আইনজীবিদের পেশাগত মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট থাকব

0

জুবায়ের সিদ্দিকী,সিটি নিউজ : চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় অতিপ্রিয় মুখ ও পরিচিত ব্যক্তিত্ব এ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। সুপ্রীম কোর্ট ও জজ কোর্টের অভিজ্ঞ একজন আইনজীবি ও চট্টগ্রাম আদালতের প্রাক্তন পি.পি তিনি। ২০০৭ এর কমিটির বারের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। প্রায় ৩০ বছর ধরে নিয়োজিত আইন পেশায় সাইমুল।

’৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও ২০০৭ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কারাবরন করেন তিনি। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক সাইমুল। মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ও ঘনিষ্টজন হিসাবে ছাত্রজীবন থেকে আমৃত্যু সান্নিধ্যে ছিলেন । মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর জানাজা ও কবর দেওয়া পর্যন্ত ভুমিকা রেখেছেন তিনি। এমনকি লালদীঘি মাঠে লক্ষ মানুষের জানাজার প্রস্তুতিতে ল্উাড স্পিকার হাতে মাইকে ঘোষনা প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন সাইমুল।

চোখের জ্বলে প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় দেওয়া পর্যন্ত ছিলেন কবরস্থানে। চট্টগ্রাম বারের সম্মিলিত আইনজীবি সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে তিনি সভাপতি প্রার্থী। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারী বারের নির্বাচন। আইনজীবি সমিতির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৫ হাজার। গত সপ্তাহে আজকের সুর্যোদয়কে সাইমুল একান্ত সাক্ষাতকারে বলেন,’ মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে যে শুন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে পুরন হবার নয়। তিনি চট্টগ্রামে সকল আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রভাগে জীবনকে বাজি রেখে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

প্রায় ৪ যুগ মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে ছিলাম। আমার সৌভাগ্য যে তার অন্তিম সময়ে আমি তার পাশে ছিলাম। আমাদের চেষ্টা করতে হবে আরেকটা মহিউদ্দিন চৌধুরী তৈরী করার জন্য। এ সময় আমরা যারা তার কর্মীরা আছি তার রেখে যাওয়া আদর্শ ও নির্দেশনা মেনে চলতে হবে পথ। চেয়ারে বসলে তাকে তখন চেয়ারের মর্যাদা রাখতে হবে। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব ভাই রাজনৈতিক ঘরানার মানুষ।

অত্যন্ত ভাল মানুষ তিনি। রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। মহ্উিদ্দিন চৌধুরী মহানগর আওয়ামী লীগকে রেললাইনে উঠিয়ে দিয়েছেন, অতএব দল চলবে। মহিউদ্দিন চৌধুরী এত রাজনৈতিক নেতাকর্মী তৈরী করে গেছেন যে, আগামী ১০ বছরে নগর আওয়ামী লীগের কোন সমস্যা হবে না। বর্তমান সাধারন সম্পাদক নাছির ভাই ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব ভাই সংগঠনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আগামী ১০ বছরের জন্য মহিউদ্দিন চৌধুরীর হাতে গড়া নেতাকর্মী ও নেতৃবর্গ যথেষ্ট। পরবর্তী প্রজন্ম কিভাবে পরিচালিত হবে তা কমপক্ষে ১০-১৫ বছর পর চিন্তা করতে হবে। মহিউদ্দিন চৌধুরীর কর্মীরা যে যেখানে আছে তাদের যোগ্যতায় রাজনীতি করে যেতে পারবে। জননেত্রী শেষ হাসিনা যাকেই দায়িত্ব দেবেন দলের নেতাকর্মীগন সেভাবে দলীয় কার্যক্রম চালাবেন।

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, আইনজীবি ও সংগঠক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন,’আমার বিশ্বাস, প্রত্যেকটা কর্মী মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম চালাতে সক্ষম। মৃত মহিউদ্দিন চৌধুরী জীবিত মহিউদ্দিন চৌধুরী থেকে আরও বেশি শক্তিশালী। উনার কবরকে আমাদের অনুপ্রেরনার কেন্দ্র মনে করে ইনশাআল্লাহ আগামীতে নৌকার বিজয় ত্যাগ, শ্রম, নিষ্টা ও ঐক্যবদ্ধভাবে নিশ্চিত করব। বিশিষ্ট আইনজীবি সাইমুল বলেন,’ আইনজীবিদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে আমার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করছি এবং ভবিষ্যতেও করব।

বারের নির্বাচনে আমি সভাপতি প্রার্থী। আমি মনে করি,’ পেশার মান মার্যাদা রক্ষায় যা করনীয়, আমাকে তাই করতে হবে। আল্লাহর যদি হুকুম হয় এবং আমাদের সম্মানিত আইনজীবিগন যদি আমাকে মুল্যায়ন করেন তবে আইনজীবিদের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় এমন কাজ নিজেও করব না, করতেও দেব না। সাইমুল বলেন,’ সভাপতি নির্বাচিত হলে বিচার প্রার্থীদের মধ্যে যারা অসহায় তাদের আইনী সহায়তার জন্য সরকারী প্রজেক্টও আছে, তারপরও বিভিন্ন আইনী সহায়তা সংস্থা, কেন্দ্র ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমার তদারকিতে তা সম্পন্ন করা বা কেও যদি আইনজীবি সমিতিতে এভাবে সহায়তার আবেদন করেন তবে সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

নির্বাচিত হলে আইনজীবিদের স্বার্থে ও তাদের কল্যানে কাজ করব ইনশাআল্লাহ। বিশিষ্ট আইনজীবি এডভোকেট সাইমুল বলেন,’ বর্তমান সরকার আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নত অবস্থানে নিয়ে এসেছে। ধারাবাহিক অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও মানবিক উন্নয়ন সুচকে আজ বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই কল্যানমুলক রাষ্ট্রের মর্যাদায় অভিষিক্ত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যানমুখী অসাধারন নেতৃত্বের কারনে অর্থনৈতিক উদ্যোগ, সংস্কার ও নানামুখী সৃজনশীল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন দেশের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়ছে।

এডভোকেট সাইমুল বলেন.’ দেশকে এগিয়ে যেতে হয়েছে অনেক বাধা-বিপত্তি, ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে সামনের দিকে। বিশিষ্ট সমাজ সেবক, আইনজীবি, সংগঠক ও রাজনীতিবিদ সাইমুল বলেন,’ রাজনীতি ও পেশাগত কারনে নানা প্রতিকুল অবস্থায় আন্দোলন সংগ্রাম থেকে নড়চড় হয়নি। জীবনকে বাজি রেখে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে জুলুল অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছি।

আপনিও জানেন, বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে পুলিশ আমাকে হত্যার জন্য চলন্ত ট্রাক তুলে দেয়। আল্লাহ সে যাত্রায় রক্ষা করেন। অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে ছিলাম সবসময়। কখনো অপশক্তির কাছে মাথানত করিনি। ন্যায়নীতি ও আদর্শকে সমুন্নত রাখতে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পথ চলছি।

বিশিষ্ট আইনজীবি সাইমুল বলেন,’ আইনজীবিদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করব। অতীতেও ছিলাম, এখনও আছি। রাজপথ রাজনীতির ঠিকানা হলেও পেশাগত দায়িত্বপালনে আদালত পাড়ায় আইনজীবিদের সুখে দু:খে সব সময় সক্রিয় রয়েছি। মানুষের ভালবাসায় পথ চলছি। ভোগে নয়, ত্যাগে বিশ্বাসী হয়ে মানুষের কল্যানে কাজ করছি।

তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আওয়ামী লীগের প্রতীক, বঙ্গবন্ধুর প্রতীক, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক নৌকার বিজয় খুবই প্রয়োজন। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গনতন্ত্র সংরক্ষন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্টা এবং উপরোক্ত উন্নয়ন, অগ্রগতি ও অর্জনসমুহের চলমান অগ্রগতিকে রক্ষা করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া সকল নাগরিকের কর্তব্য ও দায়িত্ব। আমি মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনার পথে আমাদের চলতে হবে।

তিনি বলেন, নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম থেকে শুরু করে সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। যা আপনিও অবগত আছেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে মানুষের ভালবাসায় ও স্নেহ মমতায় মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরে আমি আনন্দিত।

পরিচিতি: এ্যাডভোকেট ইখতেখার সাইমুল চৌধুরী
আইন বিষয়ক সম্পাদক,চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.