অবহেলিত থাকার চেয়ে একলা চলাই ভালো-পার্থ

0

সিটি নিউজ ডেস্ক :  তরুণ রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে বলা হয়ে ‘ছোট দলের বড় নেতা’। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান তিনি, সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় হলেও তার অবস্থান দীর্ঘদিন ছিল বিরোধী শিবিরে।গত ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে ঢাকার একটি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এই নেতা সম্প্রতি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে তার দল নিয়ে বেরিয়ে্ এসেছেন। এরপর পরই রাজনৈতিক অঙ্গনে আওয়াজ ওঠেছে, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে তার আপস হয়েছে, টেকেনোক্রাট কোটায় মন্ত্রী হচ্ছেন পার্থ। তবে বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে জোড়ালোভাবে প্রত্যাখান করেছেন তিনি।

২০ দলীয় জোট ত্যাগের কারণ জানতে চাইলে আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, জোটের বড় দল বিএনপির রাজনীতি এখন ঐক্যফ্রন্টমুখী। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযাত্রী ২০ দলের শরিক দলগুলো তাদের কাছে গুরুত্হীন হয়ে পড়েছে। যেখানে আমাদের গুরুত্বই নেই, সেখানে আমাদের থেকে লাভ কী? গুরুত্বহীন ও অবহেলিত থাকার চেয়ে একলা চলাটাই ভালো। সরকারের সঙ্গে আপস বা টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ার সম্ভবনাকে নেহাত গুজব বলে উড়িয়ে দিয়ে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আপসের রাজনীতিতে আমি বা আমার দল কখনো বিশ্বাস করে না। দেশের সেবায় ভূমিকা রাখতেই রাজনীতিতে এসেছি। মন্ত্রী এমপি হওয়ার কোনো লোভ আমার নেই। এজন্য বিএনপি জোটও ছাড়িনি। জোট ছেড়েছি অবহেলা আর অবজ্ঞার কারণে। ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর থেকে কেবল সহমত ও সম্মতি নিতেই ২০-দলীয় জোটের সভা ডাকা হতো। আলোচনা বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনো সুযোগ থাকতো সভায়। এটা মানতে পারছিলাম না বলেই ২০ দলীয় জোট ছেড়েছি।

বিএনপির বিরুদ্ধে একাদশ জাতীয় সংসদকে বৈধতা দেওয়ার অভিযোগ ওঠিয়ে পার্থ বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন হওয়ার পর ২০-দলীয় জোট তা প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু পরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুজন ও বিএনপির চারজন সংসদ সদস্য শপথ নেওয়ায় দেশবাসীর মতো আমরা হতবাক হই। কারণ শপথ নেওয়ার এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে বিএনপি ছাড়া ২০ দলের অন্য কোনো দলের সম্পৃক্ততা নেই। এই দায় বহন করতে চাই না বলেই বেরিয়ে আসা।

বিজেপি নিয়ে নতুন কোনো জোটে যোগ দেওয়ার আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই জানিয়ে পার্থ বলেন, সাড়ে চার বছর সময় আছে সামনে। এই সময়ের মধ্যে নিজের দলকে গোছাতে চাই। জনগণের একটা বড় অংশ এখন রাজনীতিবিমুখ। বিশেষ করে তরুণদের বড় একটি অংশই রাজনীতি করতে চান না। তাদের নিয়েও কাজ করতে চাই। রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারা সৃষ্টি করে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেব ।

তিনি আরও বলেন, বিজেপি ১৯৯৯ সাল থেকে চারদলীয় জোট এবং পরে ২০-দলীয় জোটে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর ২০ দলের কার্যক্রম ক্রমেই স্থবির হয়ে পড়ে। কোনো কিছুই ২০ দলকে জানানো হতো না। বিএনপির চার এমপির শপথ গ্রহণের পরও আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। এ অবস্থায় আমাদের যদি ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচারবোধ থাকে, তাহলে ওই জোটে আমাদের থাকা ঠিক নয়। তাই দলের নেতা-কর্মীদের নিয়েই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বিএনপি থেকে নির্বাচিতদের সংসদে যোগ দেওয়ায় দলটির এখন আর গণতন্ত্র, ভোটাধিকার বা আইনের শাসন নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই দাবি করে বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপির এখন বর্তমান সরকার ও সংসদকে মেনে নিয়েছে।গণতন্ত্রের দাবিতে সরকারের বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানের নৈতিক অধিকার হারিয়েছে তারা।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (৬ মে) গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বিএনপির সঙ্গে ২০ বছর ধরে চলা রাজনৈতিক সঙ্গ ছিন্ন করার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.