সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি প্রতিনিধি::রাঙামাটি সহ পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন স্থানে গত জুন মাসের অতি বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন পাহাড় ধস হয়। এই ঘটনায় প্রাণ হারায় এক শত’রও বেশি মানুষ। এই ঘটনার পর থেকে পার্বত্য এলাকার মানুষ রয়েছে আতঙ্কের মধ্যে। আগে যারা বৃষ্টির দেখা পেলে স্বস্থিবোধ করতো তারাও আজ বৃষ্টির ভয়ে রয়েছে।
প্রায় মানুষ এখন বৃষ্টি হলে আতঙ্কে সময় কাটায়। না জানি কোথায় কোন দূর্ঘটনা হয়? কোন মানুষ না জানি আবারও পাহাড় ধসে মারা যায়? এমনই হাজারো আতঙ্কের প্রশ্ন তৈরি করে সকলে নিজের মধ্যে। এই আতঙ্কের কথা গণমাধ্যম ফেসবুক দেখলেই বুঝা যায়। রাঙামাটির হাজারো মানুষ এমনই মন্তব্য প্রকাশ করছে ফেসবুক’র ওয়াল জুড়ে।
রোববার থেকে রাঙামাটিতে আবারো বৃষ্টি হতে দেখা গিয়েছে। তার কিছুটা সময়ের পরে জেলা প্রশাসনের মাইকিং শোনা যায়। মধ্যরাত থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এমনই সংবাদ যেনো মানুষের হৃদয়কে আতঙ্কের মধ্যে ফেলে দিলো। কারণ গত কিছুদিন আগেই রাঙামাটিতে এমনই ভারি বর্ষণে প্রাণ গিয়েছে নারী, পুরুষ, শিশু মিলে শত মানুষের। এই মৃত্যুর মিছিল ছিলো সকল মানুষের জানা ও দেখা।
রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী সনাতন পাড়ার রুবেল দাশ বলেন, আমাদের এলাকায় পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ২০ জনের অধিক নারী ও পুরুষ। আমার নিজের বাসারও কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরপরেও আমরা ভালো ভাবে দিন কাটাছি। কিন্তু আবারও বৃষ্টি হওয়ার কথা যেনো আমাদেরকে আতঙ্কে ফেলে দিলো। রাতে ভালো করে ঘুমাতে পারি না। শুধু ভয় লাগে, কখন না জানি পাহাড় ধসে পরে কিংবা গাছ ভেঙ্গে ঘরে উপরে পরে।
এমনই আতঙ্কের কথা জানালেন রাঙ্গাপানি এলাকার মনতলায় বসবাসরত সুনায়ন চাকমা। তিনি জানান, রাঙামাটিতে গত ১৩ জুন সংগঠিত হওয়া পাহাড় ধস দূর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে অনেকে। আমার বাসার উপরে পাহাড়ও ধস হয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার আর্শিবাদে আমার বাসা ঠিক রয়েছে। আমি আমার পরিবার নিয়ে নিজ বাসায় এখনও বসবাস করছি। কিন্তু আবারো ভারি বর্ষণ হওয়ার কথা শুনে এখন আমার কেনো জানি ভয় লাগছে। পরিবার নিয়ে বাসায় থাকতে ইচ্ছে করছে না। আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে।
শিমুলতলী এলাকার বাসিন্ধা আবুল বসর বলেন, আমার বাড়ি-ঘর পাহাড় ধসে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তার পরেও আমরা মোটামুটি দিন কাটাচ্ছি। পাহাড় ধসের পরে কিছুদিন আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার পরে আবারো নিজের বাসায় এসে উঠেছি। কিন্তু এখন সংবাদ পেলাম আবারও বৃষ্টি হতে পারে। এখনতো খুবই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। পরিবার নিয়ে আবারো মনে হয় আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে হবে। না হয় আবারো বৃষ্টি হতে থাকে তবে আমার বাসার বাকি অংশও ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।