শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশী হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ

0

নিজস্ব প্রতিেবদক,চট্টগ্রাম : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর আজ ৯ এপ্রিল সোমবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম চেরাগী পাহাড় চত্ত্বরে কোটা সংস্কার দাবীতে আন্দোলনরত মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপর ঢাকার শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মানববন্ধনে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ছাত্রসেনার সভাপতি ছাত্রনেতা মুহাম্মদ মাছুমুর রশিদ কাদেরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর সাংগঠনিক সম্পাদক জননেতা মুহাম্মদ শফিউল আলম।

তিনি বলেন, দেশের সকল সাধারণ শিক্ষার্থী ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করছে কোটা সংষ্কারের জন্য। ১% মানুষের জন্য ৫৬% কোটা আর ৯৯% সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৪৪% কোটা। এটা অন্যায় ও চরম বৈষম্য। কোটা সংস্কারের আন্দোলন যৌক্তিক আন্দোলন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে অধিকার রক্ষার আন্দোলন। তিনি আরো বলেন, অবিলম্বে অদ্ভুত কোটা প্রথা বাতিল করুন না হয় সংস্কার করুন এবং বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী চাকুরীতে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করুন।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর সাধারণ সম্পাদক যুবনেতা হাবিবুল মোস্তফা সিদ্দিকী। তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ। জোর জুলুমের রাজত্ব কায়েম করতেই তারা মেধাবীদের আন্দোলন দমন করতে চাচ্ছে। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পর্ষদ এর সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯ (১), ২৯ (১) ও ২৯ (২) অনুচ্ছেদ সমূহে চাকুরির ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সমান সুযোগের কথা বলা হয়েছে। আমরা সাংবিধানিক অধিকার চাই। কিন্তু বর্তমানে ৫৬ শতাংশ কোটা ব্যবস্থার কারনে সাধারণ মেধাবীরা চাকরিতে স্থান পাচ্ছে না। ফলে বেকার বাড়ছে। মানসিক হতাশাগ্রস্থ যুবকরা খুন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। তাই এ মুহূর্তে বৈষম্যমূলক কোটা প্রথার সংস্কার করা দরকার।

আশা করি, সরকার এ বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে কোটা প্রথার সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ছাত্রনেতা মুহাম্মদ ইদ্রিস, চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর সহ সভাপতি ছাত্রনেতা আবদুল্লাহ আল মাসুম, ছাত্রনেতা মুহাম্মদ শাহজালাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, অর্থ সম্পাদক মুহাম্মদ রিদুয়ান হোসেন তালুকদার পাপ্পু। সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রনেতা মাছুমুর রশিদ বলেন, কোটা সংস্কার বিরোধীরা স্বার্থান্ধ ও বিকারগ্রস্থ। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন শুধু নিজেরাই ভালো থাকতে নয় বরং দেশের মানুষকে বৈষম্য থেকে মুক্ত করে স্বাধীন ও স্বচ্ছল জীবন দিতে।

আজ মুক্তিযুদ্ধের দোহাই দিয়ে যারা কোটা সংস্কারের বিরোধিতা করছে তারা প্রকারান্তে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অস্বীকার করছে। মানববন্ধনে বক্তারা গতকাল ঢাকার শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত সাধারণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশী নগ্ন হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। হামলায় অংশ নেয়া অতি উৎসাহী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।

পাশাপাশি হামলায় আহত মেধাবী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকারী তহবিল থেকে পরিচালনার জোর দাবী জানান। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চেরাগী পাহাড় চত্ত্বরে এসে শেষ হয়।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুহাম্মদ এরশাদুল করিম, মুহাম্মদ তৌহিদুল হক, মুহাম্মদ আদনান তাহসিন আলমদার, মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, মুহাম্মদ কাওসার খান, মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, আবু সায়েম মুহাম্মদ কাইয়ূম, মুহাম্মদ আবদুল কাদের, এস এম ফরিদ, মুহাম্মদ আবদুল্লাহ জাবের, মুহাম্মদ সাইফুল হক চৌধুরী, মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, মুহাম্মদ ওসমান গণি, মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ, গাজী ইকবাল, ফয়সাল কাউসার, হাফেজ মোহাম্মদ তামজীদ, সৈয়দ আবরার উল্লাহ সমরকন্দি, আশিক উর রহমান প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.