অনলাইন ডেক্স : ওশিয়ানিয়া অঞ্চলের দ্বীপ দেশ নিউ জিল্যান্ডে ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর সুনামি আঘাত হেনেছে বলে খবর দিয়েছে দেশটির সিভিল ডিফেন্স।
সিভিল ডিফেন্স মন্ত্রণালয়ের এক টুইটে বলেছে, “সুনামির সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম ঢেউ ইতোমধ্যে সাউথ আইল্যান্ডের উত্তর-পূর্ব উপকূলে আঘাত হেনেছে।”
আরও কয়েকটি ঢেউ উপকূলে আঘাত হানতে পারে জানিয়ে উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ উপকূল এবং চাথাম আইল্যান্ডের বাসিন্দাদের উঁচু এলাকায় সরে যেতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন কি ভূমিকম্পে দুইজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তর ইউএসজিএস জানায়, নিউ জিল্যান্ডের স্থানীয় সময় রোববার রাত ১২টা ২ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টা ২) রিখটার স্কেলে ৭.৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্প আঘাত হানে।
এর উপকেন্দ্র ছিল অ্যাম্বারলে থেকে ৪৬ কিলোমিটার উত্তর-উত্তর পশ্চিম, ক্রাইস্টচার্চ থেকে ৯৫ কিলোমিটার উত্তর-উত্তর পূর্বে; উৎপত্তিস্থল ছিল ভূ-পৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
এরপর এক ঘণ্টায় কাছাকাছি এলাকায় ৪.৯ থেকে ৬.২ মাত্রার অন্তত দশটি পরাঘাত অনুভূত হয়।
বিবিসির খবরে বলা হয়, প্রথম দফা ভূমিকম্পের দুই ঘণ্টা পর নিউ জিল্যান্ডের উত্তর-পূর্ব উপকূলে সুনামির প্রথম ঢেউ আঘাত হানে।
ক্রাইস্টচার্চের ১৮১ কিলোমিটার দূরে কাইকুরা অঞ্চলে প্রথম দফায় আড়াই মিটার উচ্চতার ঢেউ দেখতে পাওয়া গেছে বলে নিউ জিল্যান্ডের ওয়েদারওয়াচ ওয়েবসাইটের খবর।
রাজধানী ওয়েলিংটনসহ অন্যান্য এলাকাতেও সুনামির জলোচ্ছ্বাসের খবর এসেছে ওই ওয়েবসাইটে।
বিবিসি লিখেছে, ওয়েলিংটনের ভবনগুলোও ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে এবং আতঙ্কিত লোকজন মধ্যরাতে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে।
স্থানীয় এক বাসিন্দাকে উদ্ধৃত করে বিবিসির খবরে বলা হয়, “প্রচণ্ড ঝাঁকুনির মধ্যে আমাদের ঘুম ভাঙলো। অনেক দীর্ঘ সময় ধরে দুলুনি চলছিল।”
টাকাকা এলাকার বাসিন্দা এলিজাবেথ রেডিও নিউ জিল্যান্ডকে বলেন, “পুরো বাড়ি যেন মোচড়াচ্ছিল। জিনিসপত্র ভেঙে পড়ল, বিদ্যুৎ চলে গেল।”
ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রের খুব কাছের শহর শেভিয়টের ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, তাদের উদ্ধারকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে লোকজনকে সরিয়ে নিচ্ছে।
ভূমিকম্পে বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ঘরবাড়ির কাচ ভেঙে গেছে। শেভিয়ট শহরে বেশ কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির ছবিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসছে। তবে হতাহতের কোনো খবর তাৎক্ষণিকভাবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আসেনি।
২০১১ সালে নিউজিল্যান্ডের ওই এলাকায় ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে পাহাড় ধসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ওই ঘটনায় প্রায় ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।