অভিযানে বিমান ছিনতাইকারী নিহত তদন্ত কমিটি গঠন

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের একটি বিমান  ছিনতাইচেষ্টাকারী মাহাদী (২৬) কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছে। এদিকে বিমান ছিনতাই এর ব্যার্থ চেষ্টার ঘটনায় ৩সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজ রবিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে রাত ৮টার দিকে আইএসপিআর জানায়, অভিযানের পর ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ওই ব্যক্তিকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিমানে ১৪২ জন যাত্রী ৩ জন কেবিন ক্রু ও ২ জন ককপিট ক্রু ছিল। তারা সবাই নিরাপদে বের হয়ে এসেছেন। রাত ৮টা দিকে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ৭টা ১৭ মিনিটে অভিযান পরিচালনা করে। এটি শেষ হয় ৭টা ২৫ মিনিটে। এ সময় ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়।

পরে তাৎক্ষনিক এক ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আটক আহত ছিনতাইকারী সুস্থ হলে তদন্ত করে বিস্তারিত জানানো হবে। সে সময় জানানো হয় বিমানটির সব যাত্রী ও ক্রু সুস্থ রয়েছে। এদিন রাত পৌনে ৮টার দিকে সেনা স্পেশাল ফোর্সের অভিযানে সন্দেহভাজন এক ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পরিচালক।

অভিযান সমাপ্ত হওয়ার পর সিভিল অ্যাভিয়েশন কার্যালয়ে এ বিষয়ে ব্রিফিং করে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য গণমাধ্যমকে জানান সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. নাইম হাসান। এর আগে বিকালে দুবাইয়ের উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করে।

উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে বিমানটি। চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের জরুরি অবতরণ করা হয়।

জরুরি অবতরণের পরপরই রানওয়েতে বিমানটি ঘিরে ফেলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ। পরে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হলেও একজন যাত্রী এবং একজন ক্রুকে ওই ছিনতাইকারী জিম্মি করে রাখে। পরে বিমানবন্দরে যায় সোয়াত টিম ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসও।

ঘটনাস্থল থেকে একাধিক সূত্র জানায়, বিমানের বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা। কিন্তু উড্ডয়নের পরপরই এ ঘটনা ঘটে। এরপরই দ্রুত ফ্লাইটের সব যাত্রীকে নামিয়ে দেয়া হয়। বিমানটি রানওয়েতে অবস্থান করে এবং সেটি ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র জানায়, যাত্রীদের নামিয়ে আনলেও এক যাত্রী ও ক্রু প্লেনের ভেতরে ছিলেন।

সূত্র জানায়, বিমানটি রোববার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে জরুরি অবতরণ করা হয়। তাৎক্ষণিক সেখানে বিমান ওঠানামা বন্ধ করা হয় বলে বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ বিমানের জরুরি অবতরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সূত্র জানায়, ‘সন্দেভাজন’ ওই যাত্রীর আবদার ছিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দিলে তিনি ধরা দেবেন। পরে তার কথামতো সাড়া দিয়ে কৌশলে তাকে আটক করে কমান্ডো টিম। ধারণা করা হচ্ছে, ওই যাত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন। বর্তমানে বোয়িং ৭৩৭- ৮০০ মডেলের বিজি-১৪৭ বিমানটি রানওয়েতে আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিমানটি ঘিরে রেখেছে। বিমানবন্দরে সব ধরনের ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রয়েছে।

তদন্ত কমিটি গঠনঃ

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের প্লেন ময়ূরপঙ্খী ছিনতাই চেষ্টার ঘটনার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার রাতে এ তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।

মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জনেন্দ্র নাথ সরকারের নেতৃত্বে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য তিনজন। এর আগে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিমানের বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে পাইলট তা জরুরি অবতরণ করান। ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম থেকে দুবাই যাওয়ার কথা। কিন্তু উড্ডয়নের পরপরই ছিনতাই চেষ্টার ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে দ্রুতই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আর রানওয়েতে অবস্থান করা প্লেনটি ঘিরে রাখে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনা কমান্ডোর সদস্যরা। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছেন ছিনতাই চেষ্টাকারী।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.