আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: মিয়ানমারের ‘ডি-ফ্যাক্টো’ নেত্রী অং সান সু চি গৃহবন্দি থাকার সময় তার পক্ষে মালয়েশিয়া জোরালো প্রচারণা চালিয়েছে জানিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, সু চির প্রতি তার দেশের আর কোনও সমর্থন নেই।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় ব্যর্থ হওয়ার কারণে মালয়েশিয়া এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বের প্রবীন এই প্রধানমন্ত্রী। দ্য স্টার অনলাইন।
তুরস্কের টিআরটি ওয়ার্ল্ড নিউজ চ্যানেলকে সম্প্রতি এক সাক্ষাতকার দেন মাহাথির। ঘিদা ফাখরিকে দেওয়া সেই সাক্ষাতকারে মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি মোকাবেলার ক্ষেত্রে সু চি একজন ‘পরিবর্তিত ব্যক্তি’।
‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান নিয়ে সু চি কিছু বলতে চাননি। তার ভূমিকা হতাশাব্যঞ্জক। তাই আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা (মালয়েশিয়া) তাকে আর সমর্থন করি না।’
সু চির ওপর আস্থা হারানোর কথাও স্বীকার করেন মালয়েশিয়ার ৯৩ বছর বয়সী এই প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সু চি যখন গৃহবন্দী ছিলেন, তখন তার মুক্তির ব্যাপারে মালয়েশিয়াও প্রচারণা চালিয়েছিল।’
‘রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণের ব্যাপারে বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। এমনকি আমাদের দেশে আমরা অনেক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি।’
২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণেও মাহাথির রোহিঙ্গাদের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
মাহাথির বলেন, রোহিঙ্গা উস্যুতে সম্প্রতি সু চিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন কিন্তু সেটির কোনও জবাব না পাওয়ায় তিনি ‘খুব হতাশ’ বলেও জানান আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের এক নিরাপত্তা চৌকিতে ‘আরসা’ নামের একটি কথিত সংগঠনের হামলার ধুয়ো তুলে দেশটির নিপীড়িত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে অভিযান শুরু করে মিয়ানমার। নির্বিচারে ধর্ষণ, হত্যা, পুড়িয়ে মারা থেকে প্রাণে বাঁচতে আট লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তাদের ঠাঁই হয় কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে।
জাতিসংঘের একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন রোহিঙ্গাদের ধর্ষণ, গণধর্ষণ ও গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়েই মিয়ানমার অভিযান চালায় বলে অভিযোগ করে আসছে। আর রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমালোচনা করতে ব্যর্থ হওয়ায় সু চির নিন্দা জানিয়ে আসছে বিশ্ব নেতৃত্ব। এমনকি তাকে হারাতে হয়েছে বেশ কয়েকটি সম্মানজনক ডিগ্রিও।