সিটিনিউজবিডি : কোরবানি ঈদ সামনে রেখে স্টেরয়েড, প্রি-ডেক্সানল, ডেক্সামেথাসন, বেটামেথাসন, পেরিআ্যাকটিন, প্যারাডেক্সা ও ওরাডেক্সান নামে বিভিন্ন নিষিদ্ধ ওষুধ সেবনে গরু মোটাতাজাকরণের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন খামারিরা।
এতে অল্প দিনে ফুলে ফেঁপে উঠছে গরু।
তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এসব ট্যালয়েড হাঁপানিসহ মানবদেহের জটিল সব রোগের ওষুধ। এগুলো সেবনে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। আবার মাত্রাতিরিক্ত সেবন করানো হলে প্রভাব ভয়ঙ্কর।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বেশীর ভাগ খামারের এসব কাজগুলো করা হয়। এসব খামারের প্রায় সব ক’টিতেই কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ওষুধ সেবন ও ইনজেকশন প্রয়োগ করে গরু-মহিষ মোটাতাজা করা হচ্ছে।
এছাড়াও ঈদকে সামনে রেখে বর্ষার শুরু থেকে উপজেলার এক শ্রেণীর মওসুমি খামারি নিষিদ্ধ ওষুধ ও ইনজেকশন প্রয়োগ করে বাড়িতেই গরু মোটাতাজা করছেন।
এজন্য উপজেলা সদর, উপজেলা পশু হাসপাতালের সামনের ফার্মেসি কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাট-বাজার সবখানেই প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে গরু মোটাতাজাকরণের নিষিদ্ধ ওষুধ।
গরু মোটাতাজাকরণের কয়েক ধরনের পাউডার ফেরি করে গ্রামে গ্রামে গিয়েও বিক্রি করছেন অনেকে।
প্রতিবছর তিনি ঈদুল ফিতরের পর তুলনামূলক কম দামে প্রাপ্তবয়স্ক রোগা-চিকন গরু কিনেন। তারপর গরুকে স্টেরয়েড ও ডেক্সামেথাসন গ্রুপের ওষুধ খাওয়ান। আর এতেই সর্বোচ্চ দেড় মাসের মধ্যে গরু হয়ে ওঠে মোটাতাজা ও আকর্ষণীয়। দু’মাস আগে যে গরু ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় কেনেন ঈদের বাজারে সেসব গরু ৭০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় বিক্রি করা যায়। গরু মোটাতাজা করার ব্যবসা দারুণ লাভজনক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক খামারি জানান, গো-খাদ্যর দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন সারা বছর গরু পালন করে তেমন লাভ হয় না। তাই তার মতো অনেক খামারি ঈদের দিকে চেয়ে থাকেন। কোরবানি ঈদ ঘনিয়ে আসলেই শুরু হয় গরু মোটাতাজাকরণের প্রতিযোগিতা। এজন্য বিভিন্ন ইনজেকশন ও ওষুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি ইউরিয়া সারও খাওয়ানো হয় গরুকে। আর এতেই অল্প সময়ের মধ্যে ফুলে ফেঁপে ওঠে গরু।
ওই খামারি দাবি করেন, বিষয়টি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও জানেন। তারা এ নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা দেখান না। গরু মোটাতাজা করতে অনেক সময় তারাই বিভিন্ন ওষুধের নাম লিখে দেন। তাই বিষয়টিকে বৈধ বলেই ধরে নিয়েছেন খামারিরা।
চিকিৎসকরা জানান, নিষিদ্ধ এসব ওষুধ খাওয়ানোর ফলে গরুর শরীর থেকে পানি বের হতে পারে না। জমে থাকা পানি গরুর পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তখন গরু মোটাতাজা ও আকর্ষণীয় দেখায়। কিন্তু এর ফলে গরুর কিডনি ও যকৃত কার্যকারিতা হারায়। তাই সেসব গরু বেশি দিন বাঁচে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা এক কর্মকর্তা জানান, ওষুধ সেবনে মোটাতাজা করা গরুর মাংস খেলে মানুষের মারাত্বক স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। আশঙ্কা রয়েছে কয়েক ধরনের দূরারোগ্য ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ারও।
তাই সরকারকে এই দিকে দৃষ্টি রাখতে অনুরোধ জানিয়েন সাধারণ জনগণ