নির্যাতন করে সরকার নির্বাচন দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে-নজরুল

0

নিজস্ব প্রতিনিধি,চট্টগ্রাম :  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী হয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। নির্বচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি শনিবার ৩০ ডিসেম্বর সকালে নগরীর কাজীদেউরীস্থ ভিআইপি ব্যাংক্যুট হলে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। তিন বলেন, সরকার মিথ্যা মামলা হামলা নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েই যাচ্ছে। বিএনপির নেতা কর্মীদেরকে গ্রেফতার ও নির্যাতন করে তারা নির্বাচন দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা বিএনপিকে অপ্রস্তুত রেখে মধ্যবর্তী নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে।

তিনি বলেন, অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে ১৫৪ জন বিনা ভোটে সংসদ সদস্য হয়ে সরকার গঠন করে শুধু দেশ ও জাতিকে ছোট করে নাই ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে এ অবৈধ সরকার বিশ্ববাসীর কাছে আমাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এ চট্টগ্রামেই শাহাদাত বরণ করেছে। তাই আপনাদের প্রতি দল দায়বদ্ধ, আপনাদেরকেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার আদর্শকে লালন করে আন্দোলনে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে দেশ আমরা স্বাধীন করেছি, কিন্তু সে স্বাধীনতা কি আছে? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার মাধ্যমে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছিলাম।

আওয়ামীলীগ দেশ ধ্বংস করেছে, গণতন্ত্র হত্যা করেছে, শহীদ জিয়া সেই গণতন্ত্র আবার পুন:রুদ্ধার করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলো। কিন্তু সেই গণতন্ত্র আবার স্বৈরাচার এরশাদ হত্যা করেছিলো। বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠা করে বিচার বিভাগ এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলো। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারীর অবৈধ নির্বাচনে বিশ্বের কোন রাষ্ট্র নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাটাইনি, শুধুমাত্র ভারত ও ভুটান ছাড়া। বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে শাস্তির দেয়ার কোন তথ্য উপাত্ত মামলায় নেই। তারা অন্যায়ভাবে আদালতকে বাধ্য করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। তারা প্রধান বিচারপতিকেও জোরপূর্বক অবসর দিয়ে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আন্দোলন এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।

কর্মী সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী রাজনীতি যারা করে তাদের ভূমিকার উপর নির্ভর করবে, আগামী দিনের জাতির ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ক্রান্তিকাল চলছে। আমরা যারা রাজনীতি করি, বুদ্ধিজীবি ও পেশাজীবি তাদের বাঁচার উপায় কি? তা আজ লক্ষ্যনীয় বিষয়। তিনি বলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ভোট কমেছে ৬০% আর বিএনপির ভোট বেড়েছে ৪০%। রংপুরের ভোটের হিসাবই বাংলাদেশের বর্তমান ভোটের চরিত্র। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ একটি নির্বাচনী প্রজেক্ট তৈরী করেছে। অবৈধভাবে আগামীদিনে আবার ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। জনগণের ভোটে তাদের কোন আস্থা নেই। বাংলাদেশের জনগণ তাদের নির্বাচনী প্রজেক্ট ভেঙ্গে চুরমার করে দেবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ তাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০১৮ সাল হবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে নেয়ার বছর।

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বেগম রোজী কবীর বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের গড়া সংগঠনকে ছাত্রদল ও যুবদলকে নেতৃত্ব দিতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী যদি বলেন ঘুষ খাবেন, কিন্তু সহনীয় পর্যায়ে তাতেই ছাত্রছাত্রীদের নীতি আদর্শ এবং শিক্ষা জাতীর মেরুদন্ডকে ধ্বংস করে ফেলেছে। চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগণ বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে। গুম, গুপ্তহত্যা, নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে চট্টলাবাসী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রুখে দাঁড়াবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, তিনি চট্টগ্রাম থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বলেছেন, শেখ হাসিনা আজ জনরোষানলে ভীত হয়ে গান গাইছে। বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনদিনই এটা সম্ভব হবে না। বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হলে তাহলে আপনার কোন শাসন থাকবে না, জনগণ রাজপথ দখল করবে।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর বলেছেন, আগামী দিনে আন্দোলন সংগ্রামে চট্টগ্রামের বিএনপিসহ সর্বস্তরের জনতা রাজপথে জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলবে। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন এর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্করের পরিচালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ. এম নাজিম উদ্দিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, হারুনুর রশিদ, সদস্য শামসুল আলম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আবু সুফিয়ান, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সামশুল আলম, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, ছৈয়দ আহমদ, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, মো. ইকবাল চৌধুরী, এডভোকেট আবদুস সাত্তার সরোয়ার, এস এম আবুল ফয়েজ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল আলম, কাজী বেলাল উদ্দিন, মোহাম্মদ মাহ আলম, ইস্কান্দর মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, জাহাঙ্গির আলম দুলাল, কাউন্সিলর আবুল হাসেম, মনজুরুল আলম মঞ্জু, আনোয়ার হোসেন লিপু, টিংকু দাশ, গাজী মো. সিরাজউল্লাহ, শেখ নুরুল্লাহ বাহার, সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুরুল আলম মঞ্জু, কামরুল ইসলাম, হাজী মো. তৈয়ব, কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মনি, বেলায়েত হোসেন ভুলু, জেলি চৌধুরী প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.