স্মার্ট কার্ড প্রকল্পের অর্থায়ন থেকে সরে এসেছে বিশ্বব্যাংক

0

অর্থ ও বাণিজ্য, সিটি নিউজ :: স্মার্ট কার্ড বিতরণের জন্য নেয়া ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিস’ শীর্ষক প্রকল্পের অর্থায়ন থেকে সরে এসেছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিশ্রুত অর্থায়নের মধ্যে ১৬০ কোটি টাকা প্রত্যাহার করে নিয়েছে সংস্থাটি।

এ জন্য সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে নতুন করে ৪০৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এই বরাদ্দের অর্থ নিতে নতুন করে প্রকল্পের সংশোধনীও করতে চায় ইসি। সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে এই প্রকল্প অঙ্গ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

ইসি সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংক চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে না। প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান রাখতে অর্থের প্রয়োজন। ফলে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। অর্থ মন্ত্রণালয় এ প্রকল্পে অর্থায়নে সম্মতিও দিয়েছে।

এই অবস্থায় নিজস্ব অর্থায়ন (জিওবি) থেকে ৪০৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ১৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ হ্রাস পাচ্ছে। সংশোধনীর ফলে এ প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে এক হাজার ৮৮৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যা মূল প্রকল্প ব্যয়ের চেয়ে ২৪৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা বেশি।

২০১১ সালে পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৩৭৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি ছিল মাত্র ১৪ কোটি আর প্রকল্প সহায়তা ধরা হয়েছিল এক হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা।

পরবর্তীতে এই প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এসময় দেশি অর্থায়ন থেকে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২৭১ কোটি টাকা। কিন্তু বিশ্বব্যাংক আর বরাদ্দ বাড়ায়নি।

এরপর প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনী আনা হয়। এসময় প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এবার প্রকল্প ব্যয়ের খাত সংশোধন করা হচ্ছে। এতে দেশীয় অর্থায়নে ব্যয় বাড়লেও বৈদেশিক সহায়তা থাকছে না।

এব্যাপারে বিশ্বব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতির কারণে এখান থেকে অর্থ প্রত্যাহর করে নেয়া হচ্ছে। এর আগে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন গতি বাড়াতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। তাতে কোনো কাজ হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই সরে এলো বিশ্বব্যাংক।

উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় আইডিইএ প্রকল্পের আওতায় ২০১১ সালের জুলাইয়ে ৯ কোটি ভোটারকে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। পরে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে স্মার্ট কার্ড তৈরি ও বিতরণে ফ্রান্সের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে ইসি। আর এতেই নাখোশ হয় বিশ্বব্যাংক।

ইসি সূত্র জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি ২০১৮ পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৩১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবির ১৯৬ কোটি ২০ লাখ টাকা, আর প্রকল্প সহায়তা থেকে ৮৩৫ কোটি টাকা।

ইসি বলছে, প্রকল্প অনুমোদনের পাঁচ বছরের মধ্যে এর আওতায় ৯০ মিলিয়ন স্মার্ড কার্ট পারসোনালাইজেশন, মুদ্রণ ও বিতরণের লক্ষ্য ধরা হয়। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ দশমিক শূন্য ৪ মিলিয়ন কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। আর এপ্রিল পর্যন্ত পার্সোনালাইজেশনকৃত কার্ডের সংখ্যা ৪২ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.