোমবার সায়ংকালে দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ জানিয়েছেন, সনাতন বিশ্বাস ও বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, এবার দেবী জগতের মঙ্গল কামনায় আগমন করবেন নৌকায় চড়ে। আর বিদায় নেবেন ঘোড়ায় চড়ে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল জানান, সারাদেশে এবার ৩০ হাজার ৭৭টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২৯ হাজার ৩৯৫টি।

তিনি জানান, রাজধানী ঢাকায় এবার পূজা হচ্ছে ২৩১টি মণ্ডপে। সবচাইতে বেশি পূজা হচ্ছে চট্টগ্রামে, ১ হাজার ৭৬৭টি।

এদিকে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।

পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, গত বছরের মত এবারও সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।

দুর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ হিন্দু সম্প্রদায়সহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

দুর্গা শব্দের অর্থ আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ-কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা- এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন।

শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামে অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।

উমা থেকে পার্বতী। তারপর পার্বতী থেকে দুর্গা। এই নামেই তিনি বেশি পরিচিত। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরানে আছে তিনি গিরিরাজ হিমালয়ের কন্যা ও পর্বতের অধিষ্ঠাত্রী দেবী, তাই তিনি পার্বতী। পরের অধ্যায়ে তিনি হয়ে উঠেন দানব দলনী দশভূজা। আর তখনিই তার নাম হয় দুর্গা।

দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল। কিন্তু, বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া সত্যেও শরৎকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.