রিকশাওয়ালাদের ‘সেবক বন্ধু’ বলে প্রাপ্য সম্মান দিনঃ জাবেদ নজরুল

0

দিলীপ তালুকদারঃ “রিকশাওয়ালা বলে ভাইটিকে আর নয় অসম্মান, সেবক বন্ধু বলে দিতে চাই প্রাপ্য সম্মান” এ শ্লোগানকে সামনে নিয়ে হালাল রুটি রুজির কারিগর রিকশাওয়ালা ভাইদের ‘সেবক বন্ধু’ বলে ডাকা অভ্যাস করি। এ আহবান জানালেন সাবেক কাউন্সিলর ও বঙ্গবন্ধু আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন প্রচার পরিদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ্ব জাবেদ নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারাজীবনের রাজনীতি ছিল গরিব, দুঃখী, মেহনতি মানুষ যাতে তাদের ন্যায্য সম্মান নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারেন। তারই আলোকে বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শের কর্মী হিসেবে নৈতিক বিবেচনায় ও জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির আওতায় ‘রিকশাওয়ালা’ ডাকার পরিবর্তে সেবক বন্ধু ডেকে প্রাপ্য সম্মান দিতে চাই।

আজ বুধবার (২৯ আগস্ট) সকালে নগরীর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব অডিটরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন প্রচার পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন জাবেদ নজরুল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ মাস যুদ্ধের পর পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিল। বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন-বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত শোষক আর শোষিত, আমি শোষিতের পক্ষে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) নিজে কায়িক পরিশ্রম করে মানবজাতিকে এই শিক্ষা দিয়েছেন যে কোন কর্মই ছোট নয়। হালাল আয়-রুজি করে দ্বীন ও দুই জাহানেই শান্তি পাওয়া যায়।

সেই মেহনতি মানুষের একটি বিশাল অংশ রুটি-রোজগারের জন্য রিকশা চালায়। বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যার সংখ্যা ২ কোটিরও বেশি। যারা প্রচণ্ড রোদ ও ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে পরিশ্রমক করে রুটি রোজগার করে হক হালাল জীবনযাপন করে এবং নিয়ম শৃঙ্খলা্ মেনে বাহনটি চালান। তারা রাস্তায় রিকশা চালানোর সময় নামজ আদায় ও রমজানে রোজা পালন করেন। এরা আমাদের ভাই।

রিকশা বাহনটি ও রিকশাওয়ালা উভয়েই মানুষের বিপদের পরম বন্ধু উল্লেখ করে জাবেদ নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘কায়িক শ্রমে টানা তিন চাকার বাহনটি পরিবেশ বান্ধব। এই বাহনটির চালক রিকশাওয়ালা বন্ধুটি আমাদের কারো পিতা, কারো ভাই, কারো সন্তান। তাই তাদেরকে সম্মান দেওয়া আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব নয় কি? এইটা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব মনে করে এই বিবেচনা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী ও বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে রিকশাওয়ালাকে সেবক বন্ধু হিসেবে নামকরণ করার মাধ্যমে সম্মানিত করার জোরালো প্রস্তাব করছি। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ঘোষণা চেয়ে আবেদন করা হবে।

তিনি বলেন, এই পেশার মধ্যে অনেক শিক্ষিত যুবকও রয়েছেন। তারা এই পেশায় কেন জিজ্ঞেস করলে বেকার জীবন ও হাত না পেতে রিকশা চালিয়ে রুটি রোজগার করে সৎ জীবন যাপন করা অনেক উত্তম। যাদেরকে অনেকটা অবজ্ঞা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে ‘ঐ রিকশাওয়ালা’ ‘ঐ খালি’ বা বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অসম্মানের সাথে ডাকা হয়। এতে তাদেরও অনেক কষ্ট হয়, কিন্তু তারা তা বলতে পারেন। শুধু আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর মনে মনে বলতে থাকে বন্ধু আমরাও মানুষ, তোমাদের ভাই, পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য এই হালাল পেশা বেছে নিয়েছি। এতে বুঝা যায় যে, অবজ্ঞা করার কারণে তাদের মনে কত কষ্ট।

তিনি বলেন, আসুন সবাই মিলে এই ভাইটিকে সম্মানিত করি। এই উপলদ্ধি থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে নৈতিক বিবেচনায় “জাতীয় শোক দিবস” এর কর্মসূচীর আওতায় “রিকশাওয়ালা” ডাকার পরিবর্তে সেবক বন্ধু হিসেবে নামকরণের মাধ্যমে প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণার মাধ্যমে ১৬ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে জন সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সম্মানিত সাংবাদিক বন্ধুদের সামনে হাজির হয়েছি।

তিনি বলেন,আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম পলোগ্রাউন্ড মাঠে ‘সেবক বন্ধু’ নামটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারের উদ্দেশ্যে সেবক বন্ধুদের উপস্থিতিতে এক সভা ও লোক সংগীত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠান সেবক বন্ধুদের কাছে লটারীর মাধ্যমে ২০ টি নতুন রিকশা উপহার হিসেবে দেয়া হবে। একই দিন তাদের মেডিক্যাল টিম বিনা মূল্যে ডায়াবেটিকস্ চেকআপ, ব্লাড পেসার চেকআপ, রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা ব্যবস্থার কথাও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, এস এম জাফর, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল রতিফ, মু্ক্তিযোদ্ধা খায়রুল বশর, মো. আবছার উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম,মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন মিটু,সাইদুল ইসলাম প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.