ফৌজদারহাট নার্সিং কলেজে শিক্ষক সংকট ব্যাহত পাঠদান

0

দিলীপ তালুকদারঃ চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট নার্সিং কলেজটি চরম শিক্ষক সংকট ও বিশৃংখলার মধ্যে চলছে। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পোষ্ট বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং কলেজটি বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছে। সাথে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।

এ কলেজ থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩শ ছাত্র/ছাত্রী বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং এবং ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারী (৬ষ্ঠ সেমিষ্টার) ৩ বছর মেয়াদী কোর্স করে থাকে। কলেজটিতে শিক্ষক সংকটের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে ফি বছর। কলেজটিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৩২ জন শিক্ষকের পোষ্ট থাকলেও মাত্র ১০জন শিক্ষক দিয়েই চলছে।

এই ১০ জনের মধ্যে আবার ৫ জন বিভিন্ন ডেপুটেশনে। ২জন ঢাকায় ২জন চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে ও ১ জন ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের সুপারভাইজার হিসেবে যোগ দিয়েছেন।তারা ফৌজদারহাট নার্সিং কলেজের লেকচারার পোস্ট দখল করে চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে শিক্ষকতা করছেন এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকুরী করছেন।

বাকী ৫ জন শিক্ষক দিয়ে ৩শ ছাত্র/ছাত্রীর পাঠদান চলছে। এই ৫ জনের মধ্যে আবার ২/১ জন শিক্ষক ব্যস্ত থাকেন বিভিন্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম নিয়ে। বাকী পোষ্ট খালি দীর্ঘদিন। এই পোষ্টগুলোর ব্যাপারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন মহল ওয়াকিবহাল। নিয়োগের ব্যাপারে সরকার অথরিটি জানে। ছাত্র/ছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, তাদের ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস ছাড়াও কোন ক্লাসই ঠিক মতো হয়না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালে ৫ জন লেকচারার পদ দখল করে ৫ জনই চলে যায় ডেপুটেশনে। তাদের মধ্যে লেকচারার হ্যাপী বন্দনা বিশ্বাস ও সামসুন্নাহার ঢাকা জাতীয় নার্সিং উচ্চ শিক্ষা ও গবেষনা প্রতিষ্ঠান (ঘঅওঘঊজ) ঢাকাতে অন্য ২জন লেকচারার নাসিমা আক্তার ও মো. মোস্তফা কামাল সরকার থাইল্যান্ড থেকে মাষ্টার্স করে চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে চলে আসে এবং রতন কুমার ফটিকছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুপারভাইজার হিসেবে যোগ দেয় অথচ তাদের পোষ্টিং নার্সিং কলেজেই।।

বাকী ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ২/১ জন শিক্ষক ব্যস্ত থাকেন বিভিন্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম ও ছুটি নিয়ে। বলতে গেলে একটি হযবরল অবস্থা বিরাজ করছে ফৌজদারহাট নার্সিং কলেজে। অনেক ছাত্র/ছাত্রী এ প্রতিবেদককে অভিযোগ করে বলেন, আমাদেরকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

এখানের শিক্ষকগন অন্য কলেজে চলে যায়। এখানে রিচার্স ও কারিকুলামসহ বিভিন্ন বিষয় আছে এবং পিএইচডি করা শিক্ষক দ্বারা নিয়মানুযায়ী পাঠদান করা হলে ছাত্র/ছাত্রীরা উপকৃত হত বেশী।

অনেক ছাত্র/ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে আক্ষেপ করে বলেন, এ অবস্থা জানলে আমরা এ কলেজে ভর্তিই হতাম না। মিড ওয়াইফারী মেয়েদেও জন্য আলাদা কোন টিচার নেই। গত ১৪ মাস ধরে তাদেও স্টাইপিন বন্ধ। তাদেরও ঠিকমতো ক্লাস, ক্লিনিক্যাল প্রাকটিস নাই বলতে কিছুই নেই। বেসিক বিএসসি টিচার দিয়ে কোন রকমে চলছে কোর্স।

এ ব্যাপারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিলি চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, মিডওয়াইফারী মেয়েদের স্টাইপিন ৭/৮ মাস ধরে বন্ধ। এটা শুধু এখানে না সারাদেশেই বন্ধ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ কলেজের শিক্ষক অন্য কলেজে সংযুক্তি হিসেবে যেতে পারে। তিনি বলেন, আমি নিজেই নোয়াখালী থেকে এই কলেজে সংযুক্তি হয়ে আছি।

তিনি বলেন, এই ৭/৮জন শিক্ষক দিয়েই কষ্ট করে সব কার্যক্রম সামলাতে হচ্ছে। নতুন কোন নিয়োগ হচ্ছে না। নিয়োগের জন্য সরকার অথরীটি অবগত থাকলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। পরীক্ষার ২মাস পর রেজাল্ট প্রকাশের নিয়ম থাকলেও গত ডিসেম্বরের পরীক্ষার রেজাল্ট আজও প্রকাশ করা হয়নি। এব্যাপারে মিলি চৌধুরী বলেন, পরীক্ষা ও রেজাল্ট দেওয়া এগুলো ইউনিভার্সিটির কাজ। রেজাল্ট উনারাই দেবেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.