উদ্বোধনের অপেক্ষায় চট্টগ্রামে ‘ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল’

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ৩৭৫ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক এবং বহুমুখী বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র ‘ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেড’ আগামী এক মাসের মধ্যে কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানালেন ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের বোর্ড চেয়ারম্যান ও চিটাগাং আই ইনফারমারি এন্ড ট্রেনিং কমপ্লেক্স (সিইআইটিসি) ম্যানেজিং ট্রাস্ট্রি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন।

আজ সোমবার (৮ এপিল) বেলা ১২ টায় পাহাড়তলীস্থ হাসপাতালের কনফারেন্স হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, এ দেশে বিশেষ করে চট্টগ্রামে উন্নতমানের স্বাস্থ্য সেবার অপ্রতুলতার কারণে বহু সংখ্যক রোগী বিদেশে যেতে বাধ্য হচ্ছে, যার ফলে তাদেরকে ও পরিবারকে আর্থিক, শারীরিক এবং মানসিক চাপের মুখে পড়তে হয়। এই অবস্থা থেকে কিছুটা পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে “চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ট্রাস্ট” একটি আন্তর্জাতিক মানের জেনারেল হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে যাতে চট্টগ্রামের কতিপয় সমাজ সেবক এবং উদ্যোক্তা এই মহতী উদ্যোগে সাড়া দেয়।

উপমহাদেশের চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন বলেন, সাত একর জমির উপর এই হাসপাতাল নার্সেস এবং টেকনিশিয়ান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং যাবতীয় আনুষাঙ্গিক সেবা সম্বলিত ৫টি ভবন নিয়ে মোট ৬৬০,০০০ বর্গফুট জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

এই হাসপাতালের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ হচ্ছে: যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি বিখ্যাত স্থাপত্য সংস্থা এই হাসপাতালের মূল নকশা প্রণয়ন করে এবং একটি ইউরোপিয়ান কনস্যালটেন্ট গ্রুপ নকশানুযায়ী কাজ বাস্তবায়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন – প্রকৌশল, তথ্য প্রযুক্তি এবং বায়োমেডিকেল বিষয়ে কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করেছে।

এই হাসপাতাল বাস্তবায়নে ৩টি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে – সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ (ইনফেকশান কন্ট্রোল), রোগীদের নিরাপত্তা এবং কর্মীদের নিরাপত্তা; এখানে রয়েছে উন্নতমানের সার্বক্ষণিক ইমার্জেন্সি সেবা এবং কার্ডিয়াক, ট্রান্সপ্ল্যান্ট, নিউরো, অর্থোপেডিক ও গাইনি অবস্ ইত্যাদি সম্বলিত ১৪টি মডিউলার অপারেশান থিয়েটার; আছে ১৬টি নার্স স্টেশন ও ৬২টি কনস্যালটেন্ট রুম সম্বলিত বহির্বিভাগ এবং আধুনিক গুণগত মানসম্পন্ন ৬৪টি ক্রিটিকাল কেয়ার বেড; নবজাতকদের জন্য ৪৪ শয্যাবিশিষ্ট নিওনেটাল ইউনিট এবং ৮টি পেডিয়াট্রিক আই সি ইউ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের বোর্ড মেম্বার ও সিইআইটিসি ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম এ মালেক, আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী, পরিচালক সেলিম আহমেদ, হাসপাতালের এক্সিউটিভ ম্যানেজার রিয়াজ হোসেন, কমিশনিং কনসালটেন্ট এড লি হ্যানসেন, ম্যানেজার (মার্কেটিং এন্ড পাবলিক রিলেশন) শেখ আবদুস সালাম প্রমূখ।

বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন আরো বলেন, ভারতের বিখ্যাত নারায়ণা হেলথ এবং ইমপেরিয়াল যৌথভাবে কার্ডিয়াক সেন্টার পরিচালনা করবে এবং ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ প্রদান করবে; রোগী ও তার সাথে আগত স্বজনদের জন্য হাসপাতাল পরিধির মাঝে থাকার সুব্যবস্থা এবং আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল রোগীদের জন্য ১০% শয্যা সংরক্ষিত আছে।

পূর্ণাঙ্গ অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা এবং হাসপাতাল জৈব বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য সরকারী নীতিমালা অনুসরণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ; হসপিটালিটি বিভাগের মাধ্যমে যাবতীয় সেবা প্রদানের ব্যবস্থা; হাসপাতালের সমস্ত ডাক্তার, নার্স এবং সর্ব স্তরের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।