ব্যবসা ভিত্তিক রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে

0

নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিনিউজ :: জনস্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদ চট্টগ্রাম এর মতবিনিময় সভায় বিশিষ্ট কলামিস্ট অধ্যক্ষ ফজলুল হক বলেন, আজকাল অনেক ব্যবসায়িরা তাদের ব্যবসাকে সুদৃঢ় করতে রাজনৈতিক প্লাটফরম ব্যবহার করেন। রাজনীতি আজ রাজনীতিবিদদের হাত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অনেকে টার্গেট নিয়ে নেতা হওয়ার জন্য রাজনীতি করেন। নেতা হতে নয় রাজনীতির লক্ষ্য হওয়া উচিত জনকল্যাণের। ব্যবসা ভিত্তিক রাজনীতি থেকে আমাদের আসতে হবে।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবুল কালাম বলেছিলেন, যে স্বপ্ন আমাদের চোখে ঘুম নিয়ে আসে তা স্বপ্ন নয়, সে স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে আমাদেরকে ঘুমাতে দেয় না তাড়িয়ে বেড়ায় তাই প্রকৃত স্বপ্ন। আমাদের তরুণদের এমন স্বপ্ন দেখতে হবে যা আমাদেরকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যায়।

নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট ‘নাগরিক সংকট নিরসন ও উত্তরনের উপায়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অধ্যক্ষ ফজলুল হকের সভাপতিত্বে বিশিষ্ট সমাজসেবক ফরিদ মাহমুদ এর পরিচালনা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় আলোচনায় অংশ নেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রিয় নেতা, বি.এম এর ভাইস চেয়ারম্যান ডা: শেখ শফিউল আলজম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন পরিষদের চেয়ারম্যান ড. মো: সেকান্দর চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অমল মিত্র, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর কমান্ডার মো: মোজাফফর আহমেদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মো: জালাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সংগঠক দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ, চিত্রনায়ক পঙ্কজ বৈদ্য সুজন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবি নাজিমউদ্দিন শ্যামল, কলামিস্ট আফসার মাহফুজ, রাজনীতিক জহির উদ্দিন মো: বাবর, এনজিও কর্মকর্তা আকরাম হোসেন সবুজ, পেশাজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন আজাদ, নজরুল ইসলাম সান্টু, যুব সংগঠক এস.এম সাঈদ সুমন।

মতবিনিময় সভায় ডা: শেখ শফিউল আজম বলেন, আমাদেরকে অবক্ষয়মুক্ত সমাজ বিনির্মাণ করতে হবে। এই কাজটা রাজনীতিবিদদের জন্য সহজ। মহিউদ্দিন চৌধুরী খুব সহজে মানুষকে কাছে টানতে পারতেন। সত্যিকার অর্থে আজ চট্টগ্রাম অভিভাবক শূন্য।

ড. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, আমাদেরকে কথা বলার জন্যে একটা ফ্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে। সমাজে যারা শীর্ষে আছেন তারা কাউকে কাজ করতে সুযোগ দিতে চান না। মানুষের সংকটের কথা শুনতে চান না। সংকটের কথা শুনলে ক্ষেপে যান। তারা মনে করেন তাদের বিরোধীতা করা হচ্ছে। তাহলে সমস্যার সমাধান করবে কে?।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অমল মিত্র বলেন, জনগণের যিনি মুখপাত্র হবেন, তিনি শাসনও করবেন, আদরও করবেন। ভয় দেখিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না। জনতার কল্যাণে যে কথা বলে জনগণ তাঁকে কাছে টেনে নেবে। মহিউদ্দিন ভাই জনগণের মন জয় করতে পেরেছিলেন। ছাত্রজীবন থেকে উনার সাথে ছিলাম, মরণের আগ পর্যন্ত উনাকে সঙ্গ দিয়েছি।

কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ বলেন, সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো জনতার সাথে, গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। সাংবাদিক নাজিম উদ্দিন শ্যামল বলেন, আমরা যদি সবাই মিলে একতাবদ্ধ হই চট্টগ্রামের সকল সংকট দূর করা যাবে। চট্টগ্রাম বাঁচলে দেশ বাঁচবে। চট্টগ্রামকে বি ত করে দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। চট্টগ্রাম হলো বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি।

সাংবাদিক আফসার মাহফুজ বলেন, সমাজ যখন ক্লিব হয়ে যায় তখন ব্যক্তির অধিকারও সংকটে পড়ে। আমাদের চোখে সামনে নানা অনিয়ম, অন্যায়ের ঘটনা ঘটছে আমরা এতটুকুও প্রতিবাদ করি না। আমাদেরকে প্রতিবাদের ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে।

মতবিনিময় সভায় বক্তাগণ বলেন, চট্টগ্রামের উপর যতো অনিয়মের যাতাকল চাপিয়ে দেওয়া হয়। চট্টগ্রামের হাইওয়ের উপর ওজন মাপার স্কেল বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশের অন্য কোথাও এটা করা হয়নি। কাভার্ডভ্যান কিংবা লড়ি প াশ টন পরিবহন পর্যন্ত ফ্রি। কিন্তু ট্রাকের বেলায় তা তের টন নির্র্দিষ্ট করা হয়েছে। আগে পঁচিশ টন পণ্য পরিবহনে যে খরচ হতো এখন তের টনে সেই খরচ হচ্ছে। সঙ্গত কারণে দেশের অন্যান্য জেলা থেকে চট্টগ্রামে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এই অবস্থার অবসান হওয়া জরুরি।

চট্টগ্রামের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দিনের বেলায় গ্যাস থাকে না। দিনের পর দিন নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানির সরবরাহ বন্ধ থাকে। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য কিছু অসাধু কর্মকর্তা পরিকল্পিতভাবে এ কাজটি করছে। নগরীর নানা ওয়ার্ডে অভিযোগ পাওয়া গেছে জন্মনিবন্ধন সনদপত্র সংগ্রহ করতে নগরবাসীকে অহেতুক হয়রানী করা হয়। কোথাও কোথাও অতিরিক্ত ফিও আদায় করা হচ্ছে। নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।

চট্টগ্রাম ডিসি হিল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সাংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র এ স্থানটি উন্মুক্ত করে দেয়া হোক। জনদূর্ভোগ কাটাতে নগরীর ভাঙ্গাচোড়া রাস্তাগুলোর দ্রুত সংস্কার করা হোক। এ সময় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কর আইনজীবি আনোয়ার হোসেন, মানবাধিকার সংগঠক মো: আকতার উদ্দিন রানা, ক্রীড়া সংগঠক প্রবীণ ঘোষ, যুব সংগঠক শেখ নাছির আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন দেলু, হাজী মো: ইব্রাহীম, কাজী রাজেশ ইমরান, হোসেন সরওয়ারদী প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.