জামেয়ার ছাত্রকে হত্যার উদ্দেশ্য হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
সিটি নিউজ,চট্টগ্রাম : জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসার ফাযিল ২য় বর্ষের ছাত্র ও সেনাকর্মি মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত কে হত্যার উদ্দেশ্য হামলার প্রতিবাদে আজ ৬ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় জামেয়ার সাধারণ শিক্ষার্থীরা মুরাদপুর চত্বরে বিশাল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। জামেয়ার ছাত্র সংগঠন যুল ইয়ামিন ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর সভাপতি ছাত্রনেতা মুহাম্মদ মাছুমুর রশিদ কাদেরী।
বিশাল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব স উ ম আবদুস সামাদ। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব আ্যডভোকেট মোছাহেব উদ্দীন বখতিয়ার।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আন্তর্জাতিক সচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন আজাহারী, ইসলামী ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর সভাপতি মুহাম্মদ নঈম উল ইসলাম, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মাস্টার আবুল হোছাইন, উত্তর জেলার অর্থ সম্পাদক এইচএম মঞ্জুরুল আনোয়ার, মাওলানা সরওয়ার উদ্দীন চৌধুরী ইসলামী যুবসেনার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুহাম্মদ আবু আজম, রাবেত্বায়ে উলামায়ে আহলে সুন্নাত নেতা মাওলানা মুখতার আহমদ রজভী।
প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা এইচ এম শহীদুল্লাহ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে স উ ম আবদুস সামাদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় রাউজানের কাগতিয়া মাদরাসা ছিল রাজাকারের ক্যাম্প।
মুক্তিযুদ্ধের সময় কাগতিয়ার কথিত পীরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মুক্তিযোদ্ধা মুছাসহ অসংখ্যা মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী খালে ফেলা দেয়া হত। এ কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী রাজাকারের বিচার না হওয়ার কারণে তার অনুসারীরা সময়ে সময়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে শান্ত জনপদকে অশান্ত করার পাঁয়তারা করছে। তিনি অবিলম্বে কাগতিয়ার কথিত পীরের নির্দেশে সংঘটিত সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিচারের দাবি জানান। বিশেষ অতিথি মোছাহেব উদ্দীন বখতিয়ার বলেন, তরিকতে মূল দর্শনই হলো শান্তির বাণী প্রচার ও প্রতিষ্ঠা।
হক্কানী পীর মাশায়েখরা তরিক্বত পরিচালনা করেন আধ্যাত্মিক ও রুহানী শক্তির মাধ্যমে। আধ্যাত্মিক ও রুহানী শক্তিহীন তরিকতের কথিত পীররা সন্ত্রাসী ও পেটুয়া বাহিনী দিয়ে জোর জবরদস্তির মাধ্যমে তরিক্বতের ভক্ত বানাতে চায়। কাগতিয়ার ভন্ডপীর মুনিরুল্লাহও একই কায়দায় কাজ করছে। তার প্রত্যক্ষ নির্দেশেই সুন্নীজামাতের আলেম ওলামা ও সুন্নীজনতাকে অতীতেও বহুবার হামলা করা হয়েছে।
২০১০ সালে মাওলানা শফিউল আলম নিজামী, জামেয়ার শিক্ষক আল্লামা গোলাম মোস্তাফা নূরুন্নবী, মাওলানা মহিউদ্দিন রেজভী, মাওলানা এনাম রেযার উপর হামলা ও সেনাকর্মি নঈম উদ্দীনকেও তার অনুসারীরা শহীদ করেছে। প্রধান বক্তা এইচ এম শহীদুল্লাহ বলেন, আদর্শের কাছে পরাজিত হয়েই তারা পেশীশক্তি ও অস্ত্রের জোরে ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্ঠা করছে। কিন্তু হাজার হাজার ছাত্ররা এ জালিমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে তার আশা পূরণ হতে দিবে না। সেনাকর্মী ইয়াসিনের ওপর বর্বর হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তিনি ছাত্রদের রাজপথে সোচ্চার থাকার আহবান জানান।
হাফেজ মুহাম্মদ আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, চবি ছাত্রসেনার সভাপতি মুহাম্মদ ইদ্রিচ, মাদরাসা ছাত্রফ্রন্টের মহাসচিব মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, উত্তর জেলা ছাত্রসেনার সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ রানা, আবদুল্লাহ আল রোমান, রেজাউল করিম ইয়াছিন, মুহাম্মদ আবদুল করিম, মুহাম্মদ ওসমান গণী, মুহাম্মদ রবিউল ইসলাম, মুহাম্মদ আসাদ উল্লাহ, মুহাম্মদ মিনহাজুল আবেদীন, হাফেজ তামজিদুল ইসলাম খান, আবরার উল্লাহ সমরকন্ধী,নূর রায়হান চৌধুরী, মুহাম্মদ জামিল প্রমুখ। প্রতিবাদ সভা শেষে ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পাঁচলাইশ থানায় গেলে থানার ওসি বলেন, এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় বাদীর আবেদনের ভিত্তিতে আমরা মামলা রুজু করেছি। যার নম্বর পাঁচলাইশ মডেল থানার মামলা নং – ৫(১১)১৮।