১৫৯ বাংলাদেশী ফেরত: উভয় দেশের পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত

0

শহিদুল ইসলাম, উখিয়া (কক্সবাজার): মিয়ানমার উপকূল ও সমুদ্র এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার মালয়েশিয়াগামী উদ্ধার প্রাপ্ত অভিবাসীদের মধ্যে থেকে বাংলাদেশী হিসেবে চিহ্নিত ১৫৯ জনকে সোমবার দেশে ফেরত আনা হয়েছে। চতুর্থ দফায় এসব বাংলাদেশীদের ফেরত আনতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির নেতৃত্বে বাংলাদেশী প্রতিনিধি দল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উভয় দেশের ঘুনধুম মৈত্রী সেতু সংলগ্ন এলাকায় মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের সাথে এক পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

কক্সবাজার ১৭ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর ইমরান উল্লাহ সরকার জানিয়েছেন, ইতি পূর্বে উল্লেখিত ১৫৯জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত আনার কথা থাকলেও দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও মিয়ানমারে বন্যার কারণে তা পিছিয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথিমধ্যে মিয়ানমার উপকুলে সেদেশের নৌবাহিনী ভাসমান অবস্থায় দু’দফায় ৯৩৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়। পরে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বিজিবি’র উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের মধ্যে দফায় দফায় পতাকা বৈঠকে এসব উদ্ধার করা বাংলাদেশী নাগরিকদের যাচাই বাছাই করে ফেরত দিতে সম্মত হন। এর আগে ৩ দফায় ৩৪২ জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত দেন মিয়ানমার।

গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় মিয়ানমার সীমান্তের ঢেঁকিবনিয়া বিজিপি ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পতাকা বৈঠকে মিয়ানমারের ১৩ সদস্য প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক ইউ সো নাইন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ১০ সদস্য প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন কক্সবাজারস্থ ১৭ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কঃ মোঃ রবিউল ইসলাম। সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টা ব্যাপী পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

পতাকা বৈঠকে উভয় দেশের সীমান্ত এলাকা নিয়ে পারস্পরিক বন্ধুত্বসূলভ মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করার জন্য একমত হন। পাশাপাশি চোরাচালান, মাদক, মানব পাচার ও অনুপ্রবেশ প্রতিরোধেও বিজিবির পক্ষ থেকে জোরালো দাবি উত্থাপন করা হলে উভয়পক্ষের মধ্যে ফলপ্রসু আলোচনা হয়। পরে ১.২০ মিনিটের দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্র সেতু দিয়ে ১৫৯ জন বাংলাদেশী নাগরিককে বিজিবির নিকট হস্তান্তর করেন। পরে বিজিবি এবং পুলিশের উপস্থিতিতে ৩ টি বাসে করে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফাইল আহমদ জানিয়েছেন।

মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা ১০ জেলার ১৫৯ জন অভিবাসীর মধ্যে নরসিংদীর ৮০ জন, নারায়ণগঞ্জের ১২ জন, কিশোরগঞ্জের ১৩ জন, ফরিদপুরের ১২ জন, হবিগঞ্জের ১৭ জন, নওগার ২ জন, নাটোরের ১ জন, শরিয়তপুরের ১ জন, বরিশালের ১ জন সহ চট্টগ্রামের ১৮ জন রয়েছে বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে। পতাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারস্থ সেক্টর কমান্ডার এস.এম আনিসুর রহমান, কক্সবাজার ১৭ বিজিবির উপ-অধিনায়ক ইমরান উল্লাহ সরকার, মেজর আমিনুল ইসলাম, কক্সবাজার গোয়েন্দা বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারুক ছাড়াও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আইওএম এর কর্মকর্তা আশিফ মনির বলেন, ৪ দফায় ৫০১ জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত আনা হয়েছে। আরো প্রায় ৪ শতাধিক নাগরিক মিয়ানমারে রয়েছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.