পড়াশোনা করে যে, বেকার তত থাকে সে: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

0

সিটি নিউজ ডেস্ক :: প্রবৃদ্ধি বাড়লেও এর সুফল না পাওয়া এবং ব্যক্তি খাতে ব্যাংক থেকে টাকা গেলেও বিনিয়োগ না হওয়াকে রহস্যজনক বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এসব রহস্যের সুরাহা করে যেন আগামী বাজেট প্রণয়ন করা হয়, সে দাবিই জানিয়েছে সিপিডি।

‘বাজেট সুপারিশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের অভিমত, অতিমাত্রায় নির্বাচনকেন্দ্রিক বাজেট করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ যেন এর ভুক্তভোগী না হয়।

অর্থনীতির বেশ কিছু বিষয়কে প্রশ্নবিদ্ধ ও রহস্যজনক হিসেবে চিহ্নিত করে সিপিডি বলছে, এসব বিষয় স্পষ্ট করা উচিত, আগামী বাজেটে এবং এটাই তাদের বড় সুপারিশ আগামী বাজেটের জন্য। প্রথমত, তারা রহস্যজনক মনে করছে যেভাবে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, সেভাবে কর্মসংস্থান না বাড়াকে। কেবল তাই নয়, পরিসংখ্যান অনুযায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ সবচেয়ে কম সৃষ্টি হচ্ছে যারা বেশি পড়ালেখা করে, তাদের মধ্যে। তথ্য অনুযায়ী উচ্চশিক্ষিত এক-তৃতীয়াংশ তরুণ জনগোষ্ঠীই এখন বেকার।

দেবপ্রিয় আরো বলেন, ‘ওই বলে না যে, পড়াশোনা করে যে, গাড়িঘোড়ায় চড়ে সে। আমরা এখন দেখছি, পড়াশোনা করে যে, বেকার তত থাকে সে।’ কর্মসংস্থান যাও কিছু হচ্ছে, সেখানেও রয়েছে প্রশ্ন। দেখা যাচ্ছে কর্মজীবীদের আয় বিগত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। প্রবৃদ্ধি যেখানে বেড়েছে, সেখানে কেন এ রকম আয় কমে যাবে—এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সিপিডি।

সিপিডি ফেলো বলেন, ‘আপনারা এত দিন শুনেছেন, শুনেছেন না জবলেস গ্রোথ? আজকে আমরা বলছি, আয়হীন কর্মসংস্থান।’

প্রবৃদ্ধি যা হয়েছে, তা মূলত সরকারি বিনিয়োগের কারণে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক থেকে এত টাকা ঋণ আকারে যাওয়ার পরও কেন বিনিয়োগ বাড়ল না, সেই বিষয়টি অস্পষ্ট মনে করছে সিপিডি।

এ বিষয়ে দেবপ্রিয় বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রশ্ন জাগে, এই টাকা গেল কোথায়? অন্যদিকে দেখেন, আমদানি বাড়ল। আমদানি অভূতভাবে বাড়ছে। সিপিডি বারবার বলেছে, আমদানি বিশেষ করে পুঁজিপণ্যের আমদানির ভেতর দিয়ে অর্থ পাচার হচ্ছে কি না, এটা মনোযোগ দিয়ে দেখা দরকার।’

আর  আগামী বাজেটে ব্যাংক খাতের সংস্কারের বিষয়ে সরকারের সত্যিকারের আন্তরিকতা যেন দেখা যায়, সেই দাবি উঠে সংবাদ সম্মেলন থেকে। দেবপ্রিয় বলেন, ‘এবার আমার মনে হয়, ব্যাংকিং খাত এখন একটি এতিমে পরিণত হয়েছে। রক্ষক যাঁরা থাকবেন, রক্ষক যাঁরা আছেন, তাঁরাই এখন এই শিশুর ওপর, এতিমের ওপর অত্যাচার করছেন।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘নির্বাচনী ডামাডোলে অর্থনীতির সামষ্টিক ব্যবস্থাপনায়, বিশেষ করে প্রবৃদ্ধির যে চরিত্র আমরা দেখছি, কর্মসংস্থান এবং আয়ের ক্ষেত্রে, এটার ভেতরে গরিব মানুষগুলো যেন মারা না যায়। এ জন্য খুব জোর দিয়ে আমরা যেটা বলছি, সেটা হলো সামাজিক নিরাপত্তা খাতে, বিশেষ করে সরকারের ঘোষিত সামাজিক নিরাপত্তা নীতিতে আরো বেশি অর্থায়ন করতে হবে।’

বাংলাদেশের আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের ব্যাপারে কী করা হবে, সেই বিষয়টি আগামী বাজেটে স্পষ্ট করারও আহ্বান জানান সিপিডির গবেষকরা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.