দুই পোষাক ডাকাত আটক করেছে পুলিশ

0

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পেশাদার তৈরী পোষাক ডাকাত মো. কাসেম (৪৩) ও মো. রাশেদ (২৮)। দীর্ঘদিন ধরে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সংশ্লিষ্ট চালকদের সহযোগীতায় রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস পণ্য চুরি (ডাকাতি) করে আসছিল। অবশেষে সাভারের জে. কে. নীট কম্পোজিটের পোষাক ডাকাতি করে ধরা পড়লেন পুলিশের হাতে।

জানা গেছে, গত ১১ নভেম্বর জে.কে.নীট কম্পোজিট কোম্পানীর রপ্তানীর জন্য ২৪,৬৪০ সেট তৈরী পোষাক রপ্তানীর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজে লোড করার জন্য কাভার্ড ভ্যান (ঢাকা মেট্টো-ট-১১-৪৭৫৮) মাধ্যমে প্রেরণ করেন। ড্রাইভার টিপু সুলতান চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন চিনকি আস্তানা নামক এলাকায় এসে তাদের আর এক সহযোগী জনৈক আনোয়ারুল আজীম প্রকাশ বাবুর (৪৫) বাড়ীতে ৮৮০ কার্টুন তৈরী পোষাক নিয়ে উপস্থিত হয়।

পরে কাসেম ও রাশেদসহ কাভার্ড ভ্যান থেকে মোট ৪৫৬৮সেট তৈরি পোশাক চুরি করে। চোরাইকৃত সম্পূর্ন মালামাল অপর সহযোগী চট্টগ্রামে শহরে অবস্থিত জামাল প্রঃ চশমা জামাল (পলাতক) এর কাছে পাঠিয়ে দেয়। পরে জামাল সম্পূর্ন মালামাল ঢাকায় পাঠিয়ে দেয় এবং ঢাকায় অবস্থিত তাদের সহযোগীরা কিছু মালামাল চট্টগ্রামে বিক্রয়ের জন্য প্রেরন করে।

পরবর্তীতে ড্রাইভার বাকী মালামালগুলো সীতাকুন্ড থানাধীন বিএম গেইট নামীয় স্থানে আনলোড করে ট্রাকটি মালিকের অগোচরে চট্টগ্রাম বন্দরস্থ নিমতলা ট্রাক টার্মিনালে ফেলে পালিয়ে যায়। মালামালগুলো জাহাজে বোঝাই করার সময় পরিমানে কম বলে সন্দেহ হওয়াতে তা পুনরায় গননা করা হয়। এতে মালামাল কম পেয়ে ড্রাইভারকে খোঁজাখুজি করলেও সে পালিয়ে যায়।

এতে যথাসময়ে মালামালগুলো রপ্তানী করতে না পারায় জে. কে. নীট কম্পোজিট বিপুল পরিমান আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়। কোম্পানীর পক্ষে হাবিবুর রহমান গতকাল ১৭ নভেম্বর বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মহানগর গোয়েন্দা (বন্দর) বিভাগকে তদন্তভার দেওয়া হয়।

মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশানার (ডিবি-পশ্চিম) জনাব মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম এর নেতৃত্বে মামলাটির তদন্তে নামে। পুলিশ কাল শনিবার রাতেই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে উক্ত কাসেম ও রাশেদকে গ্রেফতার করে। তাদের স্বীকারোক্তিতে মালামালগুলো উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ জানায়।

আসামী কাসেম শরিয়তপুর জেলার থিরোপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানার শাপলা আবাসিক এলাকার এ/পি-রোকেয়া ভিলার বাসিন্দা। রাশেদ নগরীর ডবল মুরিং থানার হাজিপাড়া এলাকার মো. আব্দুল লতিফের ছেলে। অন্য আসামী কাভার্ড ভ্যান চালক টিপু সুলতান পলাতক। টিপু ফটিকছড়ি উপজেলার সিকদারখীল গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে।

গ্রেফতারকৃত আসামী কাশেমের স্বীকারোক্তি মতে উক্ত মালামাল জব্দ করা হয় বলে জানান পুলিশ। পুলিশ জানায়, এরা সক্রিয় চোর দলের সদস্য এবং তাদের চোরাই দলে প্রায় ২০/৩০ জন সদস্য রয়েছে যারা দীর্ঘদিন যাবৎ সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে রপ্তানী যোগ্য পণ্যের গাড়ি হতে কৌশলে বিভিন্ন পণ্য চুরি করে থাকে এবং ইতোপূর্বে প্রায় শতাধিকবার বিদেশি রপ্তানীযোগ্য পন্য চুরি করেছে। উক্ত চোরাই দলের তৎপরতার কারণে বিদেশি ক্রেতারা অনেক ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে এবং এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.