জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের মর্যাদা বাড়াতে কাজ করতে হবে: শেখ হাসিনা

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের মর্যাদা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা মিশন সংস্কারের বিষয়টিকে ব্যাপক গুরুত্ব দেয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের মর্যাদা বাড়াতে কাজ করতে হবে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের অ্যাকশন ফর পিসকিপিং (এফোরপি) উদ্যোগের বিষয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে জাতিসংঘ সদর দফতরের ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে জাতিসংঘ মহাসচিবও বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তিরক্ষী বাহিনীকে এমন কিছু স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে, যেখানে আসলে রক্ষা করার মতো কোনও শান্তি নেই। তারা অরাষ্ট্রীয় পক্ষগুলো থেকে ক্রমবর্ধমান ও  রীতিবিরুদ্ধ হুমকির মুখে রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রায় সময়ই জাতিসংঘ মিশনগুলোকে আলাদা মানের বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি কাজ করতে হয়। আর এটা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানকে কঠিন ও বিপজ্জনক করে তুলছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শান্তিরক্ষীদের পরিষ্কার নির্দেশনা দিতে হবে, আর এই নির্দেশনা পালন করার জন্য পর্যাপ্তভাবে স্বীকৃত ও অস্ত্রে সজ্জিত করতে হবে।’  শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মোতায়েনের ক্ষেত্রে তাদের প্রতিশ্রুতি ও অবদানকে মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনায় নিতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা অবশ্যই উন্নত করতে হবে। আমরা আশা করি, এফোরপি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীকে উদ্দেশ্য পূরণের জন্য উপযুক্ত করে তুলতে সহায়তা করবে।’
প্রধানমন্ত্রী অংশগ্রহণমূলক শান্তিরক্ষার প্রতিশ্রুতির ঘোষণাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল হিসেবে অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত দায়িত্বের বিষয়টি তুলে ধরেছে। এতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে রাজনীতির প্রাধান্যের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের বাঁচানো প্রতিটি জীবনের মূল্য হলো এর পেছনে করা বিনিয়োগ।’ তিনি বলেন, ‘খরচ ও লোকবল কমানো হলে বাস্তবে এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধেক্ষেত্রে থাকা পক্ষগুলোর উদ্বেগের বিষয়গুলো অবশ্যই শুনতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘যেসব দেশ সেনা ও পুলিশ সরবরাহ করে থাকে, নিরাপত্তা পরিষদ ও মন্ত্রীদের তাদের ওপর বিশ্বাস করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ঘোষণার অর্থপূর্ণ ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। আর এর প্রতিশ্রুতিগুলোও ঘোষণা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ তার নিজের অংশের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শান্তিরক্ষা বাংলাদেশের বিদেশ নীতিতে অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। তিনি বলেন,  ‘শান্তিরক্ষায় জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিতে আমরা কখনও ব্যর্থ হইনি। এ বছর আমরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের অবদানের ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন করবো। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় নিহত হয়েছেন। তারপরও আমাদের সেবার মানসিকতায় ধাক্কা লাগেনি। এখন আমরা সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে আমাদের শান্তিরক্ষীদের মোতায়েন করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ভালোভাবে ও অগ্রিম প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। তারা যেকোনও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে খুব দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে। আর তারা যেসব মানুষের জন্য সেবা দেয়, তাদের মন জয় করার জন্য কাজ করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা বেসামরিক মানুষদের রক্ষার পাশাপাশি নিজেদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম। সবশেষ আমরা মালিতে আমাদের সেনাদের জন্য মাইন প্রতিরোধী যানবাহন দিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি শান্তিরক্ষী মিশনে নারী সদস্যদের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে ব্যক্তিগত আগ্রহ দেখিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রথম নারী হেলিকপ্টার পাইলটকে কঙ্গোতে মোতায়েন করেছি। এটা আমাদের জন্য একটি মাইলফলক।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সদর দফতর ও মাঠ পর্যায়ে আরও বেশি জ্যেষ্ঠ নেতৃত্ব যোগান দিতে পারলে বাংলাদেশ খুশি হবে।’
সূত্র: বাসস

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.