পটিয়ার চাঁনখালীতে জেটি নাই ঝুঁকি নিয়েই পন্য খালাস

0

সুজিত দত্ত, পটিয়াঃঃ দক্ষিণ চট্টগ্রামে শিল্পায়নের প্রাণকেন্দ্র পটিয়ার চাঁনখালী খালে জেটি না থাকায় শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পণ্য খালাস করতে বাধ্য হচ্ছে।

অথচ এখানে একটি জেটি নির্মিত হলে এ অঞ্চলের শিল্পায়নে যেমন নব দিগন্ত সূচিত হবে তেমনি সরকারও বিপুল পরিমান রাজস্ব পাবে। কিন্তু যথাযথ পরিকল্পনার অভাব এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় প্রায় শত বছর ধরেই এ খালে আসা বোট থেকে ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকরা পণ্য খালাস করে যাচ্ছে। এতে এ শিল্প এলাকার শ্রমিকরা অজানা শংকায় ভুগছে।

ভুক্তভোগী, ইন্ডাষ্ট্রি মালিক ও শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, বৃটিশ আমল থেকে পটিয়ার চাঁনখালী খালকে ঘিরে ইন্দ্রপুল শিল্পাঞ্চল ও বিসিক শিল্পনগরীতে শতাধিক ইন্ডাষ্ট্রি গড়ে উঠে। এ ইন্ডাষ্ট্রিগুলোতে প্রতিদিন এই খাল দিয়ে কক্সবাজার, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকোরিয়া, বাঁশখালীসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আনা হয় কাঁচামাল।

লবন মৌসুমে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ নৌ বোটে করে  এ কাঁচামাল আনা হয় ইন্দ্রপুল শিল্পাঞ্চলে। কিন্তু এখানে কোন জেটি না থাকায় শ্রমিকদেরকে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মালামাল উঠানামা করতে হয়। যুগেযুগে তারা এ দূর্ভোগ পোহালেও তা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অদ্যাবধি কোনো উদ্যোগ নেননি।

বিসিক সূত্রে জানা যায়, শিল্পোদ্যোক্তাদের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে পটিয়া ইন্দ্রপুল শিল্পাঞ্চলের সম্প্রসারণে বিসিক কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব জায়গায় সম্প্রতি আরও ৩০টি প্লট তৈরীর মাধ্যমে নতুন ইন্ডাষ্ট্রি স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এতে ইন্দ্রপুল শিল্পাঞ্চলে বর্তমান ৫০টির সাথে আরো যুক্ত হবে ৩০ ইন্ডাষ্ট্রি।

ফলে বিসিকসহ পটিয়ার দেড় শতাধিক ইন্ডাষ্ট্রি উৎপাদনে গেলে এখানে ১০ হাজারের অধিক শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বর্তমানে পটিয়ার ইন্দ্রপুলের বিভিন্ন ইন্ডাষ্ট্রিতে প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কর্মরত রয়েছে।

শুধু তাই নয় এখানে দিন দিন পণ্য আনা নেওয়ায় বোটের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বর্তমানে পণ্য খালাসে ইন্ডাষ্ট্রিগুলোকে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তাই এখন থেকে পরিকল্পিতভাবে ইন্দ্রপুল শিল্পাঞ্চলে জেটি স্থাপন করা হলে এসব ইন্ডাষ্ট্রির পাশাপাশি সরকারও বিপুল পরিমাণে রাজস্ব পেত।

এস এম আলী সল্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আলী বলেন, খালে অবস্থানকারী বোট থেকে পণ্য খালাসের কোন পরিবেশ ইন্দ্রপোল শিল্পাঞ্চলে নেই। ভাল সুবিধা নিশ্চিত করা হলে যে কেউ এখানে জেটির টোল দিতে কার্পণ্য করবে না। এতে সরকার বিপুল রাজস্ব পেতে পারে।

ইন্দ্রপুল শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক আহবায়ক কাউন্সিলর আবদুল খালেক আল্লাই বলেন, ইন্দ্রপোল শিল্পাঞ্চল একটি প্রাচীন শিল্পজোন। এখানে উৎপাদিত লবণ সারা বাংলাদেশের ৪০ ভাগ চাহিদা পূরণ করে থাকে। সে হিসেবে এখানে ৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত। এ শ্রমিকদের কল্যাণে এখানে তেমন কোন সুবিধা নেই বললে চলে।

তিনি সর্ব প্রথমে শ্রমিকদের ঝুঁকিমুক্ত করতে এখানে অবিলম্বে একটি জেটি নির্মানের দাবি জানান। ইন্দ্রপুল লবন মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাবেক কমিশনার ফজলুল হক বলেন, মিল মালিকদের চাহিদা মোতাবেক শিল্প মন্ত্রণালয় এব্যাপারে উদ্যোগ নিলে সমিতির পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

মালিক সমিতির সভাপতি ও পটিয়া পৌরসভার মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশীদ বলেন, এব্যাপারে মিল মালিকদের পক্ষ থেকে কোন প্রস্তাবনা আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.