শহিদুল ইসলাম, উখিয়া (কক্সবাজার) : মায়ানমার উপকূল ও সমুদ্র এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার মালয়েশিয়া গামী উদ্ধার প্রাপ্ত অভিবাসীদের মধ্যে থেকে বাংলাদেশী হিসেবে চিহ্নিত ১২৫ জনকে সোমবার দেশে ফেরত আনা হয়েছে। পঞ্চম দফায় এসব বাংলাদেশীদের ফেরত আনতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির নেতৃত্বে বাংলাদেশী প্রতিনিধি দল গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উভয় দেশের ঘুনধুম ঢেকবনিয়া এলাকায় মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের সাথে এক পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
স¤প্রতিক সময়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথিমধ্যে মিয়ানমার উপকুলে সেদেশের নৌবাহিনী ভাসমান অবস্থায় দু’দফায় ৯৩৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়। পরে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও বাংলাদেশ সীমান্তক্ষী বিজিবি’র উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের মধ্যে দফায় দফায় পতাকা বৈঠকে এসব উদ্ধার করা বাংলাদেশী নাগরিকদের যাচাই বাছাই করে ফেরত দিতে সম্মত হন। এর আগে চতুর্থ দফায় ৫০১ জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত দেন মিয়ানমার।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় মিয়ানমার সীমান্তের ঢেঁকিবনিয়া বিজিপি ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পতাকা বৈঠকে মিয়ানমারের ১৩ সদস্য প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক ইউ সো নাইন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ২০ সদস্য প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার ১৭ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কঃ মোঃ রবিউল ইসলাম। সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টা ব্যাপী পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে উভয় দেশের সীমান্ত এলাকা নিয়ে পারস্পরিক বন্ধুত্বসূলভ মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করার জন্য একমত হন। পাশাপাশি চোরাচালান, মাদক, মানব পাচার ও অনুপ্রবেশ প্রতিরোধেও বিজিবির পক্ষ থেকে জোরালো দাবি উত্থাপন করা হয়। পরে দুপুর ১টায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্র সেতু দিয়ে ১২৫ জন বাংলাদেশী নাগরিককে বিজিবির নিকট হস্তান্তর করা হয়। আনুষ্টানিকতা শেষে দুপুর দেড় টার দিকে বিজিবি এবং পুলিশের উপস্থিতিতে ৫ টি বাসে করে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছত্ররধর ত্রিপুরা জানিয়েছেন।
মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা ১৪ জেলার ১২৫ জন বাংলাদেশীর মধ্যে কক্সবাজারের ৮০ জন বান্দরবান ৬জন মাদারীপুর ৭জন, ফেনীর ৩জন, ঢাকার ২জন, গাজীপুরের ১জন, মেহের পুরের ৪জন, রাজবাড়ী ২জন, টাঙ্গাইল ৪জন, গোপালগঞ্জ ১জন, ভোলা-২, বিবাড়ীয়া ৪জন কিশোর গঞ্জ ২জন ও চাঁদপুরের ১জন বলে বিজিবি উপ-অধিনায়ক মেজর ইমরান উল্লাহ সরকার জানিয়েছেন। পতাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার এস.এম আনিসুর রহমান, কক্সবাজার ১৭ বিজিবির উপ-অধিনায়ক ইমরান উল্লাহ সরকার, মেজর আমিনুল ইসলাম, কক্সবাজার গোয়েন্দা বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারুক ছাড়াও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থার ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার আসিফ মনির বলেন, ৫দফায় ১২৫ জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত আনা হয়েছে।
এ বিভাগের আরও খবর