ভুল চিকিৎসায় শিশু রাইফার মৃত্যুতে প্রতিবাদ সমাবেশ

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও চিকিৎসকের অবহেলায় চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য, দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার রুবেল খানের আড়াই বছরের শিশু রাইফা খানের মৃত্যুর প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে সাংবাদিকরা।

আজ শনিবার ( ৩০ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামলের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌসের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল ভুইয়া, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি কলিম সরোয়ার,

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর সুর্য, সাবেক সভাপতি শাবান মাহমুদ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাকারিয়া কাজল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, যুগ্ম সম্পাদক তপন চক্রবর্তী, নির্বাহী সদস্য আসিফ সিরাজ, সিইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাঈনুদ্দীন দুলাল,

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি কাজী আবুল মনসুর, যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজের অর্থ সম্পাদক কাশেম শাহ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আহমেদ কুতুব, নির্বাহী সদস্য উত্তম সেনগুপ্ত ও ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হওয়া শিশু রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল খান প্রমুখ।

এতে সংহতি জানান, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, চট্টগ্রাম টিভি ক্যামরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এলামনাই এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এতে সংহতি জানান।

সাংবাদিক নেতারা বলেন, চট্টগ্রামের অধিকাংশ ডাক্তার সুনামের সঙ্গে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। কিন্তু কিছু ডাক্তার নামের কলংক এ পেশার অবমাননা করছেন। তারা চিকিৎসার নামে বাণিজ্য করছে। তারা সামান্য অসুস্থ মানুষকে অর্থের লোভে লাশ করে ফেলছে।

বিএমএ’কে বিক্রি করে চিকিৎসক নামধারী ডাক্তার ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী চট্টগ্রামে বদলী বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, চাঁদাবাজী করছে। ফয়সাল ইকবাল নিজে আওয়ামী লীগার পরিচয় দিলেও জামায়াতের হাসপাতালের পরিচালক।

তিনি মেডিকেলে তিন খুন মামলার আসামি পরিচয় দিয়ে গর্ববোধ করেন। ফয়সাল ইকবালকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেওয়া মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদেরও হুশিয়ার করে দেন চট্টগ্রামের সাংবাদিক নেতারা।

সাংবাদিক রুবেল খান বলেন, রাইফার ঠান্ডা লেগে গলা ব্যথা শুরু হয়। এতে খাওয়ার বন্ধ করে দেয় রাইফা। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ওই রাতে চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক দিলে রাইফা অস্বস্তিবোধ করে। পরে বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা শিশু বিশেষজ্ঞকে ডা. বিধান চন্দ্র রায়কে কল দেওয়ার পরামর্শ দেন।

হাসপাতালের পরামর্শে শিশু বিশেষজ্ঞ বিধান চন্দ্র রায়কে কল দেওয়া হয়। তিনি যে ওষুধ দিয়েছেন তার পরই রাইফার খিঁচুনি শুরু হয়। তখন ম্যাক্স হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক দেবাশীষকে জানালে তিনি ডা. বিধানের সাথে কথা বলে ‘সেডিল’ ইনজেকশন পুশ করেন। এরপরেই রাইফার মৃত্যু হয়। ডাক্তাররা ভুল চিকিৎসা ও অবহেলা করে আমার সন্তানকে হত্যা করেছে।

গত শুক্রবার রাতে এ মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রেস ক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বিএফইউজের নেতারা তাৎক্ষনিকভাবে রাতেই ম্যাক্স হাসপাতালে ছুটে যান। সেখান থেকে পুলিশ ঢেকে অভিযুক্ত ডাক্তারসহ ৩ জনকে থানায় সোপর্দ করে। চকবাজার থানার ওসির কক্ষে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়। চুক্তিতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গতকাল সাংবাদিক তনয়ার মৃত্যুর পর সাংবাদিকদের প্রতিবাদের মুখে চকবাজার থানা পুলিশ সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও নার্সসহ ৩ জনকে চকবাজার থানায় নিয়ে আসেন। এর অল্প কিছুক্ষণ পরই ওসির কক্ষে পাঞ্জাবি, পাজাবা পড়ে কোন সৌজন্যতা কিংবা অনুমতি না নিয়ে আরও চারজনকে নিয়ে প্রবেশ করেন বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ইকবাল। ওসির কক্ষে ঢুকেই বকতে থাকেন ওসিকে। কৈফিয়ত চাচ্চিলেন কেন, ডাক্তারকে কেন থানায় ধরে আনা হল। কোন ক্ষমতা বলে তিনি কাজটি করলেন। সাথে গলার জোর বাড়তে থাকে সাথে থাকা অন্যান্যদেরও।
তিনি হুংকার দেন একঘণ্টার মধ্যে সারা চট্টগ্রামের হাসপাতাল বন্ধ করে দেব। দেখি আপনি রোগি বাঁচান। কোন সাংবাদিক, কিসের সাংবাদিক। আমরা কোনো সাংবাদিকের চিকিৎসা করবনা, দেখি তারা কি করে। আপনি কোন এখতিয়ারে ডাক্তার ধরে এনেছেন তার জবাব দিন’। মিনিট কয়েক এভাবে চলছিল ফয়সালের গলাবাজি। সাংবাদিক ধরে কথা বলতেই সমস্বরে প্রতিবাদ সাংবাদিক নেতাদের। তারা বললেন, কোথায় ভুলের জন্য মাফ চাইবেন, তারউপর থানায় এসে উল্টো মাস্তানি। এটা কী মঘের মুল্লুক। এবার ওসি বললেন, কোন এখতিয়ারে থানায় ঢুকে আমার সাথে এভাবে ব্যবহার করলেন। কে শিখিয়েছে এই কার্টেসি। থানায় এসে তো এমন বেআইনী আচরণ আপনারা করতে পারেন না। এটা সভ্য মানুষের আচরণ হিসেবে মেনে নেয়া যায় না।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.