চট্টগ্রামে আদনান মার্ডার-উত্তপ্ত হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম
দিলীপ তালুকদার, সিটি নিউজঃ চট্টগ্রামে কলেজিয়েট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র আদনান ইসফার খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রামের অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা জামাল খান এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে স্কুল ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে হত্যায় গভীর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবক মহল। প্রকাশ্য জনারণ্যে আদনানকে দৌড়ানি দিয়ে হত্যা করা হলেও কোন মানুষ তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসার সাহস করেনি।
এদিকে আদনান হত্যার ঘটনা্য় তার বন্ধু সহপাঠীরা আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারী) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদী বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।তারা তাদের বন্ধু আদনান হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবী জানিয়েছে। প্রতিবাদ সমাবেশে আসা তার এক সাথী বলেছে, জামাল খান এলাকার মতো একটা জায়গায় এভাবে প্রকাশ্য একজন ছাত্রকে ছুরিমেরে হত্যা করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমরা ছোটভাই-বন্ধু আদনানের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানাতে এসেছি।
একটি বিশ্বস্ত সুত্র জানায়, তাকে হত্যার পেছনেও জনৈক বড় ভাইয়ের হাত রয়েছে বলে পুলিশ ধারনা করছে। আদনান হত্যা ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ৫ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে জেলার ফটিকছড়ি ও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাও উদ্ধার করা হয়েছে।
সুত্র জানায়, হামলাকারীদের গ্রুপটিকে শেল্টার দেয় চন্দনপুরার তাদের জনৈক ‘বড় ভাই’ রউফ। আদনানের উপর হামলার সময় নেপথ্যের ‘বড় ভাই’ রউফ কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। ঘটনার পর রাতেই ছুরিকাঘাতকারী মইনের গণি বেকারী সংলগ্ন বাসায় অভিযান চালিয়েছে । একইভাবে অন্যদের ধরতেও অভিযান চলেছে। তবে ইতোমধ্যে ঘটনায় জড়িতরা তাদের ব্যবহৃত মোবাইল সিম পালটে ফেলেছে ও ফেইসবুক আইডিও ব্লক করে দিয়েছে।
আটকরা হলেন হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মহিম, সাব্বির, মুনতাসির ও আবদুল্লাহ আবু সাঈদ এবং এসএসসি পরীক্ষার্থী আরমান। এদের মধ্যে মুনতাসিরকে নগরীর বাদুরতলা এবং বাকি চারজনকে ফটিকছড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। কলেজিয়েট স্কুলের মাঠে ক্রিকেট খেলা নিয়ে বিরোধ থেকে এই হত্যাকাণ্ড বলে পুলিশ ধারন করছে।
জানা গেছে গত মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে চার পাঁচ জন যুবক মহসিন স্কুলের সামনে থেকে আদনানকে ধাওয়া দেয়। আইডিয়াল স্কুলের সামনে হঠাৎ একটি সিএনজি টেক্সির সাথে ধাক্কা লেগে সে পড়ে যায়। তাড়া করা যুবকেরা প্রথমে তার মাথায় পিস্তল ঠেকায়। এরপর পিঠে ছুরিকাঘাত করে। রক্তমাখা শরীর নিয়েও দৌড়াতে থাকে সে। খাস্তগীর স্কুলের সামনে আবারো হোঁচট খেয়ে লুটিয়ে পড়ে আদনান।
নিহত আদনান ইসফার (১৫) বাসা জামালখান এলাকায় প্রেসক্লাবের পেছনে ‘আম্বিয়া সেরিন’ নামের একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে । দুই ভাইবোনের মধ্যে সে আদনান ছোট। তার বাসা থেকে ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ৩০০ গজ দূরে। ঘটনার পরপর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া যুবকেরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার পিতা আদনান আক্তারুল আজম এলজিইডির প্রকৌশলী।তাদের গ্রামের বাড়ী ফটিকছড়ি উপজেলার শাহনগর গ্রামে।