মানহীন গুড়োদুধ আমদানির ফলে খামারীরা ক্ষতিগস্ত হচ্ছে

0

নিজস্ব প্রতিবেদক:: কর্ণফুলীতে খামারীদের নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় মিল্কভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু বলেছেন, আগামী বাজেটে বিদেশী গুড়ো দুধ আমদানি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। এ লক্ষে অর্থ মন্ত্রীর সাথে আলোচনা হয়েছে। বিদেশী মানহীন গুড়োদুধ কম দামে আমদারি ফলে দেশীয় খামারীরা ক্ষতিগস্ত হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত দুধ থেকে তৈরি গুড়ো দুধ বিদেশী মানহীন দুধের কারণে বাজারে টিকতে পারছে না। দেশে এক কেজি গুড়ো দুধ বাজারজাত পর্যন্ত প্রায় ৫শ টাকা খরচ হয়। অথচ বিদেশী গুড়োদুধ বাজারে এর অর্ধেক মুল্যে মিলছে। এতে সহজে বোঝা যায় এসব দুধের মান কী বা কি দিয়ে তৈরি। তিনি বলেন বিদেশ থেকে এসব গুড়ো আনা হলেও কি দিয়ে এসব দুধ তৈরি হয় তা কেউ জানে না। পবাদি পশু ছাড়াও বিভিন্ন প্রাণীর দুধসহ নানা উপকরণে তৈরি হয় এসব গুড়ো দুধ। আর কমদামে এদেশে বাজারজাত করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে দেশী খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই আগামী বাজেটে বিদেশী গুড়ো দুধ আমদানিতে শুল্কহার বাড়িয়ে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। গতকাল রবিবার কর্ণফুলী উপজেলার সাইন্যারটেকস্থ একটি কমিউনিটি সেণ্টারে আয়োজিত দিনব্যাপী বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে গবাদিপশু লালন-পালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মিল্কভিটার পরিচালক নাজিম উদ্দিন হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন, চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু, বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত সচিব ও মিল্কভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আতাহার আলী, প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের প্রধান ভেটেনারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরহাদ হুসাইন, চট্টগ্রাম জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রিয়াজুল হক, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রনি, পটিয়া দগ্ধ খামার কারখানা স্থাপন প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, পটিয়া দুগ্ধ কারখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ রফিক, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন, উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জীবন মঞ্জু, খলিল আহমদ, জাফর ইকবাল, মোহাম্মদ ইকবাল, হাজী শরিফ, ডা. ফোরকান, ডা, মহিউদ্দিন, মোহাম্মদ বেলাল, মাসুদুল ইসলাম, মোহাম্মদ রফিক ও মোহাম্মদ জাহেদ প্রমুখ।

মিল্কভিটা চেয়াম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ১৫ কোটি হাতকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য যে কাজ শুরু করেছিলেন মিল্কভিটার তারই একটি অংশ। এদেশ গ্রাম ভিত্তিক। তাই তিনি গ্রাম পর্যায় থেতে উন্নয়নের কাজ শুরু করেন। তিনি বলেন, খামারীদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহের পর এখনো ঢাকায় নিতে পাস্তুরিত করে তা বাজারজাত করতে হয়। এ কারণে খরচ বেশি হয় এবং প্রাইভেট কোম্পানির সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। এ কারণে এখন চট্টগ্রামের পটিয়ায় একটি পূর্ণাঙ্গ কারকানা স্থাপন করা হচ্ছে ৩৭ কোটি টাকায়। এটি বাস্তবায়িত হলে এখান থেকেই চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম বিভাগে মিল্কভিটার সব পণ্য বাজারজাত করা হবে। বাজারজাত করা পর্যন্ত খরচ কমায় খামারীদের দুধের দাম আরো বেশি পাবেন। ২০১৩ সাল থেকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হলেও নানা চক্রান্তে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। মিল্কভিটার পরিচালক এ এলাকার সন্তান নাজিম উদ্দিন হায়দারের চেষ্টায় সেটি এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে।

অতিরিক্ত সচিব ও মিল্কভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আতাহার আলী বলেন, দারিদ্রতা দূরীকরণ ও পুষ্টি যোগানের জন্যই বঙ্গবন্ধু এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। আর বঙ্গবন্ধু গড়া এ প্রতিষ্ঠানই একমাত্র নির্ভেজাল ও প্রিজারভেটিব ছাড়াই পণ্য বাজারজাত করে। মিল্কভিটার পণ্য গ্রাহকের হাতে পৌছাতে দেরি হলে তা নষ্ট হয়ে যায়। আর কোম্পানিগুলোর পন্য ফ্রিজ ছাড়াই দীর্ঘদিন ফেলে রাখা যায়। কিভাবে সম্ভব তা গ্রহকদের বুঝতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানহীন আমদানীকৃত গুড়েদুধে তৈরি এসব পণ্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার। বিভিন্ন উপাদনে তৈরি গুড়ো প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এর সুফল পাবে দেশের সাধারণ মানুষ।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.