চন্দনাইশে কৃতি খেলোয়াড় ছোটনের অকাল মৃত্যু
মো. দেলোয়ার হোসেন. চন্দনাইশঃঃ জাতীয় দলে খেলা আর হলোনা ছোটনের। মাঠ মাতানো ফুটবল খেলোয়াড় ছোটনের অকাল মৃত্যু কেউ যেন মেনে নিতে পারছে না। ফুটবলই ছিল যার ধ্যান-জ্ঞান এবং স্বপ্ন। তাই সে পড়ালেখার পরই দিনভর কাটাতেন খেলার মাঠে।
ঢাকার ওয়ান্ডার্স, নবাবপুর ক্রীড়াচক্র, মাদারবাড়ি মুক্তকণ্ঠ, চন্দনাইশ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার তৃতীয় বিভাগ, চন্দনাইশ স্পোটিং ক্লাবের পক্ষে এবিটস কাপসহ বিভিন্ন খেলায় নিজের মত করে খেলত ছোটন। তাই সে চন্দনাইশবাসীর কাছে ছিল তাদের প্রিয় ছোটন। এবারেও এবিটস কাপে ছোটন চন্দনাইশের পক্ষে ১ম রাউন্ডে খেলে জয়লাভ করেছে।
নিজে খেলতেন, খেলোয়াড় সৃষ্টি করতেন। দমে যাননি কখনো। নিজের উপার্জিত অর্থ, ক্রীড়ামোদি মানুষের সহায়তা নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফুটবল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। থ্রি-ষ্টার ফুটবল একাডেমী নামে সেতু পরিচিত। সে একাডেমীর প্রশিক্ষণ পরিচালক হিসেবে একজন উদীয়মান ফুটবলার হিসেবে মো. মোজাফ্ফর আহমদ ছোটন চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে বেশ পরিচিতি লাভ করেন।
ছোটন বাঁশখালী উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়নের মনছুরিয়া বাজার গ্রামের মৃত ছিদ্দিক আহমদের ছেলে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিকালে চট্টগ্রাম থেকে আসার পথে কর্ণফুলী কলেজ বাজার এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে প্রাণ হারান। আর বাড়ি ফিরা হয়নি ছোটনের। একই দুর্ঘটনায় বাঁশখারী শেখেরখিলের আনোয়ার ইসলামের ছেলে রিদুয়ান নামে আরও একজন মারা যান।
জাতীয় ফুটবলের রেফারি বিটুরাজ বড়ুয়া বললেন, দীর্ঘদিন ধরে ফুটবলের সাথে যুক্ত ছিল ছোটন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের নামি, দামী ক্লাবে খেলেছে ছোটন। পাশাপাশি থ্রি-ষ্টার ফুটবল একাডেমী নামে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। সেখানে শতাধিক ফুটবল খেলোয়াড় নিয়মিত প্রশিক্ষণ করত। ছোটনের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম ক্রীড়াঙ্গন একজন উদীয়মান ফুটবলারকে হারালো।
ছোটন সবসময় মাঠে থেকে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিতেন। যেখানে থাকুক প্রশিক্ষণের সময় মাঠে চলে আসত। নিজেও ভালো খেলত। জাতীয় দলে খেলার স্বপ্নের কথা বলত অনেকের সাথে। ছোটনের শুভানুধ্যায়ীরাও তাকে জাতীয় দলে দেখতে চেয়েছিল।
এভাবে চলে যাবে কেউ ভাবতে পারেনি। ছোটনের অকাল মৃত্যুতে চন্দনাইশ স্পোটিং ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এড. মো. দেলোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল উদ্দীনসহ সকল কর্মকর্তাগণ গভীরভাবে শোকাহত। তারা বলেন, ছোটন চট্টগ্রাম ১ম বিভাগে বেশ সুনামের সাথে মাঠ মাতিয়েছিল।
সম্ভবনাময় ফুটবলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল ছোটন। ব্যক্তি হিসেবে অত্যন্ত বিনয়ী ও ভদ্র ছিল ছোটন। তারা ছোটনের পরিবারের প্রতি সমবের্দনা জানান। ছোটনের মামা আশরাফ মিয়া বলেন ছোটন খুব কম বয়সে মা, বাবা ২জনকে হারায়।
৫ বোন ২ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট, ছোটন। ছোটকাল থেকেই শহরে বেড়ে উঠলেও ফুটবল একাডেমীর কারণে গ্রামে বেশি থাকত ছোটন। ছোটনের অকাল মৃত্যুর পর তার জানাযা এবং হাসপাতালে লাশের পাশে অসংখ্য ফুটবল খেলোয়াড়কে হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা গেছে।