পটিয়ায় ২৭ পোস্ট ই-সেন্টার উদ্বোধন

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধি : পটিয়ার সাংসদ আলহাজ¦ সামশুল হক চৌধুরী বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশের টেলি যোগাযোগ, ডাক বিভাগ ও সড়ক এবং রেল বিভাগ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। অতীতে যেখানে সরকার গুলো দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশীদের কাছে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছিল সেখানে শেখ হাসিনা দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার মাধ্যমে দেশের হারানো গৌরব ও সম্মান ফিরিয়ে এনেছেন।

প্রধানমন্ত্রী দেশের অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে প্রমাণ কে দেখিয়েছেন বাংলাদেশ এখন আর তলা বিহীন ঝুড়ি নয়। আমরাও সম্মিলিত প্রয়াসে দুর্নীতির উর্ধ্বে উঠে যেকোনো বড় প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করতে পারি। বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় পটিয়া সারা বাংলাদেশে উন্নয়নে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এক সাথে পটিয়ার ২৭ টি প্রায় বিলুপ্ত পোস্ট অফিসকে এখন পোস্ট ই-সেন্টারের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। যেখানে সহজে ব্যাংকিং লেনদেন করা যাবে এবং সরকারী বিভিন্ন ভাতাদি এ পোস্ট ই-সেন্টারের মাধ্যমে জনগণ সংগ্রহ করতে পারবে।

এমন এক সময় এসেছিল যখন অবাধ তথ্য প্রবাহের কারণে জনগণ ভেবেছিল হয়ত পোস্ট অফিস গুলো বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় এবং টেলি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের যুগান্তকারী পদক্ষেপের করণে আজ এ প্রতিষ্ঠানটি এলাকায় বাতি ঘর হিসেবে প্রজ¦লিত হবে। এর মাধ্যমে মানুষ তাদের আর্থিক লেনদেন কোন ধরণের শংকা বিহীন ভাবে করতে পারবে। তিনি আরো বলেন, বিটিআরসির মাধ্যমে মোবাইল ঠিকানা সংগ্রহ করে ১৮ সালের মধ্যে ৩ কোটি একাউন্ট খোলা হবে পোস্ট ই-সেন্টারে। অনাগত শিশু পৃথিবীতে আসলেই মাত্র ২ টাকায় হিসাব খুলে জন্ম নিবন্ধনের ফলে পোষ্ট ই-সেন্টারের আওতাভূক্ত হয়ে যাবে।

২০৫০ সালের পরও হাজার হাজার বছর ধরে পোষ্ট অফিস টিকে থাকবে। ই-সেন্টারের কারণে ও ব্যাংকিং সেবা বিশেষ করে সরকারী বিভিন্ন ভাতাদি এর মাধ্যমে পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়ায় এ ডাক বিভাগের প্রয়োজনীয়তা কখনো ফুরিয়ে যাবে না বরং এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। ব্যাংক এশিয়া সহ ৫টি ব্যাংকের সাথে এব্যাপারে ডাক বিভাগের চুক্তি হয়েছে। তিনি ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশে সরকারী এ প্রতিষ্ঠানে লেনদেন করার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার একটি জনবান্ধব সরকার। এ সরকার জনগণের স্বার্থ কে সব সময় অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। যা আগামীতেও অব্যাহত রাখতে হলে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

শনিবার ৩০ ডিসেম্বর দুপুরে পটিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পটিয়ায় সদ্য নির্মিত ২৭টি পোস্ট ই-সেন্টার উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পোষ্ট মাষ্টার জেনারেল পূর্বাঞ্চল আনন্দ মোহন, বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক বিভাগের মহা পরিচালক সুশান্ত কুমার নন্দ, প্রকল্প পরিচালক তরুণ কান্তি শিকদার, ফজলুল হক, তৈয়ব আলী, দক্ষিণ জেলা আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ¦ মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, পটিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম সামশুজ্জমান চৌধুরী, জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান, দেবব্রত দাশ, কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল আলহাজ¦ আমজাদ আলী খান, ইডি নেতা এম এ হাকিম, বক্তব্য রাখেন এডভোকেট বদিউল আলম, চেয়ারম্যান সরোজ কান্তি সেন নান্টু, অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ডাক কর্মচারী ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরী।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে লোকমান খান চৌধুরী। এতে ডাক বিভাগের মহা পরিচালক সুশান্ত কুমার নন্দ ঘোষণা দেন যে, অতি শীঘ্রই পটিয়ায় একটি নৈশ পোষ্ট অফিস ও পটিয়া পোষ্ট অফিসকে প্রথম শ্রেনীর ডাক ঘরে উন্নতীর করা হবে। পরে প্রধান অতিথি সাংসদ আলহাজ¦ সামশুল হক চৌধুরী পটিয়ার প্রত্যেক পোস্ট ই-সেন্টারে একটি করে সোলার ও ফ্যান সহ যাবতয়ি আনুষাঙ্গিক ইকুপম্যান্ট প্রদানের ঘোষণা দেন। ধলঘাটে অধিবাসী মহিউদ্দিন বলেন, বর্তমানে গ্রামের ডাকঘর গুলো এক প্রকার ধ্বংসের পথে এসেছিল। সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগে এগুলো এখন ব্যাংকিং লেনদেন সহ ডিজিটাল সুযোগ সুবিধার আওতায় আসায় আমরা উপকৃত হবো। তিনি সরকারের এ উদ্যোগের জন্য এর সাথে জড়িতদের ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, পটিয়ার মুজাফ্ফরাবাদ, কেলিশহর, ছনহরা, বাথুয়া, অলির হাট, ভাটিখাইন, হাইদগাঁও, ডেঙ্গাপাড়া, ধলঘাট, করনখাইন, গৈড়লা, নাইখাইন, উজিরপুর, মৌলভীর হাট, এয়াকুবদন্ডী, মনসা, জিরি মাদ্রাসা, মালিয়ারা, আশিয়া, কাশিয়াইশ, পেরপেরা, বাগদন্ডী, চরকানাই, কালারপোল, শোভনদন্ডী ও পটিয়া মাদ্রাসায় এ পোস্ট ই-সেন্টার উদ্বোধন করা হয়। এ সেন্টারগুলোতে গ্রামীণ সরকারী সব ধরণের ভাতা যেমন : বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি সহ সব ধরণের ভাতাদি পোস্টাল কার্ডের মাধ্যমে গ্রহণ করা যাবে। এছাড়াও এখানে কম্পিউটার ট্রেনিংয়েরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যা চালু হলে পুরো পটিয়া ডিজিটাল নেটওয়ার্কিং এর আওতায় আসবে। স্বল্প খরচে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণে আগহীরা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে সাবলম্বী হতে পারবে বলে ডাক কর্মচারী এসোসিয়েশনে কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরী জানান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.