জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে মন্ত্রীরা প্যারোলের কথা বলছেনঃ রিজভী
সিটি নিউজ ডেস্কঃ সরকার বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা নিয়ে ভয়ঙ্কর প্রতিহিংসাপরায়ণতা অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল করির রিজভী। তিনি বলেন, সরকারের আচরণে স্পষ্ট হয়েছে, জনগণের নেত্রীকে জনগণ ও রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার জন্য তার জীবন পণবন্দি করেছে। এখন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে মন্ত্রীরা প্যারোলের কথা বলছেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জীবন ও চিকিৎসা নিয়ে এটিও সরকারের রসিকতা। সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীসহ তাদের নেতারা খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে অস্থির। তিনি তো স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়াতেই জামিনে মুক্তি পাবেন, তাহলে ক্ষমতাসীনদের এ প্যারোলের কথা বলাটা তো দুরভিসন্ধিমূলক।
আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা কথা বাদ দিয়ে গুরুতর অসুস্থ বেগম জিয়াকে মুক্তি দিন। প্যারোলের কথা বলে কোনো ধোঁয়াশা সৃষ্টি করবেন না, কারণ কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। নির্দোষ বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে জনগণই রাজপথে নেমে এসে তার মুক্তি আদায় করে নেবে। আর সেদিন এ অবৈধ সরকারের পালানোর পথ থাকবে না।
রিজভী অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এ অবৈধ মিডনাইট ভোটের সরকার তাকে আবারও হেয়প্রতিপন্ন করার চক্রান্ত শুরু করেছে। সরকারি দলের লোকদের অর্থে পরিচালিত একটি টিভি চ্যানেল, কতিপয় সাংবাদিক ও কয়েকটি প্রোপাগান্ডা ওয়েব পোর্টাল হলুদ সাংবাদিকতা করতে উঠেপড়ে লেগেছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক রচনা প্রতিযোগিতায়। গত কয়েকদিন আগে এ আওয়ামী মিডিয়াগুলোতে বেগম খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমকে নাকি বেতন দেয়া হচ্ছে না বলে মিথ্যা রিপোর্ট করেছে।
তিনি বলেন, আমরা খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি, ফাতেমা বেগমের বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে, ভয়ভীতি দেখিয়ে ম্যানেজ করে এ সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। ফাতেমার পরিবারকে তার প্রাপ্য ছাড়াও অগ্রিম টাকা দেয়া হয়েছে। আর ফাতেমা আদালতের নির্দেশনায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আছে। বেগম জিয়ার হাঁটাচলাতে অসুবিধা হয়। তার একজন সাহায্যকারী দরকার হয়। সে বিবেচনায় ফাতেমা তার সঙ্গে আছেন। এটাও এখন হিংসুক সরকারের সহ্য হচ্ছে না। তারা নিজেদের প্রোপাগান্ডা মিডিয়ায় এ নিয়ে গল্প তৈরি করছে। আজ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে, ফাতেমার মা বলেছেন, তিনি মাসে মাসে টাকা পান এবং সেই টাকা তিনি নিজেই নিয়ে আসেন। অথচ ফাতেমাকে নিয়ে সরকার জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
রিজভী বলেন, তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, সৎ সাহস থাকলে তারেক রহমান দেশে ফিরতেন। যারা রাতের অন্ধকারে কাপুরুষের মতো ভোট করে তারা কতটুকু সাহসী তা জনগণই জানে। তারেক রহমান আইনগতভাবে জামিনে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন। এখনও তিনি সুস্থ নন, তার চিকিৎসা চলমান রয়েছে। শেখ হাসিনার আন্দোলনের ফসল ১/১১’র সরকার তারেক রহমানকে হত্যা করার জন্য অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। সেই নির্যাতনেই তিনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি।
তথ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনাদের সাহস নেই বলেই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিচ্ছেন না, কারণ বেগম জিয়ার জনপ্রিয়তাকে আপনারা ভয় পাচ্ছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে থাকলেও দেশের গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি সুস্থ হলেই দেশে ফিরে আসবেন।