স্বর্ণখাতে নিয়ন্ত্রণ নেই সরকারের: টিআইবি

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: দেশের স্বর্ণখাতের ওপর সরকারের কার্যত কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে স্বর্ণবাজার কালোবাজার নির্ভর হয়ে পড়েছে বলে মনে করে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি বলছে, ‘আমদানিনীতি না হওয়া, চোরাচালান বন্ধ না হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব, চোরাচালানে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কর্মকর্তাদের একাংশের প্রভাব ও রপ্তানি শিল্প হিসেবে স্বর্ণখাত বিকাশে পদক্ষেপের অভাবের কারণে স্বর্ণবাজার কালোবাজার নির্ভর হয়ে পড়েছে।’

রবিবার রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবির সংবাদ সম্মলনে বলা হয়, ‘বিগত চার বছরে আটককৃত স্বর্ণের পরিমাণ এক হাজার ৬৭৫ কেজি। যা বছর প্রতি ৪১৮. ৭৩ কেজি। বৈধ পথে আমদানি না হওয়ায় বছরে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি ৪৮৭ থেকে ৯৭৪ কোটি টাকা। জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারি-বেসরকারি বিমান সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের একাংশ।’

স্বর্ণের বিষয়ে কোনো পূর্ণাঙ্গ নীতিমালাও নেই। স্বর্ণালঙ্কারের বাজার ব্যবসায়ীদের হাতে নিয়ন্ত্রিত, যাদের একংশ চোরাকারবারি ও কালোবাজারিতে লিপ্ত রয়েছে বলে টিআইবির গবেষণায় উঠে এসেছে।

এ বিষয়ে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। তবে কী পরিমাণ ব্যক্তি জড়িত সেই তথ্য আমাদের হাতে নেই।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘স্বর্ণ চোরাচালান ও কালোবাজারি সংশ্লিষ্ট কিছু আইনি বিধান রয়েছে। তবে এ নিয়ে কোনো সমন্বিত আইন নেই। যেটা আছে তারও প্রয়োগের বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কর্মকর্তাদের একাংশের সাথে চোরাচালানকারি ও ব্যবসায়ীদের একাংশের যোগসাজশ রয়েছে। যার ফলে এই খাতটি বিকাশমান ও সম্ভাবনাময় হলেও টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে না। সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভোক্তা, স্বর্ণশিল্পী ও শ্রমিকদের অধিকার হরণ হচ্ছে।’

টিআইবি এ বিষয়ে একটি নীতিমালা সরকারের কাছে প্রস্তাব করেছে, যার মধ্যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও পূর্ণাঙ্গ আইনি কাঠামোর অধীনে স্বর্ণখাতকে আনার প্রস্তাব রয়েছে। স্বর্ণ আমদানিতে ও মান যাচাই নিয়ন্ত্রণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দেশের স্বর্ণখাত জবাবদিহিতার অভাব, হিসাব-বহির্ভূত ও বিভিন্ন পর্যায়ে অনিয়ম-দুর্নীতি পরিলক্ষিত হয়। একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালার অভাব এই পরিস্থিতির অন্যতম প্রধান কারণ। গবেষণায় এটা পরিষ্কার বাংলাদেশে চোরাচালানটা অনেকটা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে।’

গবেষণার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম। সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন গবেষক মো. রেজাউল করিম ও অমিত সরকার।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.