‘বিএনপির নির্বাচনে আসা-না আসার দায় আ.লীগ নেবে না’

0

সিটিনিউজ ডেস্ক :: বিএনপির নির্বাচনে আসা-না আসার দায় আ.লীগ নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশ‌নে প্রস্তা‌বিত বিবেকানন্দ ভবনের নির্মাণ কা‌জের উদ্বোধন অনুষ্ঠা‌নে প্রধান অতিয‌থির বক্ত‌ব্যে তিনি এ কথা ব‌লেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচনে এলো কি এলো না তাতে সরকারের কোনো দায় নেই। সে জন্য গণতন্ত্রের চলার পথে কোনো বাধা হবে না। পার্লামেন্টও চলবে। সরকারও থাকবে, তারা না এলে গণতন্দ্রের কী দোষ?

তিনি বলেন, ভারতসহ অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবেই হবে এদেশে নির্বাচন। সংবিধানের বাইরে অন্য কোনো দুঃস্বপ্ন দেখে লাভ নেই। এটাই শেষ কথা। কোনো গণতান্ত্রিক দেশে কোনো দল নির্বাচনে আসলো কি আসলো না এ দায় নেয়ার কি সুযোগ আছে? এই দায় আওয়ামী লীগেরও নেই। এলে আসুক, না এলে না আসুক, তাতে কী আসে যায়। এটাই শেষ কথা।

নির্বাচন দিতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মনে আছে বেগম জিয়া এক সময় বলেছিলেন নিরপেক্ষ সরকার পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ বোঝে না। এখন আবার বুঝলেন কিভাবে? এখন কি আপনাদের বিবেক হারিয়ে গেছে? আপনারা বলেছেন ২০১৪ মত নির্বাচন আর দেয়া যাবে না। গত নির্বাচনের আগে আমাদের নেত্রীর সাথে বেগম জিয়ার টেলিফোনের আলাপ আপনারা শুনেছেন। তখন যদি শালীনতা বজায় রাখতেন তাহলে আজকে নির্বাচন নিয়ে ১৪ সালের মত নির্বাচন দেয়া যাবে না একথার প্রয়োজন ছিল না।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন তো আপনারাই ওই পথে ঠেলে দিয়েছেন। আপনারা আসবেন না, নির্বাচনের ট্রেন থেমে থাকবে? এবারও সংবিধানে যা আছে নির্বাচন সম্পর্কে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধিনে। শেখ হাসিনা সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব কাজ করবে নির্বাচন কমিশন।

গত জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বে কোনো সঙ্কট হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আসেননি বলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসির সম্মেলন আইপিইউ সম্মেলন হয়েছে। ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সম্মেলনের পথে আপনারা নির্বাচনে অংশ নেননি বলে নির্বাচনে বৈধতার এমন কী সংকট পড়েছে? আইপিইউ সম্মেলন ঢাকায় হয়েছে। তারা কি বোকার স্বর্গে বাস করে। তারপর সিপিএ ঢাকা সম্মেলন হয়েছে। আপনারা ৫ জানুয়ারিতে এলেন না বলে পার্লামেন্টে বিরোধী দলেরও অনুপস্থিতি নেই। চেয়ার ছুড়াছুড়িও নেই। ফাইল ছুড়াছুড়িও নেই, মাইক নিয়ে স্পিকারকে আক্রমনের সেই দৃশ্যপটও নেই।

তিনি বলেন, নাসির নগরের বিচার শুরু হয়েছে, ঠাকুর গাঁওয়ে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি গরিব হিন্দু পরিবার, তাদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের হামলা যাতে না ঘটে সে জন্য জড়িতদের বিচারের কাঠগড়ায় দাড়া করাতে হবে। এখানে কোনো আপস নেই। তা না হলে বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

নির্বাচন সামনে রেখে হিন্দুবাড়িতে অক্রমণকারীদের চিনে রাখার পরামর্শ দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের ভুল থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের ভুল সংশোধনের সাহস আছে। আমরা করছি, করবো। কিন্তু যারা আজকে মুখোশ ধারণ করে আপনাদের আপন হতে চায় তাদেরকে চিনে রাখুন। এটা আমার অনুরোধ। সামনে নির্বাচন, গোলমাল হলে তারাই পাকাবে, ভায়োলেন্স কাকে বলে ২০০১ সালে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ করে তারা দেখিয়ে দিয়েছে। এরা কারা, যারা এখন মায়া কান্না করে। তাদের চিনে রাখুন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রীংলা বলেন, ভারত বাংলাদেশের বহু উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে, গত পাঁচ বছরে ভারত সরকার বাংলাদেশে ১১১ এগার কোটি টাকা মূল্যমানের ২৪টি প্রকল্প শেষ করেছে। আমি আপনাদের জানাতে পেরে খুশি যে, শুধু আঠোরো সালে, আমরা এক হাজার একশ কোটি টাকার ৬৫টি প্রকল্প শেষ করতে পারবো। আমরা আশা করছি এই অবদান বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু দেশ এই জন্যই আরও গুণগত পরিবর্তন আসবে।

ভারতীয় দূতাবাস দেশের রামকৃষ্ণ মিশনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতে সহযোগিতা করে আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আপনাদের জানাতে পেরে খুশি যে আনুমানিক ছয় কোটি টাকার এই সম্পূর্ণ ভবনটি ভারত সরকারের অর্থায়নে তৈরি হতে যাচ্ছে। যেখানে থেকে অনেক ছাত্র লেখাপড়া করতে পারবে।

ভারত বাংলাদেশের সম্পর্কের এখন সোনালী অধ্যায় চলছে জানিয়ে শ্রীংলা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা এবং ভারতীয় সৈন্যরা এক সাথে যুদ্ধ করেছিল। রক্ত দিয়েছিল। এটা আমাদের জন্য গর্বের। আজকে বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক উচ্চ শিখরে। ভারতের সাথে আপনাদের বন্ধুত্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সাবেক প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির সময় থেকে সুদৃঢ়।

রামকৃষ্ণ মিশন ঢাকার কার্যনির্বাহী ক‌মি‌টির সভাপ‌তি ‌বিচারপ‌তি গৌর‌গোপাল সাহার সভাপ‌তি‌ত্বে শু‌ভেচ্ছা বক্তব্য দেন, স্বামী অমেখয়ানন্দজী মহারাজ। আরো বক্তব্য দেন, সংসদ সদস্য কাজী ফি‌রোজ র‌শিদ, রাজধানী উন্নয়ন ক‌র্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান, কলা‌মিস্ট সৈয়দ আবুল মাকসুদ প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.