চন্দনাইশ যুবলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ
নিজস্ব সংবাদদাতা, চন্দনাইশ: চন্দনাইশ উপজেলা যুবলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলের দাবিতে চন্দনাইশের বিভিন্ন ইউনিয়ন, চন্দনাইশ ও দোহাজারী পৌরসভা যুবলীগের তৃণমুল নেতাকর্মীদের এক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ফলে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির মধ্যে দ্বিধা বিভক্তির প্রকাশ্যে রূপ নেয়।
শুক্রবার ১৪ সেপ্টেম্বর বিকালে উপজেলা যুবলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলের দাবিতে উপজেলা যুবলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে দোহাজারী হাই স্কুল মাঠে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সহ-সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য গিয়াস উদ্দিন সুজন, বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য জাহেদুর রহমান সোহেল, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক বেলাল হোসেন মিঠু ও কার্যকরী সদস্য হাসান মাহমুদ।
তৃণমুল নেতাকর্মীদের দাবির প্রতি সংহতি ও সমর্থন প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক বাবর আলী ইনু, দোহাজারী পৌরসভা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবদুল শুক্কুর ও সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন মুরাদ, আলী’গ নেতা শাখাওয়াত হোসেন শিবলী।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সদস্য টিটু বড়ুয়া, শহীদ আলী, আব্দুল হাকিম রাজু, আজাদ হোসেন টিপু, জহির উদ্দিন বাবুল, কাজী খোরশেদুল আলম, চন্দনাইশ পৌর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক লোকমান হাকিম, নুরুল ইসলাম রানা, আসকর খান বাবু, এরশাদুর রহমান সুমন, ওবাইদুল করিম টুটুল, নাজিম উদ্দিন, শওকত খান, প্রজন্ম লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, যুবলীগ নেতা শওকত খান, রফিক উদ্দিন আহমদ, আব্দুর রহিম, হাজী জসিম উদ্দিন, হেলাল মাহমুদ, ইকবাল করিম খোকা, মোঃ ফিরোজ, ফরিদুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, মুজিবুর রহমান, বন্ধন বড়ুয়া, আবুল কালাম, খোরশেদুল আলম, জামশেদুর রহমান, পুলক বড়ুয়া, ছাত্রলীগ নেতা ইয়াছিন আরাফাত শ্রাবণ, ইরফান আহমেদ জাসু, কাজী আরমান, মো. হোসেন, মো. আলমগীর, মাহফুজুর রহমান, মো. ইলিয়াছ, মো. মামুন প্রমুখ। সমাবেশে কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য গিয়াস উদ্দিন সুজন বলেন, আগামী নির্বাচনে যুবলীগের নেতাকর্মীদের জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত হাতিয়ার ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করতে হবে। যুবলীগ একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন। এখানে চাঁদাবাজি ও স্বেচ্ছাচারিতার স্থান নেই।
সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মেনে সংগঠন পরিচালিত হবে। চন্দনাইশ যুবলীগের তিন মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন হয়েছিল সম্মেলন সম্পন্ন করার জন্য। কিন্তু তা না করে তারা আড়াই বছর অতিবাহিত করেছে নিজেদের আখের গোছাতে। কোন ইউনিয়নে এবং পৌরসভায় সম্মেলন না করে হঠাৎ গত কয়েকদিন আগে সংবাদ পত্রে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা কমিটি প্রকাশ করেছে। এক্ষেত্রে গঠনতন্ত্রের বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা করা হয়নি। তৃণমুল নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করে হাইব্রিড, বিএনপি ও এলডিপি নেতাদের সন্তানদের কাছে পদ বিক্রি করা হয়েছে।
যেখানে উপজেলা যুবলীগ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২ বছর আগে, তারা কীভাবে ড্রইংরুমে বসে সংবাদপত্রে কমিটি ঘোষণা করে। তিনি অবিলম্বে ঘোষিত কমিটি বাতিল করতে জেলা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সমাবেশে উপজেলা যুবলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ও সম্প্রতি ঘোষিত ইউনিয়ন ও পৌরসভা কমিটি বাতিলের দাবিতে এক সপ্তাহের আলটিমেটাম ঘোষণা করেন।
দক্ষিণ জেলা যুবলীগ নেতা বেলাল হোসেন মিঠু। আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ উপজেলা যুবলীগ কমিটি বাতিল করতে হবে এবং সদ্য ঘোষিত ইউনিয়ন ও পৌরসভা কমিটি বাতিল করতে হবে। অন্যথায় আগামী ২২ সেপ্টেম্বর হতে বিভিন্ন ইউনিয়নে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। তারপরও দাবি আদায় না হলে আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে চন্দনাইশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত তৃণমুল যুবলীগ নেতাকর্মীদের সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে এবং যুবলীগের মাননীয় চেয়ারম্যান বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
তৃণমূলের নেতাকর্মীরা যুবলীগের এই অপ্রত্যাশিত সংকট নিরসনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগ সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তা না হলে আগামী নির্বাচনে যুবলীগের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দোহাজারী এলাকা প্রদক্ষিণ করে কমিটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দেয়।