ভারত নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে না: কাদের

0

সিটিিনউজ ডেস্ক:: আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের ভারত সফরে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি  আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি কথাও বলেননি বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। ভারত নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে না:

যদিও আওয়ামী লীগ নেতাদের সফরের দ্বিতীয় দিন সে দেশের এক মন্ত্রীর বাসভবনে নৈশভোজে উপস্থিত বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় ফেরার আশা প্রকাশ করেছেন। একে অবশ্য ভদ্রতা বলেছেন কাদের।

দেশে ফেরার দুই দিন পর বৃহস্পতিবার ভারত সফর নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।

গত ২২ থেকে ২৪ এপ্রিল ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২০ জন নেতা ভারত সফর করেন। ২৪ এপ্রিল দেশে ফেরার পর তাৎক্ষণিকভাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে না। তবে এই সফরের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পরে সংবাদ সম্মেলন করার কথা জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্ালয়ে সেই সংবাদ সম্মেলন করেন ওবায়দুল কাদের।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের বছরে আওয়ামী লীগের এই সফরকে ঘিরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দৃষ্টি রয়েছে। বিএনপি-জামায়াতরে সহিংস আন্দোলনের মুখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের আগে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ যখন সব দলের অংশগ্রহণে ভোটের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, তখন ভারতের অবস্থান ছিল সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায়।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না, এই বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। আর এই অবস্থায় ভোটের মাসছয়েক আগে এই সফর নিয়ে এরই মধ্যে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা রয়েছে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব নিয়ে নানা আলোচনা আছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ না থাকলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বিশ্বাস রয়েছে যে, ভারতের চাওয়া না চাওয়ার গুরুত্ব রয়েছে।

দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনেও ওবায়দুল কাদের তার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘কোন বিদেশি শক্তি কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না।’

একই দিন সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী আওয়ামী লীগের ভারত সফর নিয়ে কটাক্ষ করেন। বলেন, ‘আপনারা সদলবলে ভারতে গিয়েছিলেন কী ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেনদরবার করতে? বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার জেনে গেছে যে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ২০/২২টির বেশি আসন পাবে না। সেজন্য একতরফা নির্বাচনের পক্ষে নাক গলাতে তারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে।’

তবে কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। বহুদল তাতে অংশগ্রহণ করবে। ভারত কি ক্ষমতায় বসাবে? তারা কি কখনও ক্ষমতায় বসিয়েছে? ২০০১ সালে আমরা পরাজিত হয়েছি। তারা কি আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে?’।

মোদি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কী বলেছেন, এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী একটি কথাও বলেননি। তাকে কোনো কথা বলতে শুনি নাই।’

‘তবে ডিনারের কেউ কেউ আশা প্রকাশ করছেন আমরা আবারও ক্ষমতায় আসতে পারি। এটা তো কার্টেসি (ভদ্রতা)। এটা বলতেই পারেন।’

সফরের দ্বিতীয় দিন ২৩ এপ্রিল ভারতের শিল্প, বাণিজ্য ও অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী মন্ত্রী সুরেশ প্রভুর বাসভবনে রাতের খাবারের আমন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগের নেতাদের। এই আমন্ত্রণে ভারতের পাঁচ জন মন্ত্রী, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা, ভারতের কয়েকজন কূটনীতিক, বাংলাদেশে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে কয়েক জন, কলামিস্ট এবং বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন।

কাদের বলেন, ‘জনগণ না চাইলে আমরা জোর করে ক্ষমতায় থাকব? জোর করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ।’

সংবাদ সম্মেলনে মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, হাছান মাহমুদ, আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ফরিদুন্নাহার লাইলী, অসীম কুমার উকিল, দেলোয়ার হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.