বোয়ালখালীতে এক সন্তানের জননীকে হত্যার অভিযোগ
বোয়ালখালী প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম :: জেলার বোয়ালখালীতে পাষ- স্বামী এক সন্তানের জননী শামীমা আকতারকে (২২) মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) দিনগত রাতে উপজেলার আহলা কড়লডেঙ্গা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের লুদুরি পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বুধবার বিকেল ৩টার দিকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে।
জানা গেছে, পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও বাণীগ্রাম এলাকার আবুল কাশেমের মেয়ে শামীম আকতারের গত তিন বছর আগে বোয়ালখালী উপজেলার আহ্লা করলডেঙ্গা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের লুদুরি পাড়ার মৃত ফজল কাদেরের তৃতীয় পুত্র গিয়াস উদ্দিনের (২৮) সাথে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দেড় বছর বয়সী জান্নাত আকতার নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে। গিয়াস উদ্দিন এলাকায় লেবু ব্যবসার পাশাপাশি গাড়িও চালান।
গিয়াসের মা ফরিদা বেগম জানান, রাত ১টার দিকে গিয়াসের শোরগোল শুনে ঘর থেকে বেড়িয়ে জানতে পারি। গিয়াস ঘর থেকে প্র¯্রাব করতে বের হলে তার স্ত্রী শামীমা ঘরের দরজা লাগিয়ে দিয়েছে। পরে দা দিয়ে চাল কেটে ঘরে ঢুকে দেখতে পায় ঘরের ছাদ বীমের সাথে গলায় শাড়ি পেঁছিয়ে শামীমার ঝুলন্ত মরদেহ।
নিহত শামীম আকতারের বড় ভাই শফিউল আলম জানান, গিয়াস প্রায় সময় শামীম আকতারকে যৌতুকের জন্য মারধর করতো। গত ১৫দিন আগে শামীমাকে মারধর করলে সে বাপের বাড়ীতে চলে যায়। গত মঙ্গলবার বিকেলে শামীমার চাচাত ভাই শামীমাকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসলে গিয়াস তাকে ঘরে ঢুকতে দেয়নি। অনেক মিনতির পর স্থানীয় মেম্বারের উপস্থিতিতে ঘরে ঢুকে শামীমা। ওই রাতে আবারো ঝগড়া করে মারধর করে গিয়াস। এতে রাতে খাবার রান্না না করে ঘুমিয়ে পড়ে তারা। গিয়াস পরিকল্পিত ভাবে শামীমাকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়ে ঘরের চালা কেটে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহমুদ করিম বলেন, তাদের মধ্যে বিয়ের পর থেকেই কলহ লেগেই ছিলো। এ নিয়ে ইতিপূর্বে একাধিকবার সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি করেছি। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিহত শামীমা বাপের বাড়ী থেকে আসলে গিয়াস তাকে ঘরে ঢুকতে না দিলে শামীমার ভাই ফোনে বিষয়টি আমাকে জানায়। আমি গিয়াসের বাড়িতে গিয়ে মিমাংসা করে দিয়েছিলাম। পরে রাত ১টার দিকে গিয়াস আমাকে ফোনে তার স্ত্রী ফাঁস খেয়েছে জানিয়ে তার বাড়ি যেতে বলে। পরে ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করি।
থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘরের ছাদ বীমের সাথে গলায় শাড়ী পেচানো ঝুলন্ত অবস্থায় শামীমার মরদেহ উদ্ধার করি। তবে ময়না তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মুখ খুলতে রাজি হননি তিনি।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিমাংশু কুমার দাস বলেন, লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। ময়না তদন্তে মৃত্যুর বিস্তারিত কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে।