চসিকের ৩০ তম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিটি নিউজ :: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত ৫ম পরিষদের ৩০ তম সাধারণ সভা ২১ জানুয়ারি ২০১৮খ্রি. রবিবার, দুপুরে কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সভায় নির্বাচিত পরিষদের সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, অফিসিয়্যাল কাউন্সিলর, সিটি কর্পোরেশনের বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
চসিকের সচিব মোহাম্মদ আবুল হোসেন এর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সাধারণ সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত ও মোনাজাত করা হয়। সভার সভাপতি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন সেবার স্বার্থে পৌরকর আদায় গতিশীল করতে কাউন্সিলরদের সহযোগিতা কামনা করে বলেন,উন্নয়নের প্রয়োজনে অর্থ পূর্ব শর্ত।
তিনি বলেন, গত অর্থ বছরে বন্দর সহ সরকারি ও বে সরকারী খাত থেকে মাত্র ১০৩ কোটি টাকার পৌরকর আদায় হয়েছে। তার বিপরীতে বিপুল পরিমান উন্নয়ন কার্যক্রম সংগঠিত হয়েছে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়।
মেয়র বলেন, জাইকা দ্বিতীয় ধাপে ১৯ টি প্রকল্পের অধীনে ৪৩৪ কোটি টাকার সহযোগিতা দিচ্ছে। যার ফলে অনেক উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।
জনাব আ জ ম নাছির উদ্দীন সরকারের প্রকল্প সহযোগিতার জন্য সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, প্রকল্প সহযোগিতার পেছনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ম্যাচিং ফান্ড সরবরাহ করতে হয়। প্রতি মাসে ২০ থেকে ২২ কোটি টাকা প্রশাসনিক ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। অথচ সাধারন নাগরিকদের কাছ থেকে পৌরকর বাবদ মাত্র ৩৫ থেকে ৪০ কোটি টাকা আদায় হয়। এ সংখ্যা বৃদ্ধি না পেলে নাগরিক সেবা পরিচালনা কষ্টকর হবে।
তিনি কাউন্সিলরদের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, যারা কর খেলাপি তাদেরকে কর প্রদানে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমরা সেবা দিব বিনিময়ে নাগরিকদের পৌরকর পরিশোধ করতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
মেয়র আসন্ন বর্ষা মৌসুমের পূর্বে নগরীর খাল থেকে মাটি ও আবর্জনা উত্তোলন কার্যক্রম বিশ্লেষন করে বলেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম ওয়াসা গৃহিত মাষ্টার প্লান্টের ভিত্তিতে নগরীতে খাল সমুহ থেকে মাটি ও আবর্জনা উত্তোলনের লক্ষ্যে চসিক এর প্রকৌশলীদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যদিও জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষকে একটি মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। নাগরিক দায়বদ্ধতা থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ইকুইপমেন্ট, জনবল ও কারিগরি সহযোগিতায় মাটি উত্তোলন ও অপসারন করছে চসিক।
সভার সভাপতি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বর্তমানে নগরীর পরিবেশ অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় উন্নত এবং বাসপোযুগি। সিটি কর্পোরেশন সীমাবদ্ধতা থেকে ফুটপাত নির্মাণ, নালার উন্নয়ন ও সংস্কার, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও সম্প্রসারন, এলইডি লাইটিং এবং পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আশা করেন তার মেয়াদের মধ্যে নগরীর কাঁচা ও অর্ধপাকা রাস্তা পাকা হবে। সকল সড়ক পূর্ণাঙ্গ আলোকিত হবে এবং নগরবাসী স্বাচ্ছন্দে চলাচলের সুযোগ পাবে। তার এ প্রত্যাশা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
সভায় ২৯ তম সাধারন সভার কার্যবিবরনী অনুমোদন, স্থায়ী কমিটির সভার কার্যবিবরনী অনুমোদন, মাদক ও জঙ্গীবিরোধী কার্যক্রম প্রতিরোধে ওয়ার্ড ভিত্তিক কার্যক্রম জোরদার, সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী সভা সমাবেশের আয়োজন, কাইজেন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা, দূর্যোগপূর্ব প্রস্তুতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা, নগরীর বাজার দোকান সমূহে মূল্য তালিকা প্রত্যেক দোকানে টাঙ্গানোর ব্যবস্থা করা, ওয়ার্ড পর্যায়ে পরিত্যক্ত জায়গায় উদ্যান স্থাপন, চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা, প্র্যাপের আওতায় নির্বাচিত বস্তি উন্নয়ন কার্যক্রম এর অগ্রগতি পর্যালোচনা, গাড়ি পার্কিং এর সুবিধা নিশ্চিত করা, ওয়ার্ড ভিত্তিক কাচা রাস্তা পাকা করন কার্যক্রম তরান্বিত করা, বিএমডিএফ প্রকল্প বাস্তবায়নের আওতায় ফিরিঙ্গীবাজার হোমিও প্যথিক কলেজ স্থানান্তর করা, রাস্তার মেরামত কাজ আরো গতিশীল করা সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।