চন্দনাইশে কর্মকর্তাহীন মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষার বেহালদশা

0

চন্দনাইশ প্রতিনিধিঃ চন্দনাইশ উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিহীন কার্যালয় চলার কারণে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। শৃঙ্খলা নেই অফিস ২টিতে। অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে দায়িত্ব প্রাপ্তদের বিরুদ্ধে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ১০টি পদে ৬টি খালি রয়েছে। একাডেমিক সুপার ভাইজার, অফিস সহায়ক, নাইটগার্ড দিয়ে চলছে কাজ। অপরদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ৬ জনের পদ খালি রয়েছে।

উপজেলার ২৫টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১৬টি মাদরাসা পরিচালনা, পরিদর্শন, পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন সরকারি কার্যক্রম তদারকি করে থাকেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। অথচ এ শিক্ষা অফিসে জুলাই’১৮ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ৫ বছরের অধিক কাল ধরে সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, কম্পিউটার অপারেটর, হিসাব রক্ষক, অফিস সহকারি, প্রোগ্রামার পদগুলো খালি রয়েছে। ফলে মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ধস নেমেছে ।

বিদ্যালয় ও মাদরাসাগুলো পরিদর্শন, তদারকি হচ্ছে না দীর্ঘ সময় ধরে। সরকারি নির্ধারিত কর্মসূচিও যথাযথভাবে অনেক প্রতিষ্ঠান পালন না করার অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে ৯১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ৬ শতাধিক শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও, ৭টি প্রধান শিক্ষক, ৪৭টি সহকারি শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে। সে সাথে আগস্ট’১৮ থেকে শিক্ষা কর্মকর্তা ও ২০০৫ সাল থেকে ১ জন সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা, উচ্চমান সহকারি, অফিস সহকারি, এমএলএসএস পদগুলো ৫ বছরের অধিককাল ধরে খালি রয়েছে। ফলে চন্দনাইশ প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।

বর্তমানে ৩টি ক্লাষ্টারের জন্য ২ জন সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা থাকলেও, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় ১ জনকে সে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। যিনি ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন তাঁর অধীনে ২টি ক্লাস্টার থাকায় তার পক্ষে ঐ ক্লাষ্টারের বিদ্যালয় পরিদর্শন যথাযথ না হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষক যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে প্রধান প্রধান সড়কগুলোর পাশের শিক্ষক-শিক্ষিকেরা যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলেও সড়ক দূরবর্তী বিদ্যালয়গুলোতে অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকেরা যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হওয়ায় পাঠদানে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া উপজেলার ৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ৪৭ জন সহকারি শিক্ষক না থাকায় কিছু কিছু বিদ্যালয়ে ক্লাসের তুলনায় শিক্ষক অপ্রতুল হওয়ায় পাঠদানও যথাযথ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবক মহল।

ধোপাছড়ি ইউনিয়নের ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে। তাছাড়া সহকারি শিক্ষকদের মধ্যে অনেক শিক্ষক ভাড়াটিয়া শিক্ষক দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে। বিজয় ফুল প্রতিযোগিতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য সরকারিভাবে ২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও প্রতিযোগিতার ৭ মাস পর ৭’শ টাকা করে দেয়া হয়। জেলা পর্যায়ে উপকরণ মেলার জন্য সরকারিভাবে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়ার পরও ৯১টি বিদ্যালয় থেকে ৫’শ টাকা করে আদায় করার অভিযোগ করেন শিক্ষকেরা।

সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান আল মামুন ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালনের পর থেকে বিভিন্ন রকম অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ নিরব রয়েছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। তিনি ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে সাড়ে ৫ বছর ধরে অদ্যবধি একই উপজেলায় দীর্ঘ সময় চাকুরী করার সুবাদে কিছু সংখ্যক শিক্ষক নেতাদের সাথে তাল মিলিয়ে এসব অনিয়ম করে যাচ্ছেন বলে শিক্ষক-অভিভাবকদের অভিযোগ। এ ব্যাপারে স্থানীয় অভিভাবক, পরিচালনা পরিষদ, সচেতন মহল যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। এসকল অভিযোগের বিষয়ে হাসান আল মামুন বলেছেন, বিজয় ফুলের টাকার বিষয়ে ইউএনও মহোদয় জানেন। তাছাড়া অন্যান্য অভিযোগগুলো তিনি অস্বীকার করেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.