আনোয়ারায় পানিবন্দী মানুষের ঈদ-আনন্দ ম্লান

0

জাহেদুল হক,আনোয়ারা :: কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে আনোয়ারা উপকূলসহ কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

শঙ্খনদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় রায়পুর ও জুঁইদন্ডী ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ ছিঁড়ে জোয়ারের পানি উঠানামা করছে। এতে পানিবন্দী হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব ইউনিয়নের নিম্ন আয়ের দিনমজুর ও শ্রমিক পরিবারগুলো। আর এ কারণে তাদের পরিবারগুলোতে ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে পড়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়,উপকূল সুরক্ষায় নতুন করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। যার ফলে বাঁধে আশ্রিত পরিবারগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসব পরিবারের একদিকে নতুন করে ঘর বানানো আর অন্যদিকে নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাওয়া এ দুই নিয়েই যেন সংগ্রাম করে বেঁচে আছেন তারা। ভাঙ্গা-গড়ার মাঝেই ঠিকানা পাল্টাতে হয় উপকূলের বাঁধে আশ্রিত ছিন্নমূল এসব মানুষকে।

নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষত-বিক্ষত এসব মানুষ নতুন করে স্বপ্ন দেখার আগেই দুর্যোগ তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারগুলো যে মুহুর্তে ঈদের আনন্দ উপভোগ করবে সে মুহুর্তে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর প্রাণান্ত চেষ্টায় বিভোর। তাই ঈদ তাদের জীবনে খুশি বয়ে আনতে পারেনি।

চারদিকে ঈদের আনন্দ চললেও এসব পরিবারে চলছে কষ্ট আর নীরব হাহাকার। ঈদে ভালো খাবার তো দূরের কথা, ছেলেমেয়েদের নতুন পোশাক কিনে দিতে পারেননি কেউ। চরম অভাব অনটন নিয়েই চোখের পানি ভেসে যাচ্ছে তাদের ঈদের আনন্দ। এ অবস্থায় সরকারি কোনো সাহায্য পায়নি বলেও অভিযোগ করেন তারা।

জুঁইদন্ডীর খেটে খাওয়া আশ্রয়হীন খুইল্যা মিয়া বলেন,একদিকে নদী ভাঙ্গন অন্যদিকে জোয়ারের পানিতে নিঃস্ব হয়ে গেছি। নতুন করে ঘর তুলবার মতো সামর্থ্য নেই। ঈদে ছেলেমেয়েদের নতুন জামাকাপড় কিনে দিতে পারিনি।

পূর্ব গহিরা গ্রামের আবদুল আলীম বলেন,আমরা চারদিন ধরে পানিবন্দী। জোয়ারের পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ঈদে জামাকাপড় তো দূরের কথা,ঈদের দিন সেমাই কেনার টাকাও নেই।

জানা যায়,নির্ধারিত সময়ে বাঁধ নির্মাণ না করায় উপজেলার রায়পুর ও জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়া চাতরী,পরৈকোড়া,আনোয়ারা সদর,বটতলী ও বরুমচড়া ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা পানি মগ্ন হয়ে পড়েছে। এতে জেলে,কৃষক,দিনমজুরসহ এসব খেটে খাওয়া পরিবারগুলোর অনেকেই আশ্রয় হারিয়েছেন। কোনো রকমে ঝুঁপড়ি ঘরে নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করছেন তারা। এ কারণেই ঈদের খুশি তাদের জীবনে অন্যদিনের মতোই নীরবে কেটে যাচ্ছে।

জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোরশেদুর রহমান চৌধুরী খোকা জানান,আমার নিজের বাড়িতেও কোমর পানি। পাশাপাশি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। হতদরিদ্ররা খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। পানিবন্দী মানুষের ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.