বাকলিয়াবাসীকে নিয়ে রাজনীতি হয়েছে- আবদুচ ছালাম

0

নিজস্ব প্রতিনিধি :  সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেছেন, বাকলিয়াবাসীকে নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। অনেকে ওয়াদা করেছে। ভোট শেষ হওয়ার পরে বাকলিয়াবাসীর পাশে ছিলেন না। পদে পদে প্রতারিত হয়েছে বাকলিয়াবাসী। অবহেলিত বাকলিয়াতে আমি পা দেওয়ার দিন থেকেই মানুষের মনের কথা বুঝার চেষ্টা করেছি। কথার ফুলঝুড়ি না শুনিয়ে বাস্তব কাজে হাত দিয়েছি। বাকলিয়াকে নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

আজ শনিবার ১১ নভেম্বর বাকলিয়া থানার পাশে বাকলিয়া এক্সেস রোডের কাজের উদ্ভোধনী সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম এমন মন্তব্য করেন। নগরীর যানজট নিরসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজীকরণে সিরাজউদ্দৌলা রোড থেকে শাহ আমানত ব্রিজ পর্যন্ত ২২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট প্রশস্ত দেড় কিলোমিটারের সংযোগ সড়কটি নির্মান করা হচ্ছে।

সিরাজউদ্দৌলা রোড থেকে শাহ আমানত ব্রিজ সংযোগ সড়ক পর্যন্ত বাকলিয়া এক্সেস রোড নির্মাণের ফলে বাকলিয়াবাসীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামগামী মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোটাই পাল্টে যাবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজতর হওয়ার কারণে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানও বৃদ্ধি পাবে।

নির্মান কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন,জলাবদ্ধতা নিরসনেও সর্ববহৎ একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। শিঘ্রই এ অঞ্চলের মানুষ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে। কর্ণফুলী তীর ঘেষে করা হবে একটি দৃষ্টিনন্দন সড়ক। সবকিছু মিলে বাকলিয়া হবে একটি আধুনিক উপশহর। পিছিয়ে থাকা বাকলিয়াতে আধুনিক সুবিধার সমন্বয় ঘটাতে সব সময় তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি।

কথা নয়, কাজে বিশ্বাসী জানিয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, নগর রক্ষা বাঁধ, চার লেনের শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক, বাকলিয়া এক্সেস রোড, প্রশস্ত সিরাজদৌলা রোড, প্রশস্ত বাদুরতলা-কাপাসগোলা-চকবাজার সড়ক আজ স্বপ্ন নয়, এগুলো বাস্তব করে তুলেছি। ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, বেধিবাঁধ নির্মাণ, খালের মুখে স্লুইস গেট নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের অবহেলা ও অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখবেন এখানকার অধিবাসীরা। পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও বড় আশীর্বাদ হয়ে ওঠবে সড়কটি।

এক্সেস রোডের কারণে বাকলিয়াবাসী মাত্র ৫ মিনিটে মূল শহরে আসতে পারবে জানিয়ে আবদুচ ছালাম বলেন, বাকলিয়া থেকে মূল শহরে যাওয়ার জন্য আগে ৭/৮ কিলোমিটার ঘুরতে হতো। এখন মাত্র দেড় কিলোমিটার পথেই যাওয়া যাবে। এতে মাত্র ৫ মিনিট সময়ে মূল শহরে প্রবেশ করতে পারবে এখানকার মানুষ। বাকলিয়াবাসী আগে কখনো সেটা হয়তো কল্পনাও করতে পারেনি। মাত্র দেড় কিলোমিটার সড়কের জন্য ২২১ কোটি টাকা অনুমোদন দিবে সেটাও কল্পনার বাইরে ছিলো।

এতোদিন অনেকে প্রতিশ্রুতি পেলেও বাকলিয়াবাসী কাজ দেখেনি জানিয়ে তিনি বলেন, আমার উন্নয়ন কর্মকান্ডে বাকলিয়াকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়ার মধ্যে এটি একটি কারণ হলেও চট্টগ্রাম তথা জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থ বিবেচনায় বাকলিয়াকে অন্ধকারে রাখার সুযোগ নেই। বাকলিয়াবাসীকে পুরো রাষ্ট্রের মধ্যে পরিচিত করতে আরো কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আইটি পার্ক করা হবে এখানে, নেভি বিশ্ববিদ্যালয় হবে, কল্পলোকে বিশ্বমানের মসজিদ নির্মাণ করা হবে। এরপর থাকে কর্মসংস্থানের বিষয়টি। যে রোডটি হচ্ছে সে রোডের পাশে শিল্প-বাণিজ্য হবে। বাকলিয়ার মানুষ কর্মহীন থাকবে না।

উন্নয়ন কাজের চিন্তায় ঘুমাতে পারেন না জানিয়ে আবদুচ ছালাম বলেন, ২০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজে হাত দিয়েছি। উন্নয়নের চিন্তায় ঘুম আসে না। চট্টগ্রামের মানুষ বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করায়। চট্টগ্রামের মানুষ ঢাকায় বা বিদেশে গিয়ে যাতে চিকিৎসা নিতে না হয় সেজন্য অ্যাপলো হাসপাতালের কাজ শুরু করেছি। যে কোন ধরনের আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা এখানে পাওয়া যাবে। অনেকে বলেন, চট্টগ্রাম অভিভাবকহীন, চট্টগ্রাম বসবাসের অনুপযোগী। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের অভিভাবক।

বাকলিয়া এক্সেস রোডের উদ্বোধনী সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিডিএ বোর্ড সদস্য জসিম উদ্দিন শাহ, কেবিএম শাহজাহান, আওয়ামী লীগ নেতা হাজী শফিকুল ইসলাম, কাউন্সিলর একেএম জাফরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ ছগির, আবদুল করিম সওদাগর, ইয়াকুব সওদাগর, আবদুল মান্নান, সহকারী প্রকল্প পরিচালক কাদের নেওয়াজ।

সিডিএ’র প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসের সভাপতিত্বে ও সহকারী অথররাইজড অফিসার মোহাম্মদ ওসমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ শাহিনুল ইসলাম খান, সিডিএ উপ-সচিব অমল গুহ, হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মো. নাজের, আওয়ামীলীগ নেতা এস.এম আনোয়ার মির্জা, মো. ফারুক, জসিম উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, সফিউল আজম হিরু, জাহেদ মুরাদ, কুতুব উদ্দিন, প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.