লড়াই করেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবেঃ মান্না
সিটি নিউজ ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নিজেদের ভুলের কথা স্বীকার করে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। তবে লড়াইয়ে রাজনৈতিকভাবে জিতেছি বলে দাবি করেন তিনি।
আজ বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত ‘৩০ ডিসেম্বর এবং অতঃপর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তৃতায় মান্না এই ভুল স্বীকার করে ব্যাখ্যা দেন।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি বলে উল্লেখ করে মান্না বলেন, এতে আমাদের অবশ্যই কিছু আচরণ এবং উচ্চারণে ভুল ছিল। আমরা শীর্ষ নেতারা কেন মনে করলাম সামরিক বাহিনী মাঠে নামলে সব ঠিক হয়ে যাবে। সমগ্র জনগোষ্ঠীকে ভোটের জন্য তৈরি করতে বলা হয়েছিল কিন্তু প্রতিরোধ করার জন্য বলা হয়নি।
মান্না বলেন, যদি শুধু আওয়ামী লীগ আর পুলিশ নির্বাচন করতে নামতো বিজিবি চুপচাপ থাকত, সেনাবাহিনী না থাকত আন্দোলনের আরেকটা ঢেউ তৈরি হতো, আর এই ঢেউ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তো।
‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল’ এটা নিয়ে বিএনপির তৃণমূল নেতারা ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে যে বক্তব্য দেন তার ব্যাখ্যা দিয়ে মান্না বলেন, আমরা যে ঐক্য করেছি এই ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি এক নম্বরে আছে। আজকে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই খালেদা জিয়াকে যদি মুক্ত করতে হয় তাহলে লড়াই করেই মুক্ত করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সেই লড়াই কি আমরা করতে পেরেছি। সেই লড়াই কি কেবল খালেদা জিয়ার মুক্তির লড়াই? সেই লড়াই তো বাংলাদেশের মুক্তির লড়াই, গণতন্ত্রের মুক্তির লড়াই, এখন পর্যন্ত যে সকল নেতাকর্মী জেলে আছেন তাদের মুক্তির লড়াই।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কেবল একটি অপরাধের কারণে কারাগারে আছেন দাবি করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেছেন, সেই অপরাধটি হলো তিনি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, বিগত ১০ বছরে বর্তমান স্বৈরাচারী শাসন আমলে কত হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে। তাদের এ জীবন দেওয়ার পেছনে লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আজকে আমাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া) মিথ্যা রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে। তার কী অপরাধ? তার একটিমাত্র অপরাধ- তিনি এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে ধৈর্যধারণ করতে হবে। মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। সরকারের বিরুদ্ধে ঠান্ডা মাথায় বাস্তবধর্মী আন্দোলন করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকের শোষক শাসক সমাজ বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, সেখানে কারও জীবন নিরাপদ নয়। কারও জীবনের কোনো স্বাধীনতা নেই।
মঈন খান বলেন, এখানে কথা বলার স্বাধীনতা নেই। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে, তাদের মেজাজ খারাপ হয়। হুমকি-ধমকি দেয়। মামলা-হামলার কথা না-ই বললাম।
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গির আলমের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বগুড়া থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের বিজয়ী প্রার্থী আলহাজ্ব মো. মোশাররফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।