চসিকের ২ হাজার ৪৮৫ কোটি ৯১ লক্ষ টাকার বাজেট পেশ

0

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আজম নাসির উদ্দিন চসিকের বাজেট ঘোষনা করেছেন। ২ হাজার ৪৮৫ কোটি ৯১ লাখ ৭৮ টাকার বাজেট ২০১৯-২০ অর্থ বছরের জন্য এ বাজেট পেশ করা হয়।

আজ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সিটি মেয়র নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউটে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করলেন।

বাজেট পেশ করতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরবাসীর সহযোগিতা পেলে এবারের বাজেট বাস্তবধর্মী ও বাস্তবায়নযোগ্য হবে বলে মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

এ সময় তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশনের উপর নগরের নাগরিক সেবা ও উন্নয়নের গুরুদায়িত্ব অর্পন করেছেন নগরবাসী। সে গুরুদায়িত্ব স্মরণ রেখে নগরবাসীর আশা-আকাক্সক্ষর প্রতিফলন ঘটানোর প্রত্যাশা নিয়ে ও চট্টগ্রাম মহানগরকে পরিবেশগত, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ, নান্দনিক ও বাসযোগ্য নগর প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন সিটি মেয়র। পরে তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২০১৯-১৯ অর্থবছরের ২ হাজার ৪৫ কোটি ৫১ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট ও ২০১৯-২০ অর্থবছরের ২ হাজার ৪ শত ৮৫ কোটি ৯১ লক্ষ ৭৮ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট নগরবাসীর নিকট উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব বিভাগ একটি বৃহৎ বিভাগে রূপান্তরিত হয়েছে। নগরীর সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে হোল্ডিং কর, ট্রেড লাইসেন্স ফি, ভূমি হস্তান্তর কর, রিকশা লাইসেন্স ফি সহ অন্যান্য খাত হতেও ফি আদায় করছে সিটি করপোরেশন। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্বখাতে ১৬ কোটি ২১ লক্ষ টাকা বেশি আদায় হয়েছে বলে মেয়র অবহিত করেন। তিনি জানান সিটি কর্পোরেশনের আবশ্যিক সেবা কার্যক্রম হচ্ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রাস্তাঘাট সংস্কার ও মেরামতের মাধ্যমে চলাচল উপযোগী রাখা এবং সড়কবাতির মাধ্যমে আলোকায়নের ব্যবস্থা করা।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর বাইরেও শিক্ষাখাতে ব্যাপক কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকে বলে মেয়র উল্লেখ করেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন শিক্ষাখাতে প্রতিবছর ৩৬ কোটি টাকা এবং স্বাস্থ্যখাতে ১৩ কোটি টাকাসহ ৪৯ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করে যার নজির বাংলাদেশের কোনো সিটি কর্পোরেশনের নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। সিটি কর্পোরেশনের আওতায় একটি বিশ^বিদ্যালয়, ২টি কলেজে অনার্স কোর্স চালুসহ মোট ৮টি ডিগ্রি কলেজ, ১৫টি উচ্চমাধ্যমিক কলেজ, ৪৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭টি কিন্ডারগার্টেন, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি কম্পিউটার ইন্সটিটিউট, ১টি থিয়েটার ইন্সটিটিউট, ১টি কারিগরি ইন্সটিটিউট, ৩৫০ ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, ৮টি জামে মসজিদ, ২টি এবাদত খানা, ৪টি সংস্কৃত টোলসহ বিশেষ ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে বলে বক্তৃতায় তিনি উল্লেখ করেন।

এসময় তিনি চট্টগ্রামের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন, চট্টগ্রামেই হচ্ছে এশিয়ার বৃহত্তম আধুনিক কসাইখানা। নগরীর চান্দগাঁও পুরাতন থানা এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের ৮৮ শতাংশ জায়গার উপর এ কসাইখানা নির্মিত হবে। অত্যাধুনিক এ কসাইখানা নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৮৩ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পশু জবাই ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ রক্ষায় দেশের অন্যান্য মেগা সিটির চেয়ে একধাপ এগিয়ে যাবে চট্টগ্রাম মহানগর বলে মন্তব্য করেন সিটি মেয়র।

তিনি বলেন, আধুনিক নগর ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের সভায় উপস্থাপিত হবে। আশা করছি চলতি বছর এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। বিমানবন্দর সড়কের উন্নয়নে চার লেন বিশিষ্টকরণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মন্ত্রনালয়ে তা জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করা হয়েছে। আমাদের পঞ্চম নির্বাচিত পরিষদের নেতৃত্বে এই নগরে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে বিগত ২০ বছরে তা হয়নি। ২৭ বছরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কোন অর্গানোগ্রাম অনুমোদন করা যায় নি। আমি দীর্ঘ ২৭ বছর পর তা অনুমোদন করিয়েছি। আগামীতে আর একটি নতুন অর্গানোগ্রাম অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। ঘোষিত এ বাজেট বাস্তবায়নে মেয়র নগরবাসী সহযোগিতা কামনা করেছেন।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে প্যানেল মেয়র হাসান মাহমুদ হাসনী, সিটি কর্পোরেশনের সচিব আবু সায়েদ, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইফুদ্দিনসহ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.