চকরিয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের একটি বাঘ নিয়ে লুকুচুরি খেলায় মেতেছে পার্ক কতৃপক্ষ। গত তিন সপ্তাহ ধরে এ নিয়ে চলছে নানা কানাঘুষা। কেউ বলেছে একটি বাঘ খাঁচা ভেঙ্গে বেরিয়ে গেছে সেটি অনেক চেষ্টা করে আবার খাঁচায় ঢুকানো হয়েছে। আবার কেউ বলেছে ওই বাঘটি মারা গেছে। সেটি রাতের অন্ধকারে মাটির নীচে পুঁতে ফেলা হয়েছে। তবে এতদিন পার্ক কতৃপক্ষ কোন মূখ খোলেনি। বিষয়টি ধামাচাপা দিলে আসলে বর্তমানে খবরটি সবখানে ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকদিন ধরেই বাঘটির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায় গত রোববার রাতে বাঘটি মারা গেছে। বাঘ মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রেখে ঘটনা ধামাচাপা দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সাফারি পার্ক কর্মকর্তারা। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার আগেই মৃত বাঘটি রাঁতের আধাঁরে মাটির নীচে পঁতে ফেলা হয়েছে বলে গোপন সুত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানায় ইতিপূর্বে সাফারি পার্কে চারটি বাঘ ছিল। তিন সপ্তাহ আগে একটি বাঘ খাঁচা ভেঙ্গে বের হওয়ার খবর চতুর্দিক ছড়িয়ে পড়লে আতংকে ছিল পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন। পরে বাঘটি আটক করে পুনঃরায় খাঁচাবদ্ধ করা হয়েছিল বলে পার্ক সুত্রে জানান। তবে কখন বাঘটি পালিয়েছিল আবার কোন সময় সেটি খাঁচায় ঢুকানো হয়েছে সে ব্যাপারে সংবাদিকদের কোন তথ্য দেয়নি কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পার্কের এক কর্মচারী জানিয়েছেন, রোববার রাতে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের খাঁচায় বন্দী একটি বাঘ মারা গেছে। ওইসময় সাফারি পার্কের ভেটেরেনারী সার্জন বাঘটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত মারা যায় পর্যটক দৃষ্টিনন্দন প্রাণী সাফারি পার্কের এই বাঘটি। ওইদিন রাতেই তড়িঘড়ি করে বাঘের মৃত দেহটি মাটিতে পূঁতে ফেলা হয়েছে। বাঘ মৃত্যুর খবর পেয়ে পরদিন সরেজমিনে পার্কে গিয়ে দেখা যায় খাঁচায় রয়েছে তিনটি বাঘ। তবে একটি খালি খাঁচা পানি দিয়ে পরিষ্কার করা ভেজা পাওয়া যায়। মূলত পার্ক কর্তৃপক্ষের অযত্ন, চরম অবহেলা ও খামখেয়ালীপনার কারণে একের পর এক পরপর প্রণীগুলো মারা যাচ্ছে বলে অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা যায়। তদুপরি শক্তিশালী ও দূধর্ষ প্রাণীদের খাঁচা তৈরীতে টিকাদারা পার্ক কতৃপক্ষের যোগসাজসে চরম অনিয়মের আশ্রয় নেন বলে ও সূত্র জানায়।
এ ব্যাপারে জানতে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের পশু হাসপাতালে ভেটিরেনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলে ও তিনি কল রিসিভ করেনি। সাফারি পাকের্র তত্ববাধায়ক রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মোর্শেদ আলমকে বাঘ মৃত্যুর পরদিন সোমবারে ফোন করে তার দুটি নাম্বারই বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যপারে চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম মওলাকে ফোন করা হলে তিনি কিছু না বলেই ফোন কেটে দেন। সাফারি পার্কে ইতিপূর্বে তিনটি বাঘের শাবক, দুটি ওয়াইলবিষ্ট, একটি জেব্রা, একটি হাতি মারা যায়। এবার মারা গেল বাঘ।
এভাবে একেরপর এক জীবজন্তু ও পশুপাখী মৃত্যূর প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন হচ্ছে না বলে অভিযোগ পরিবেশবাদি ও স্থানীয়দের। পার্ক কর্তৃপক্ষের অনিয়ম-অবহেলায় প্রাণী মৃত্যুর বিষয়ে কোন প্রকার তদারকি নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। অনিয়ম অবহেলার সত্যতা উৎঘাটন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।