কাপ্তাই সড়কে পরিবহন ধর্মঘট : জনদূর্ভোগ

0

এম বেলাল উদ্দিন, রাউজান : চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থী কর্তৃক গাড়ি গাড়ি ভাংচুর ও ভাংচুরকৃত গাড়ি ক্ষতিপূরণের দাবীতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই বাস মালিক সমিতি ও অটোরিক্সা চালক সমিতির যৌথ ডাকে বুধবার ৩ জানুয়ারী সকাল হতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে চলছে পরিবহন ধর্মঘট। এতে করে কাপ্তাই সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রীরা চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বেলা বাড়ার সাথে সাথে জনদুর্ভোগ বাড়তে থাকে। আটোরিক্সা নির্ভর কাপ্তাই সড়কে বিভিন্ন স্টেপে গাড়ি থাকলে তারা চলাচলে অপরাগতা প্রকাশ করে। এতে করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী,কর্মজীবী নারী-পুরুষ,শিশু,বৃদ্ধ বৃষ্টি ভেজা কর্দমাক্ত সড়কে মালামাল নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন। সড়কের নোয়াপাড়া,পাহাড়তলি ও শান্তির হাটে বেশ কয়েকটা অটোরিক্সা,নছিমন,পিকআপ যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। এই ধর্মঘটের অজুহাতে এসব অসাধু আটোরিক্সা চালক নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ৩/৪ গুন বেশী ভাড়া আদায় করছে।

মোহাম্মদ ইসমাঈল নামে জনৈক ব্যবসায়ী জানান, সে গশ্চি নয়াহাট স্থান হতে গন্তব্যস্থান রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালীর দিকে রওনা হয়ে গোছরাতে এসে বাঁধার কারণে গন্তব্যে পৌছাতে পারেনি। পরে সেখান থেকে তিনবার গাড়ি পরিবর্তন করে নোয়াপাড়ায় ফিরে আসে। এক্ষেত্রে ২০ টাকার ভাড়া ৬০ টাকা পরিশোধ করতে হয়।

মুক্তা নামের ইমাম গাজ্জালী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রী জানান, ব্রাহ্মণ হাট থেকে সকালে কলেজে আসতে পারলেও এখন এক ঘন্টা ধরে চুয়েট গেইট ও পাহাড়তলিতে এসে দাড়িয়ে থাকলেও কোন গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। বেলা ১ টার দিকে দেখা যায়, বেশ কিছু নারী শিশু তিনগুণের বেশী ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়তলি হতে শান্তির হাটে রওনা দেন।

এই ব্যাপারে কাপ্তাই বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন জানান, চুয়েটে শিক্ষার্থীরা কারণে অকারণে অহেতুক আন্দোলনের নামে আমাদের গাড়ি ভাংচুর করে। আমাদের দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে। এখনও পর্যন্ত চুয়েট প্রশাসন থেকে কোন সাড়া পায় নি।

নোয়াপাড়া সিএনজি চালক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বলেন, যখন তখন চুয়েটের ছাত্ররা আমাদের সিএনজি চালকদের ধরে মারধর করে গাড়ি ভাংচুর করে। আমরা পেটের দায়ে গাড়ি চালাই। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমাদের ১৫ টি সিএনজি ভাংচুর করে চুয়েট শিক্ষার্থীরা। বেশ কয়েকটি গাড়ি ব্যাংক লোন নিয়ে ক্রয় করা। অনেকের শেষ সম্বল সিএনজি গুলো তারা ভেঙ্গে চুরমার করেছে। আমরা আমাদের জীবন ও গাড়ির নিরাপত্তা চাই।এই ব্যাপারে চুয়েট ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. মশিউল হক জানান, আমরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমধান করতে চাই। রাঙ্গুনীয়ার ইউএনও আলোচনায় বসার বিষয়ে কথা বললেন।

বেলা ৪টায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলতে থাকে। এই বিষয়ে কোন সুরাহা হয় নি। তবে গাড়ি চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। উল্লেখ্য, ৩১ ডিসেম্বর রাত ১১ টায় আরিফুল ইসলাম নামে ইইই বিভাগের ১৪ তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম কাপ্তাই রাস্তার মাথা হতে চুয়েট ক্যাম্পাসে আসার পথে দমদমা নামক স্থানে সিএনজি চালক ও তার সহযোগীরা চুরি ধরে তার কাছে থাকা নগদ ২৫ হাজার টাকা, ১টি ল্যাপটপ, ১টি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়।

এই ঘটনার বিচারের দাবী সহ সন্ধ্যায় অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি রোধ সহ নানা দাবীতে গত ২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কাপ্তাই সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে গাড়ি ভাংচুর করে চালকদের মারধর করে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.