হালিশহরবাসীর আতঙ্কিত ও ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেইঃ মেয়র
সিটি নিউজ ডেস্কঃ চসিকের উদ্যোগে আগামী ১৪ জুলাই ২০১৮ শনিবার চট্টগ্রাম মহানগরীতে জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপলক্ষে আজ বুধবার ( ৪ জুলাই ) দুপরে কর্পোরেশনের কে বি আবদুচ ছাত্তার মিলনায়তনে এক অবহিতকরণ ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। চসিক শিক্ষা স্বাস্থ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব ও সচিব মোহাম্মদ আবুল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ডা. এ কে এম আজাদ জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন এর উপকারিতা সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্টে প্রেজেন্টেশন করেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আক্তার চৌধুরী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বাংলাদেশের শিশুদের ভিটামিন এ প্লাস অভাবজনিত সমস্যা দূরীকরণে এই কর্মসূচী সফলভাবে সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি বলেন, ভিটামিন এ ক্যাপসুল শুধুমাত্র অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকে শিশুদের রক্ষা করে তাই নয়, এটি ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল ও জটিলতা কমায়, সর্বোপরি শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস করে। মেয়র এই কর্মসূচী সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রচার প্রচারনার উপর জোর দিয়ে বলেন, নগরীর সকল মানুষ যাতে এই কর্মসূচী সম্পর্কে অবহিত হতে পারে, সে লক্ষ্যে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে পত্র প্রেরণ, ব্যাপক মাইকিং, বিজ্ঞপ্তি ও ক্যাবল নেটওয়ার্কে প্রচার সহ সবধরনের প্রচার প্রচারনার উদ্যোগ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
তিনি বস্তি এলাকায় বসবাসকারী কোন শিশু যাতে এই কর্মসূচী থেকে বাদ না পড়ে সেদিকে বিশেষ নজর দেয়ার আহবান জানান। সম্প্রতি নগরীর হালিশহর এলাকায় জন্ডিস, টাইফয়েড, ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় স্থানীয় জনগণের মাঝে আতঙ্কের কথা উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন, এতে আতঙ্কিত ও ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। এটা একটি পানিবাহিত রোগ।
পুকুর, ডোবা, খাল বা অনিরাপদ পানি পান করলে অথবা বাসি বা ময়লাযুক্ত খাবার খেলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে সচেতন থাকলেই এই রোগসমুহ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় । এ প্রসঙ্গে তিনি তাই কারো হঠাৎ জন্ডিস,টাইফয়েড, ডায়রিয়া হলে আতঙ্কিত না হয়ে সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হাসপাতালে বা স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার জন্য নগরবাসীকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, ১৪ জুলাই সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে স্থায়ী/অস্থায়ী ১২৮৮টি কেন্দ্রে ৬-১১ মাসের প্রায় ৮০ হাজার শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল, ১২-৫৯ মাসের ৪ লক্ষ ৩০ হাজার শিশুকে ১টি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। তবে সকল শিশুকে ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো উচিত।
জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উদযাপন কালে সকল শিশুকে অবশ্যই ভরাপেটে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো এবং নিকটস্থ টিকা কেন্দ্রে নিয়ে এসে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর জন্য সকল পিতামাতা ও অভিভাবকদের অনুরোধ জানান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।