ওবায়দুল কাদেরের কিডনিতে সমস্যা,বাইপাস শিগগিরই

0

সিটি নিউজ : সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। সোমবার হাসপাতালে পৌঁছানোর পরপরই সেখানকার চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা শুরু হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।

মঙ্গলবার সকালে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসা শুরু করেছেন সেখানকার চিকিৎসকরা। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। তার (ওবায়দুল কাদের) শরীরে কিছু ইনফেকশন ও কিডনির সমস্যা পাওয়া গেছে। তবে ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন নেই।’

তিনি বলেন, ‘তবে এসব রোগ জটিল পর্যায়ে নেই। কিডনির ডায়ালাইসিস করা লাগবে না। ইনফেকশনও গুরুতর নয়। সার্বিকভাবে তার শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। এখন অনেকটাই স্থিতিশীল আছেন এই রাজনীতিক

এদিকে চিকিৎসকরা তার ওপেন হার্ট সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অপারেশন করা হবে। মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছে সেখানকার চিকিৎসক ডা. ফিলিপ কোহ এর নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ড। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে থাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক আবু নাসের রিজভী মঙ্গলবার জানিয়েছেন এই তথ্য।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসার হালনাগাদ বিষয়াদি আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে হাসপাতালে ব্রিফ করে ডা. ফিলিপ কোহ এর নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ড। ডা. ফিলিপের বক্তব্যের আলোকে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসার সর্বশেষ পরিস্থিতি গণমাধ্যমে জানিয়েছেন ডা. আবু নাসার রিজভী। আগামীকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ডা. ফিলিপ আবার ব্রিফ করবেন বলেও জানানো হয়।

আবু নাসের রিজভী বলেন, গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় ওবায়দুল কাদেরকে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে আনা হয়। জরুরি ভিত্তিতে একটি মেডিকেল বোর্ড করা হয়। সেখানে ছিলেন কার্ডওলজিস্ট ডা. ফিলিপ কোহ, ডা. শ্রীবাস্তব কুমার, অশোক কুমার, কিডনি বিশেষজ্ঞ ডা. হু চি কো এবং সং কি মিন।

চিকিৎসক রিজভী বলেন, তারা পাঁচজন মিলে তাকে গভীর নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আজকে সকালে আমাদের সঙ্গে বসেন এবং তার ফিডব্যাক দেন। প্রথমত তারা গত দুই দিনের বাংলাদেশের চিকিৎসার জন্য প্রশংসা করেন। এখন তার অবস্থা মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে কিন্তু কিডনিতে একটু সমস্যা এবং কিছু ইনফেকশন রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের ভেতরে কিডনি সমস্যা এবং ইনফেকশনকে কন্টোল করে বাইপাস সার্জারি করার চিন্তা করছেন তারা। বর্তমানে তার অবস্থা ক্রমেই উন্নতির দিকে যাচ্ছে।

ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা কাদের, সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, নিজাম হাজারী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যরা।

রবিবার সকালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তির পর এনজিওগ্রামে কাদেরের হৃদপিণ্ডের রক্তনালীতে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর মধ্যে একটি ব্লক স্টেন্টিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করার পর তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও পরে আবার অবনতির দিকে যায়। চিকিৎসকরা তখন কৃত্রিমভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেন।

৬৭ বছর বয়সী এই রাজনীতিকেকে দেখতে রবিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে একটি চিকিৎসক দল ঢাকায় আসে। পরে সরকারের তরফ থেকে ভারতের প্রখ্যাত কার্ডিয়াক সার্জন দেবী প্রসাদ শেঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সোমবার দুপুরে ঢাকায় এসে তিনি কাদেরের অবস্থা দেখে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

পরে তার সঙ্গে পরামর্শ করে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের চিকিৎসকরা ওবায়দুল কাদেরকে বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত দিলে বিকালেই কাদেরকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.