চট্টগ্রামে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ইসির ভুমিকায় বিএনপির প্রতিবাদ
সিটি নিউজ ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে চট্টগ্রামে সরকারীদল আওয়ামীলীগের নির্বাচনী আচরণবিধি লংগন ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন গায়েবী মামলা, হয়রানী ও গ্রেফতারের ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের নীরব ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, বেগম রোজী কবির, এস এম ফজলুল হক ফজু, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সুফিয়ান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম সাইফুল আলম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ আজ ২৪ নভেম্বর শনিবার এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, তফসিল ঘোষণার পরও চট্টগ্রামে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন গায়েবী মামলা, হয়রানী ও গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে।
নেতাকর্মীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে পুলিশ তল্লাশী চালাচ্ছে এবং হুমকি দিচ্ছে। অন্যদিকে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর পক্ষে পুলিশের সহায়তায় সভা, সমাবেশ, নির্বাচনী প্রচারনা ও নৌকা মার্কার পক্ষে ভোট চাওয়া হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে প্রত্যেক দলের সমান সুযোগ তৈরির জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বার বার বলার পরও চট্টগ্রামে তা মানা হচ্ছে না। চট্টগ্রামের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় পজেক্টরের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন চিত্র এবং বিএনপির বিরুদ্বে নেতিবাচক ডুকুমেন্টারী ফ্লিম দেখানো হচ্ছে। রাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন তাদের গাড়ী ব্যবহার করে যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে মিশে এসব করছে।
বিভিন্ন উপজেলার ইউএনও এবং ওসি পোলিং অফিসার হিসাবে নিযুক্ত শিক্ষক ও ব্যাংকাদের রাজনৈতিক পরিচয় ও তথ্য সংগ্রহ করছে এবং হুমকি দিচ্ছে। সিতাকুন্ডের ইউএনও এবং ওসি এ বিষয়ে বেশী বাড়াবাড়ী করছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, তফসিলের পর চট্টগ্রামে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গত ৮ নভেম্বর খুলশী থানায় ১টি, ২০ নভেম্বর বায়েজিদ থানায় ১টি ও ২২ নভেম্বর চান্দগাঁও থানায় ১টিসহ মোট ৩টি নতুন গায়েবী মামলা দেওয়া হয়েছে। গত ১ সপ্তাহে চান্দগাঁও থানা পুলিশ নগর যুবদল নেতা জমির উদ্দীন মানিক, জাহাঙ্গীর আলম বাবলু, বিএনপি নেতা আনোয়ার ও মোঃ নুরুকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে।
২০ নভেম্বর বাকলিয়া থানা পুলিশ ১৭ নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড় বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ এমরানকে ১টি মামলায় হাইকোর্টের জামিনে থাকার পরও গ্রেফতার করে চকবাজার থানার একটি মামলায় কারাগারে পাটিয়ে দিয়েছে। নগর বিএনপির সহ শ্রম সম্পাদক আবু মুসা বায়েজিদ থানার ১টি মামলায় ২ মাস জেল খেটে বাহির হয়ে বর্তমানে চট্টগ্রামের বাইরে চিকিৎসাধীন আছেন। অথচ গত ২০ নভেম্বর বায়েজিদ থানায় দায়ের হওয়া গায়েবী মামলায় তাকে আসামী করা হয়েছে।
আকবর শাহ থানা ছাত্রদল নেতা মোঃ আরজু ২২ নভেম্বর নগরীর এ কে খান মোড়ে গাড়ীর জন্য দাঁড়ালে পাহাড়তলী থানার পুলিশ তাকে অমানবিকভাবে আটক করে তার মোবাইল চেক করে শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার ছবি পাওয়ায় তাকে পুরানো মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে। হাইকোর্ট থেকে জামিনে আসা এবং জেল গেট থেকে বাহির হওয়ার সময় নেতাকর্মীদের প্রতিনিয়ত গ্রেফতার করা হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র মুক্তির জন্য বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। তাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য দলবাজ সরকারী ও পুলিশ কর্মকর্তাদের চট্টগ্রাম থেকে অন্যত্র বদলী করে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করতে হবে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পত্র নেওয়া কারাগারে বন্দি বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরী, আসলাম চৌধুরী, ডাঃ শাহাদাত হোসেন, মাহবুবের রহমান শামীম, আবুল হাশেম বক্কর, ইকবাল চৌধুরী, ইন্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, অধ্যাপক কুতুব উদ্দীন বাহার, লিয়াকত আলী ও শহিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ গ্রেফতাকৃত সকল নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।