বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি সরকারের লুটপাট নীতির বহিঃপ্রকাশ!

0

সিটিনিউজ ডেস্ক :: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ হচ্ছে কুইক রেন্টাল প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন। এসব প্রকল্পের পেছনে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের আত্মীয়স্বজন। এদের লুটপাটের আরো বেশি সুযোগ করে দিতেই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ-জ্বালানি এখন লুটের খাত।’

রিজভী বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। যা শুধু অযৌক্তিক ও গণবিরোধী নয়, ভোটারবিহীন সরকারের লুটপাট নীতির বহিঃপ্রকাশ। গোটা দেশটাকে গিলে খেতেই রক্তচোষা সরকার উন্মত্ত হয়ে পড়েছে।’

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিশ্ববাজারে তেলেন দাম কমলেও জনগণের রক্ত চুষে খেতে আবারও বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম যা আগামী মাস থেকেই কার্যকর হবে। যেখানে বিদ্যুতের দাম কমানোর কথা, সেখানে পূর্বের তুলনায় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসায় এখন বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে বাড়বে ৩৫ পয়সা।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ব্যাংক, বীমা, শেয়ারবাজারসহ সমস্ত অর্থনৈতিক খাতকে তিলে তিলে খেয়ে তাদের (সরকার) স্বাদ মেটেনি। তাই বারবার গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে গরিবের রক্ত পান করাটাই যেন তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। এর আগে গত মার্চে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে সরকার। এর আগে ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে পাইকারি পর্যায়ে ছয়বার এবং খুচরা পর্যায়ে সাতবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। শুধুমাত্র লুটপাটের জন্যই গরিবের সর্বশেষ সম্বলটুকু আত্মসাৎ করে সরকার আবার বিদ্যুতের দাম বাড়াল।’

রিজভী বলেন, ‘বিদ্যুতের সঙ্গে সব কিছু সম্পর্কিত। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে বিপাকে পড়বে সীমিত আয়ের মানুষ। শিল্প খাতেও পড়বে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রভাব। এমনিতে সরকারের লুটপাট আর ভয়াবহ দুঃশাসনে দেশে কোনো বিনিয়োগ নেই। এমন সময় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা মানেই বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করা। এতে গোটা অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। প্রতিযোগী মূল্যে শিল্প উৎপাদন সক্ষমতা ব্যাহত হবে।

এ ছাড়া বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পগুলো, রফতানি সক্ষমতা, শিল্প বহুমুখীকরণ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে। দেশে জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাবে বেকারত্ব্। এমনিতেই এশিয়ার সবচেয়ে বেশি বেকারত্বের হারের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। একই সঙ্গে শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেলে বাড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যও।

বর্তমানে নিত্যপণ্যসহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। তার ওপর বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির মাশুলও দিতে হবে নিম্ন আয়ের মানুষদের। কৃষি খাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে। এমনকি কয়েক দফা বন্যায় দেশে তীব্র খাদ্য সংকট চলছে তার ওপর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়বে। নতুন করে বিদ্যুতের এই দাম বৃদ্ধিতে কৃষি ও শিল্প খাত ধ্বংস হয়ে যাবে।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.